আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এবছর ছিল টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জয় জয়কার। পাঁচ বছর পর এবার বসেছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সেখানে প্রথমবারের মত শিরোপা জয়ের স্বাদ পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এছাড়া বিশ্বকাপের আগেও দলগুলো নিজেদের মধ্যে অনেক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে। ফলে সব মিলিয়ে এবছর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে দারুণ কিছু পারফর্মেন্স পাওয়া গিয়েছে।
ব্যাট, বল দুই ডিপার্টমেন্টেই ক্রিকেটাররা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিজেদের অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন। সবমিলিয়ে এবছর ক্রিকেটের এই ক্ষুদ্রতম সংস্করণের সেরা ক্রিকেটারদের নিয়ে এই একাদশ।
- জশ বাটলার (ইংল্যান্ড)
এই বছর ওপেনিং পজিশনে সবাইকে ছাড়িয়ে গিয়েছেন জস বাটলার। পুরো বছরই রানের পর রান করেছেন। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান এবছর ইংল্যান্ডের হয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৬৫.৪৪ গড়ে রান করেছেন। এবছর ১৪ ইনিংস খেলে করেছেন ৫৮৯ রান। এছাড়া বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও দারুণ এক সেঞ্চুরি করেছেন তিনি।
- মোহাম্মদ রিজওয়ান (পাকিস্তান)
পাকিস্তানের এই ওপেনারও এবছর ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজমের সাথে ওপেন করতে নেমে দারুণ সব পার্টনারশিপ গড়েছেন। এবছর পাকিস্তানের হয়ে মোট ২৬ ইনিংস ব্যাট করেছেন। সেখানে ৭৩.৬৬ গড়ে করেছেন ১৩২৬ রান। তাঁর ঝুলিতে আছে ১ টা সেঞ্চুরি ও ১২ টি হাফ সেঞ্চুরি। এছাড়া ওপেনার হয়েও এবছর ৮ ইনিংসে নট ছিলেন রিজওয়ান।
- মিশেল মার্শ (অস্ট্রেলিয়া)
নতুন করে নিজেকে আন্তির্জাতিক ক্রিকেটের সাথে এবছর প্রমাণ করেছেন মিশেল মার্শ। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে দারুণ সব ইনিংস খেলেছেন। ১৪ ইনিংস ব্যাট করে ৪৫.৪৯ গড়ে করেছেন ৫৪৯ রান। এছাড়া মিডল ওভারে বোলিং করেও ভূমিকা রেখেছেন। আর অজিদের হয়ে প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদও পেয়েছেন।
- এইডেন মার্করাম (দক্ষিণ আফ্রিকা)
এবছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দারুণ ক্রিকেট খেলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। গ্রুপ পর্বের চারটি ম্যাচ জিতেও দুর্ভাগ্যবশত সেমিফাইনাল খেলতে পারেনি প্রোটিয়ারা। ওদিকে মিডল অর্ডারে দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা পারফর্মার ছিলেন এইডেন মার্করাম। ব্যাট হাতে প্রায় ৪০ গড়ে এই ব্যাটসম্যান করেছেন ২৩৩ রান।
- লিয়াম লিভিংস্টোন (ইংল্যান্ড)
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা ব্যাটিং লাইন আপে তাঁদের গভীরতা। তবে সেই শক্তির জায়গায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে লিয়াম লিভিংস্টোন। পাঁচ নম্বরে নেমে এই অলরাউন্ডার ব্যাট হাতে দারুণ সব ইনিংস খেলেছেন। এবছর মাত্র ৪ ম্যাচ খেললেও রান করেছেন প্রায় ৪০ গড়ে। এছাড়া বল হাতেও প্রায় প্রতি ম্যাচেই চার ওভার বোলিং করছেন।
- কাইরন পোলার্ড (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
এই ফরম্যাটে বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্রিকেটারদের একজন কাইরন পোলার্ড। যদিও দল হিসেবে ক্যারিবীয়রা খুব একটা ভালো সময় পার করছেনা। তবে ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার পোলার্ড এবছরও ছিলেন অপ্রতিরোদ্ধ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ৪৪ ব্যাটিং গড়ে করেছেন ১৩১ রান।
- ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা (শ্রীলঙ্কা)
মাঝে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বেশ বাজে সময় কাটিয়েছে শ্রীলঙ্কা। তবে এবছর দেশটির তরুণ ক্রিকেটাররা তাঁদের আবার কিছু সাফল্য এনে দিতে শুরু করেছে। এই তরুণদের মধ্যে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ক্রিকেটারের নাম ওয়ানিন্দু হাসারঙ্গা। এই লেগ স্পিনার এবছর দেশটির হয়ে ২০ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ৩২ টি উইকেট।
- তাবরাইজ শামসি (দক্ষিণ আফ্রিকা)
এবছর ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার সাথে সমানতালে বল ঘুরিয়েছেন শামসিও। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে এই স্পিনার মোট ২২ টি ম্যাচ খেলেছেন। সেখানে একাই নিয়েছেন ৩৬ উইকেট। সবমিলিয়ে এবছর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিন্মগ আক্রমণের নেতৃত্বে ছিলেন এই স্পিনার।
- অ্যাডাম জাম্পা (অস্ট্রেলিয়া)
গত কয়েকবছর ধরেই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সইন ভরসা অ্যাডাম জাম্পা। এবছরও অজিদের বিশ্বকাপ জয়ের পিছনে দারুণ ভূমিকা পালন করেছেন এই স্পিনার। এবছর ২১ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ২১.০৩ গড়ে নিয়েছেন ২৬ উইকেট।
- ট্রেন্ট বোল্ট (নিউজিল্যান্ড)
লম্বা সময় ধরেই নিউজিল্যান্ডের পেস আক্রমণে ভরসার নাম ট্রেন্ট বোল্ট। এবছরও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে একাই ভারতের ব্যাটিং লাইন আপ ধ্বসিয়ে দিয়েছিলেন এই পেসার। এছাড়া এবছর মোট ১৫ ম্যাচ খেলে মোট ২৩ উইকেট নিয়েছেন বোল্ট।
- জশ হ্যাজলেউড (অস্ট্রেলিয়া)
মূলত টেস্ট ক্রিকেটে অনেকদিন ধরেই অজিদের ভরসার নাম হ্যাজলেউড।তবে এবার সাদা বলের ক্রিকেটেও নিজেকে চিনিয়েছেন এই পেসার। এবছর অজিদের হয়ে মোট ১৫ ম্যাচে বল করে ১৬.২৩ গড়ে নিয়েছেন ২৩ উইকেট।