মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের আগে তিনি একটা উইকেটের জন্য মাথা কুটে মরছিলেন। অবশেষে এক গাঁদা উইকেট পেয়ে আপাতত আফসোসটা মিটিয়েছেন। কিন্তু এই ফাঁকে যে তিনি একটা রানের জন্য হা পিত্যেশ করে বেড়াচ্ছেন, সেটা আমরা খেয়ালই করিনি।
অবশেষে প্রায় দুই বছর পর একটা রান করতে পারলেন এবাদত হোসেন চৌধুরী।
এই দুই বছরে এবাদত শূন্য রানে আটকে থাকার একটা রেকর্ডও করে ফেলেছেন। ক্রাইস্টচার্চে তিনি প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে অপরাজিত ছিলেন। এটা ছিলো তার টানা দশম শূন্য রান এবং বিশ্বরেকর্ড। এর আগে সর্বোচ্চ টানা ৯টি করে শূন্য রানে আটকে থাকার রেকর্ড ছিলো ক্রিস মার্টিন ও লাহিরু কুমারার; তারা ৯ বার টানা শূন্য রানে আটকে ছিলেন।
এদের ছাড়িয়ে এবাদত হয়ে উঠলেন কিং অব জিরো।
এবাদত ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন জোড়া শূন্য দিয়েই। নিউজিল্যান্ডেই ২০১৯ সালে হ্যামিলটন টেস্টের প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে অপরাজিত ছিলেন। পরের ইনিংসে অবশ্য শূন্য রানে আউট হয়ে যান। ক্যারিয়ারের প্রথম ৪ ইনিংসেই ছিলো শূন্য।
ভারত সফরে গিয়ে ইন্দোরে প্রথম ইনিংসে ২ রান করেছিলেন; যেটা তার ক্যারিয়ারে খুবই ব্যতিক্রমী একটা ঘটনা। পরের দুই ইনিংসেও ভারত সফরে ১টি করে রান করেছিলেন। তবে ওই ভারত সফরের শেষ ইনিংসেই কলকাতায় শূন্য রানে আউট হয়ে ধারাবাহিকতায় ফেরেন। বলতে পারেন, এক রেকর্ড যাত্রার শুরু করেন ওখান থেকে।
সেই থেকে এই ক্রাইস্টচার্চের প্রথম ইনিংস পর্যন্ত টানা ১০ ইনিংসে এবাদত কোনো রান করতে পারেননি। সব শূন্য আর শূন্য। এর মধ্যে ৭ ইনিংসে অপরাজিত ছিলেন তিনি শূন্য রানে।
এখানে আপনি চাইলে এবাদতের রানের হাহাকারটাকে আরেকটু বড় করে দেখতেদ পারেন। এই সময়ে এবাদত ৫ ইনিংসে ব্যাট করতে নামতে পারেননি। মানে খেলেছেন, এমন ম্যাচের টানা ১৫ ইনিংসে রান করতে পারেননি এবাদত।
সবমিলিয়ে এবাদত তার ক্যারিয়ারে ১৮ ইনিংসের মধ্যে ১৪ বারই শূন্য রানে আটকে ছিলেন। তার মধ্যে ৯ বার অপরাজিত ছিলেন। আরও ভালো করে বললে বলা যায়, এবাদত তার ক্যারিয়ারে মাত্র ৪টি ইনিংসে শূন্য রানকে পার করতে পেরেছেন!
সর্বশেষ এই ক্রাইস্টচার্চে কাইল জেমিসনকে চার মেরে দীর্ঘ এই খরা ঘুচিয়েছেন এবাদত। বলাই বাহুল্য এটা এবাদতের ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ স্কোর। এর আগে সর্বোচ্চ ইনিংস ছিলো ২ রানের। এখন এবাদত ১২ টেস্টে ৮ রানের মালিক!
বিপরীতে এই ১২ টেস্টে তার ২০টি উইকেট আছে। এবাদতের কাছে অন্তত রান করার চেয়ে উইকেট নেওয়া সহজ বলে মনে হচ্ছে!