বাদশাহ বাবরের মুকুট

সাকিব মাহমুদের ইংলিশ বোলার এলেন বল করতে। ইনিংসের ৩৮তম ওভারের প্রথম বল। স্ট্রাইকে বাবর আজম। পাকিস্তানি অধিনায়ক। কাট করলে বাবর। ডিপ কভার অঞ্চল দিয়ে সীমানার বাইরে বল। আর তাতে বাবর আজম তুলে নিলেন বছরের দ্বিতীয় শতক। শুধু শতকেই থেমে যাননি বাবর সেদিন। নিজের ইনিংসকে বড় করে দেড়শ রান অবধি নিয়ে যান বাবর। যদিও বার্মিংহামে হওয়া ম্যাচটি সেদিন হেরেছিলো পাকিস্তান। কিন্তু তাতে বিশ্বসেরা হওয়ার দৌড়ে পরে পিছিয়ে পড়েননি বাবর আজম।

সদ্য প্রকাশিত আইসিসির বর্ষসেরা ওয়ানডে ক্রিকেটারের খেতাবটা পেয়েছেন বাবর আজম। ২০২১ সালে তিন ফরম্যাটেই ফর্মে ছিলেন তিনি। টি-টোয়েন্টিতে তাকে ছাড়িয়ে গেছেন তারই সতীর্থ মোহাম্মদ রিজওয়ান। আর অন্যদিকে টেস্ট ক্রিকেটের বর্ষসেরা হয়েছেন ইংল্যান্ডের জো রুট।

২০২১ এ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটটা প্রাধান্য পেয়েছিলো সর্বাধিক। সাথে তাল মিলিয়ে বড় একটা অংশ জুড়ে ছিলো টেস্ট। তারই ফাঁকফোঁকড়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে ওয়ানডে ম্যাচ। পাকিস্তান খেলেছে সেখানে কেবল ছয়টি। দুইটি সিরিজ। বছরের প্রথমটি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ও শেষটি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সিরিজ জিতলেও হেরেছিলো ইংল্যান্ডে বিপক্ষে। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে বছরের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি করেছিলেন বাবর আজম।

তার থেকেও বড় বিষয় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে যে দু’টি ম্যাচে জয় পেয়েছিলো পাকিস্তান সে দু’টি ম্যাচের ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন বাবর আজম। সুতরাং তিনি শুধু রান করেননি, দলের জয়ে অবদানও রেখেছিলেন। সব মিলিয়ে ছয় ম্যাচে তিনি ২০২১ সালে রান করেছিলেন ৪০৫। বাবরের ব্যাটিং গড়টা বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬৭.৫০। এমন পারফর্মেন্সই তাকে দিনকতক আগে বানিয়েছিলো পাকিস্তানের ওয়ানডে বর্ষসেরা ক্রিকেটার। এখন আইসিসির ওয়ানডে বর্ষসেরা ক্রিকেটার হওয়ায় বেশ প্রফুল্লিত বাবর আজম।

তাঁর এমন অর্জন নিয়ে বাবর বলেন, ‘কয়েকদিন আগে পাকিস্তানের বর্ষসেরা ক্রিকেটার ঘোষিত হওয়ার পর এবার আইসিসির বর্ষসেরা ওয়ানডে ক্রিকেটার ২০২১ নির্বাচিত হওয়ায় আমি বেশ কৃতজ্ঞ। ক্রিকেটের অভিভাবক ও বিশ্ব সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া এমন স্বীকৃতি সত্যিই বেশ প্রশান্তি জাগানিয়া ও আনন্দের একটি বিষয় আমার জন্যে।’

ব্যক্তিগতভাবে ভাল একটা ফর্ম ধরে রাখার পাশাপাশি বাবর আজম তিন ফরম্যাটেই পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে। পাকিস্তান ক্রিকেটকে বর্তমান বিশ্ব বেশ সমীহই করছে বর্তমান সময়ে। তবে এর পুরো কৃতিত্ব তাঁর দলের সকল সদস্যদের দিয়েছেন বাবর।

তিনি বলেছেন, ‘তিন ফরম্যাটেই পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্যে দারুণ একটি বছর কেটেছে এবং আমি আনন্দিত এমন একটি অসামান্য খেলোয়াড়দের সঙ্গী হতে পেরে যারা কিনা মাঠ এবং মাঠের বাইরে নিজেদের সেরাটা দিয়েছে। তাঁরা তাদের পারফর্মেন্স দিয়েই ফ্যান ও প্রতিপক্ষের কাছ থেকে নিজেদের প্রাপ্য সম্মান ও স্বীকৃতি অর্জন করে নিয়েছে।’

সত্যিকার অর্থেই অনবদ্য একটা বছর কেটেছে পাকিস্তানের৷ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মঞ্চে তো রীতিমত অপ্রতিরোধ্য দল হয়ে সেমিফাইনালে গিয়ে হোচট খেয়েছিলো বাবর আজমের দল। তাছাড়া বাকি দুই ফরম্যাটেও ছিলো ছন্দে। এসবকিছু মিলিয়ে বাবর আজম নতুন এক উদ্যমে নতুন এক বছর পার করতে মুখিয়ে রয়েছেন। হয়ত এবার আরো বড় কিছু অর্জন করবার পরিকল্পনাও রয়েছে তাঁর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link