সুদীর্ঘ নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে পাকিস্তানে আবার ফিরেছে ক্রিকেট আয়োজন। সেই ২০০৯ থেকে পাকিস্তান বঞ্চিত ছিল ক্রিকেট আয়োজন থেকে। তাঁর পেছনের কারণ অবশ্য ছিল বেশ গুরুতর। খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা ইস্যু। সেই নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দিয়ে পাকিস্তানের উপর কোন বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট কিংবা দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল আইসিসি।
তবে সুদিন ফিরছে পাকিস্তানের ক্রিকেট অঙ্গনে সম্প্রতি। অস্ট্রেলিয়ার মতো দল পাকিস্তানের ক্রিকেট খেলতে রাজি হয়েছে এবং চূড়ান্তও হয়েছে সূচি। এর পাশাপাশি আইসিসির সদ্য ঘোষণাকৃত আগামী দশ বছরের বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানেরও নাম।
২০২৫ সালে অনুষ্ঠিতব্য আইসিসি চ্যাম্পয়ন্স ট্রফি আয়োজনের দায়িত্ব পড়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) কাঁধে। এতে যেন সৃষ্টি হয়েছে নতুন শঙ্কার। ভারতের সাথে রাজনৈতিক সমস্যার দরূণ ভারতীয় খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ভারত ক্রিকেট দলের পাকিস্তানে যাওয়া নিয়ে দ্বিধার সৃষ্টি হয়েছে।
এই দ্বিধার শেষ হবে কি না তা জানা না থাকলেও আজ জানাতে চলেছি সমসামিয়ক ছয় ভারতীয় ক্রিকেটারদের সম্পর্কে যাদের কি না অভিজ্ঞতা রয়েছে পাকিস্তানের মাটিতে ভারতকে প্রতিনিধিত্ব করার।
- রোহিত শর্মা
ভারতীয় টি-টোয়েন্টি দলের বর্তমান অধিনায়ক রোহিত শর্মার অভিজ্ঞতা রয়েছে পাকিস্তানের মাটিতে ক্রিকেট খেলবার। ২০০৮ সালের এশিয়া কাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল পাকিস্তানে। সেই এশিয়া কাপ দলে ছিলেন রোহিত। তিনি সে টুর্নামেন্টের সব ক’টি ম্যাচ খেলেছিলেন ভারতের হয়ে। ২৯ গড়ে রান করেছিলে ১১৬।
- রবিন উথাপ্পা
ক্রিকেট ক্যারিয়ার অব্যাহত রাখা রবিন উথাপ্পারও রয়েছে পাকিস্তানের মাটিতে ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা। ২০০৮ এশিয়া কাপে ভারত দলে ছিলেন রবি উথাপ্পাও। এই উইকেট রক্ষক ব্যাটার সুযোগ পেয়েছিলেন তিন ম্যাচে। পাকিস্তানের মাটিতে তিন ম্যাচে সংগ্রহ করেছিলেন মাত্র ৩৭ রান।সেবার শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে রানার্স-আপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় ভারতকে।
- ইশান্ত শর্মা
বর্তমানে ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেট দলে যতজন পেস বোলার রয়েছেন তাঁদের মধ্যে ইশান্ত শর্মার রয়েছে পাকিস্তানের মাটিতে খেলার স্মৃতি। ২০০৮ এ পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে ইশান্ত খেলেছিলেন পাঁচ ম্যাচ। নিজের পকেটে পুরেছিলেন ছয়টি উইকেট। এক ম্যাচে তিন উইকেট নেবার কীর্তিও গড়েছিলেন তিনি। ২০১৬ সালের পর ইশান্তকে আর দেখা যায়নি ভারতের হয়ে রঙিন পোষাকে ক্রিকেটের ময়দানে।
- পিযুষ চাওলা
সেই ২০০৮ এশিয়া কাপেই খেলেছিলেন ভারতীয় লেগ স্পিনার পিযুষ চাওলা। তিনি তাঁর স্পিনিং ঘূর্ণিতে কাবু করেছিলেন এশিয়া ব্যাটারদের। মাত্র তিন ম্যাচ খেলে তুলে নিয়েছিলেন ছয়টি উইকেট। ইকোনমি রেট ছিল পাঁচের ঘরে। এক ম্যাচে মাত্র ২৩ রান খরচায় নিয়েছিলেন চার উইকেট।
- এস শ্রীশান্ত
শ্রীশান্ত ছিলেন ভারতীয় দলের একজন পরিচিত মুখ। ভারতীয় পেস আক্রমণের অন্যতম সেনানী। বেশকিছু বছর যাবৎ তাঁকে ভারতের আকাশী নীল জার্সিতে শ্রীশান্তকে দেখা না গেলেও তিনি নিয়মিত খেলে যাচ্ছেন ঘরোয়া ক্রিকেট। ভারতীয় এই পেসারের পাকিস্তানের মাটিতে পাঁচটি ওডিআই ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি একম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করে নিয়েছিলেন চার উইকেট। মোট ছয়টি উইকেট নিয়েছিলেন তিনি পাকিস্তানে খেলা পাঁচ ওডিআই ম্যাচ থেকে।
- হরভজন সিং
অভিজ্ঞ অফ স্পিনার হরভজন দুইটি টেস্ট ম্যাচ খেলেছিলেন ভারতের হয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে পাকিস্তানের ঘরের মাঠে। সেই দুই ম্যাচে ব্যাট হাতে ৩৮ রান সংগ্রহ করতে পারলেও, তাঁর নামের পাশে উইকেটের ঘর ছিল খালি।
এই তালিকায় থাকতে পারেন মহেন্দ্র সিং ধোনি ও সুরেশ রায়নাও। জাতীয় দল থেকে অবসর নিয়ে ফেললেও এখনও তাঁরা ক্রিকেটের মধ্যেই আছেন। তাঁদেরও পাকিস্তানের মাটিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা আছে।
ভারত ২০২৫ এ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে পাকিস্তানে যাবে কি না তা বলে দেবে সময়। তবে ভারত পাকিস্তানের মাটিতে খেলতে যাওয়া হতে পারে ভারত-পাকিস্তান রাজনৈতিক কলহের ইতি ঘটানোর এক নিয়ামক। সর্বোপরী ক্রিকেট প্রেমীদের কাছে বিষয়টা খুবই আনন্দের কারণ হয়ে যেতে পারে। কেননা হয়ত সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে দুই দলের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজনের।