স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ হারার পর সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের বিধ্বস্ত মুখ সামাজিক যোগাযগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। আজকে পাপুয়া নিউগিনির সাথে ম্যাচ জিতে মূল পর্ব নিশ্চিত করেও খুব একটা হাশি-খুশি রিয়াদকে দেখা গেল না। যদিও তিনি জানিয়েছেন এখন দলের অবস্থা বেশ ভালো। তবে বাইরের নানা সমালোচনা নাকি রিয়াদদের খুব ব্যথিত করছে।
আজকে জয়ের মাধ্যমে বিশ্বকাপের মূল পর্ব নিশ্চিত করে ফেলল বাংলাদেশ। তবে সেখানে কোন গ্রুপে পড়বে সেটা জানার জন্য চোখ রাখতে হবে ওমান-স্কটল্যান্ড ম্যাচের দিকে। তবে বাছাই পর্বের খেলাগুলো নিয়ে আছে বেশ সমালোচনার জায়গা। স্বাভাবিক ভাবেই বিশ্বকাপের মত এত বড় মঞ্চে এই ধরনের ভুল গুলো নিয়ে সংবাদ মাধ্যম থেকে শুরু করে চায়ের দোকান পর্যন্তও আলোচনা হবে।
তবে বিশ্বকাপ দলের অধিনায়ক হিসেবে রিয়াদের নিশ্চই এগুলো নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করার কথা না। তাঁদের নিশ্চই আলাদা পরিকল্পনা আছে। এত বড় মঞ্চে খারাপ করলে সমালোচনা যে হবে সেটা রিয়াদও নিশ্চই বুঝেন। তবে সংবাদ সম্মেলনে রিয়াদ বললেন ভিন্ন কথা। ব্যথিত সুর নিয়েই বললেন, ‘সমালোচনা আমাদের স্পর্শ করে। আমরাও মানুষ। আমাদের পরিবার আছে। আমাদের বাবা-মা রাও বসে থাকে টিভির সামনে। আমাদের বাচ্চারাও খেলা দেখে। তারাও মন খারাপ করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তো এখন মানুষের হাতের নাগালে। সবার মোবাইলে আছে। সমালোচনা তো হবেই। আমরাও আশা করি সমালোচনা হোক। আমরা খারাপ খেলেছি সমালোচনা হবেই। কিন্তু সমালোচনার মাধ্যমে কেউ কাউকে ছোট করে ফেলে সেটা কিন্তু খারাপ লাগে।’
এছাড়া প্রশ্ন উঠছে সিনিয়র ক্রিকেটারদের ব্যাটিং স্ট্রাইকরেট নিয়েও। মূলপর্বে যা বাংলাদেশের জন্য বড় দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে। এই বিষয়ে রিয়াদ বলেন, ‘অনেক প্রশ্ন এসেছে। আমাদের ব্যাটিংয়ের স্ট্রাইক রেট। আমাদের তিন সিনিয়র ক্রিকেটারের স্ট্রাইক রেট নিয়ে। আমরা তো চেষ্টা করেছি। চেষ্টার বাইরে তো আমাদের কাছে কিছু নেই। এরকম না যে আমরা চেষ্টা করিনি। আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। কিন্তু ফল আমাদের পক্ষে আনতে পারিনি। সমালোচনা হবেই। এটা কাম্য। কিন্তু সুস্থ সমালোচনা হলে সবার জন্য ভালো। আমরাও অনুভব করি। বাংলাদেশের জার্সিটা যখন আমরা গায়ে দেই তখন আমাদেরও সম্মান অনুভব হয়। আমরা দেশের জন্য কতটুকু করি। সবারই ত্যাগ থাকে। কারো ব্যথা থাকে। কারো অনেক ইনজুরি থাকে। ওগুলো নিয়ে আমরা খেলি। দিনের পর দিন আমরা খেলি। পেছনের গল্পগুলো অনেকেই জানে না। এজন্য কমিটমেন্ট নিয়ে প্রশ্ন করা ঠিক না।’
স্বস্তি খুঁজছেন রিয়াদ, ‘আশা করি, এখন কিছুটা স্বস্তি পাবো। সবচেয়ে বড় কথা, দলের ভেতরে যে উদ্রীবতা ছিল ওইটা নেই। এজন্য খেলোয়াড় এবং প্রত্যেক টিম ম্যানেজমেন্টকে কৃতিত্ব দেওয়া উচিত। শুধু আমরাই নই। আমাদের স্টাফ, সোহেল ভাই (ম্যাসাজম্যান), রমজান (থ্রোয়ার) প্রত্যেকের ক্রেডিট দিতে হবে। আশা করছি ভালো কিছু হবে সামনে।’
ওদিকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে মুশফিক নিজের কার্যকারিতার প্রমাণ দিতে পারছেন না। শেষ ২০ ম্যাচে তাঁর হাফ সেঞ্চুরি মাত্র একটি এবং রান করেছেন মাত্র ১৩.৮১ গড়ে। এই সময়ে তাঁর স্ট্রাইকরেট ছিল ১০০ ছুঁই ছুঁই। ফলে পরবর্তী ম্যাচ গুলোতে মুশফিককে নিয়ে দল কী ভাবছে সেটি জানতে চাইলে রিয়াদ বলে, ‘মুশফিককে নিয়ে আমরা একেবারেই চিন্তিত না। দুই-একটা ম্যাচ খারাপ যেতেই পারে। সেটা নিয়ে আমাদের কোন দুশ্চিন্তা নেই।’
ওদিকে এবারের বিশ্বকাপে মুস্তাফিজকে নিয়ে বাংলাদেশের বেশ বড় স্বপ্ন। ঘরের মাঠে এবং আইপিএলে দারুণ বোলিং করেছেন। তবে বাছাই পর্বের ম্যাচে তাঁর ভয়ংকর কাটার এবং স্লোয়ারগুলো সেভাবে দেখা যাইনি। সেটি নিয়ে প্রশ্ন করলে রিয়াদ জানিয়েছেন মুস্তাফিজকে নিয়েও তাঁরা একেবারেই চিন্তিত নন।