টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ও ভারতের চার বাঁধা

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিট দল হিসেবে খেলতে এসেছিল ভারত। নামে-ভারে অনেকটাই এগিয়ে ছিল ভারত দল। তবে প্রত্যাশা আর বাস্তবতায় দেখা যাচ্ছে বিশাল ফারাক। নিজেদের দুই ম্যাচেই অসহায় আত্মসমর্পণ করেছেন কোহলির দল। এমনকি সেমি ফাইনাল খেলাও এখন অনিশ্চিত। তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য দল গুলোর দিকে।

বিরাট কোহলিদের এই বাজে পারফর্মেন্সের পিছনে অবশ্য আছে বেশ কিছু কারণ। কোহলির অধিনায়কত্ব, বায়োবাবলের চক্রে আঁটকে থাকা একটি দল, বিতর্কিত স্কোয়াড এবং আইপিএলের শিডিউল এবং দলের ঘোলাটে অবস্থা এসবের যেকোন কারণেই হয়তো বিশ্বকাপের এই বাজে পারফর্মেন্স।

  • বিরাট অধিনায়কত্ব পরিসীমা

প্রতিটা অধিনায়করেই একটা প্রাইম সময় থাকে। সুনীল গাভাস্কার, মহেন্দ্র সিং ধোনির মত অধিনায়কদেরও এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। একসময় তাঁদেরও জায়গটা ছেড়ে দিতে হয়েছে। ফলে বিরাট কোহলিও এখন এমন একটা সময়ে আছেন।

এছাড়া বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে কোহলির অধিনায়কত্ব সবসময়ই ফ্যাঁকাসে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ওয়ানডে বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি কিংবা আইপিএল কোন জায়গাতেই অধিনায়ক বিরাট কোহলির বড় কোন সাফল্য নেই। যদিও দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ভারতের সফলতম অধিনায়কদের একজন কোহলি।

  • হার্দিক পান্ডিয়া

২০১৯ সাল থেকেই পিঠের ইনজুরিতে ভুগছেন হার্দিক পান্ডেয়া। এমনকি এখনো তিনি পুরোপুরি ফিট না। বোলিংটাও করতে পারছেন না ঠিকঠাক। আইপিএলে এক ওভারও বোলিং করেননি। যদিও বিরাট কোহলি জানিয়েছিলেন তাঁকে ব্যাটসম্যান হিসেবেই দেখছে ভারত। তবে ব্যাট হাতেও বিশ্বকাপে ফ্লপ এই অলরাউন্ডার। পাকিস্তানের বিপক্ষে করেছেন ১১ বলে ৮ রান ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে করেছেন ২৪ বলে ২৩ রান।

  • বায়োবাবলের অবসাদ

বায়োবাবল এখন ক্রিকেট দুনিয়ায় এক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। অনেক ক্রিকেটারই দীর্ঘদিন বাবলে থেকে অবসাদ হয়ে যাচ্ছেন। ওদিকে ভারতের ক্রিকেটাররা চার মাস ধরে বায়োবাবলের মধ্যে আছে। আইপিএল এখানে একটি বড় ভূমিকা পালন করেছে। কোভিড-১৯ এর কারণে মাঝপথে থেমে যাওয়া আইপিএল শেষ করার জন্য অবশ্য আর কোন উপায়ও ছিল না।

  • বিজ্ঞাপনে গোড়াকলে

ভারতের প্রথম দুই ম্যাচেই এমন অসহায় আত্মসমর্পনের পিছনে শিশিরেরও বড় ভূমিকা আছে। ভারতের সবগুলো খেলাই রাখা হয়েছে রাতে। এখানে বিজ্ঞাপন একটা বড় ভূমিকা পালন করেছে। তবে রাতে ম্যাচ খেলতে গিয়ে শিশির ভারতের জন্য বড় কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অথচ বিকালের ম্যাচ গুলোতে শিশিরের তেমন কোন প্রভাবই নেই। অথচ ব্রডকাস্টের লাভের কথা ভেবে আইসিসি ও বিসিসিআই ভারতের প্রত্যেকটি ম্যাচ রাতে রাখে। বিজ্ঞাপনের এই গোরাকলে পড়ে এখন ম্যাচ জেতাই কঠিন হয়ে গিয়েছে ভারতের জন্য।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link