রণাঙ্গনের রণকৌশল

বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ভারতের ওয়ানডে সিরিজ। টেস্ট সিরিজে হারলেও ওয়ানডেতে ঘুরে দাঁড়াতে চায় সফরকারীরা। এদিকে ওয়ানডে সিরিজে আসছে বেশ কিছু পরিবর্তন। তিন ফরম্যাটেই অধিনায়কত্ব হারিয়ে প্রথমবার শুধু ব্যাটার হিসেবে খেলবেন বিরাট কোহলি। অপরদিকে, দলে ফিরেছেন শিখর ধাওয়ান। সহ অধিনায়কের দায়িত্বে থাকবেন জাসপ্রিত বুমরাহ।

এই সিরিজকে সামনে রেখে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়েই ভাবতে হচ্ছে ভারতকে। সেই ভাবনাগুলো আলোচনার খোড়াক হতে পারে পাঠকদের জন্যও।

  • কোহলি – দ্য ব্যাটার

বুধবার পার্লে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে দিয়ে ২০১৬ সালের অক্টোবরের পর প্রথমবার শুধু একজন ব্যাটার হিসেবেই খেলবেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক বিরাট কোহলি। নিজের পুরোনো ভূমিকায় ঠিক কিভাবে তিনি মানিয়ে নেন সেটি দেখার অপেক্ষায় ক্রিকেট সমর্থকরা।

কোহলি নিজেও প্রত্যাশা করছেন অধিনায়কত্বের অতিরিক্ত চাপ না থাকায় নিজের সেরা ফর্মে ফিরবেন তিনি। ২০২০ সাল থেকে ১২ ওয়ানডেতে ৪৭ গড়ে ৫৬০ রান করেছেন এই ব্যাটার।

  • ধাওয়ানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ

সবশেষ জুলাইতে শ্রীলঙ্কায় দ্বিতীয় জাতীয় দল হিসেবে শিখর ধাওয়ানের সফর করেছিলো ভারত। তবে এরপর ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও জায়গা পাননি তিনি।

সবশেষ বিজয় হাজারে ট্রফিতে খুবই হতাশাজনক পারফরম করেন তিনি। ৫ ম্যাচে করেন মোটে ৫৬ রান। আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে একাদশে সুযোগ পেলে নিজের সেরাটা দিয়ে জায়গা পাঁকা করতে চাইবেন এই ওপেনার।

  • রাহুলের ব্যাটিং পজিশন?

গেলো দুই বছরে বেশিরভাগ সময়ই ওয়ানডেতে মিডল অর্ডারে ব্যাট করেছেন লোকেশ রাহুল। সেখানে ৬৯ গড়ে ১০৯ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ৫৫৪ রান! যদি এই সিরিজে রাহুলকে টপ অর্ডারে খেলানো হয় তাহলে মিডল অর্ডারে শ্রেয়াস আইয়ার, সুরিয়াকুমার যাদব ও ঋষাভ পান্তরা রয়েছেন।

তবে, রাহুলের সাফল্য যেহেতু মিডল অর্ডারে তাই টিম ম্যানেজমেন্ট তাঁকে সেখানেই রাখতে চাইবেন। আর সেটা যদি হয় তাহলে ওপেনিংয়ে দেখা যেতে পারে রুতুরাজ গাইকোড় ও ধাওয়ানকে।

  • অলরাউন্ডার ভেঙ্কটেশ আইয়ার

বিজয় হাজারে ট্রফিতে পাঞ্জাবের বিপক্ষে ১৯৮ রান করে নজরে এসেছিলেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার। এরপর আইপিএলে ২০২১ আসরে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে নজরকাঁড়া পারফরম্যান্স দেখান তিনি। বিজয় হাজারে ট্রফির এবারের আসরে আইয়ার ব্যাট করেছেন মিডল অর্ডারে।

৬ ম্যাচে ২ সেঞ্চুরি ও ১ ফিফটিতে ৬৩ গড়ে ১৩৪ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ৩৭৯ রান। এছাড়া বল হাতে শিকার করেছেন ৯ উইকেট। হার্দিক পান্ডিয়া দলে না থাকায় অলরাউন্ডার কোটায় দারুন এক বিকল্প পাচ্ছে ভারত।

  • ভারতের বোলিং কম্বিনেশন কেমন হবে?

ভেঙ্কটেশ আইয়ার দলে থাকলেও ষষ্ঠ বোলার হিসেবেই তাকে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সেক্ষেত্রে প্রথম সারির চার বোলারকে নিয়ে মাঠে নামবে ভারত। শার্দুল ঠাকুরকে দলে রেখে তিন পেসার ও এক স্পিনার নিয়ে মাঠ নামতে পারে সফরকারীরা। অপরদিকে, আইয়ারকে একাদশে না রাখলে পাঁচ ব্যাটার, এক কিপার ও পাঁচ বোলারকে নিয়ে দল সাজাতে পারে ভারত।

  • অশ্বিনের প্রত্যাবর্তন

সবশেষ ২০১৭ সালের জুনে জাতীয় দলের হয়ে ওয়ানডে খেলেছেন অফ স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। সবশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তিনি রঙিন জার্সিতে প্রত্যাবর্তন করেন।

৩ ম্যাচে ৫.২৫ ইকোনমিতে ৬ উইকেট শিকার করেন এই স্পিনার। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে একাদশে জায়গা পেতে হলে লেগ স্পিনার য়্যুজভেন্দ্র চাহালের সাথে প্রতিযোগিতায় নামতে হবে অশ্বিনকে। তবে দুই স্পিনার খেলালে সেক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবেই দলে থাকবেন অশ্বিন।

  • বুমরাহর উপর অতিরিক্ত চাপ

আসন্ন সিরিজে সহকারী অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন পেসার জাসপ্রিত বুমরাহ। বোলিং ইউনিটের নেতৃত্বের পাশাপাশি সহ অধিনায়কের চাপটা সামাল দিতে পারবেন কিনা বুমরাহ সেদিকেও নজর দিবে টিম ম্যানেজমেন্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link