৪০২ দিন পর

ধারণা করা হচ্ছিল হয়তো এই বিপিএলেও মাঠে নামা হবে না বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই মহানায়কের। মাঝের এই লম্বা সময়টায় বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা অপেক্ষা করছিল মাশরাফিকে আরেকবার এই ক্রিকেট মাঠে দেখার। সেই স্বপ্নই পূরণ হতে চলেছে আজ। ঠিক ৪০২ দিন পর আবার বাইশ গজে ফিরছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। ঢাকার হয়ে আজ সিলেটের বিপক্ষে মাঠ নামছেন এই পেসার।

বাংলাদেশের ক্রিকেট আজ যে ভিত্তিটার উপর দাঁড়িয়ে গর্ব করে সেটা তৈরি করে দিয়েছিলেন তিনি। হারতে থাকা এক দলের অধিনায়কত্ব নিয়ে রূপকথার মত সবকিছু বদলে দিলেন। বদলে গেল জয়-পরাজয়ের হিসাব, বদলে গেল শরীরি ভাষা। বাংলাদেশের ক্রিকেট এক ঘোরের মধ্যে চলে গিয়েছিল। মাঠে নেমে যা করতে চেয়েছেন তাই হয়েছে মাশরাফি বিন মর্তুজার হাত ধরে।

বাংলাদেশের ক্রিকেটে এক মিথে পরিণত হয়েছিলেন তিনি। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সফলতম অধিনায়কও তিনি। তবে ২০১৯ বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পরে যেন সব বদলে গেল। হঠাত করেই বাংলাদেশের ক্রিকেটে এক রদবদল হলো। ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ খেলার পর বাংলাদেশের হয়ে আর মাঠে নামেননি মাশরাফি বিন মর্তুজা।

এরপর সে বছরের শেষে খেলেছিলেন বঙ্গবন্ধু কাপে। এরপর আর কোন প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটেই অংশ নেননি সাবেক এই অধিনায়ক। মাঝে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে খেলার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত আর মাঠে নামেননি। এবার বিপিএলে মিনিস্টার ঢাকা দলে ভিড়ায় এই পেসারকে। তবে অনুশীলনে আবার পুরনো ইনজুরি ফিরে আসলে প্রথম তিন ম্যাচে খেলতে পারেননি।

ধারণা করা হচ্ছিল হয়তো এই বিপিএলেও মাঠে নামা হবে না বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই মহানায়কের। মাঝের এই লম্বা সময়টায় বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা অপেক্ষা করছিল মাশরাফিকে আরেকবার এই ক্রিকেট মাঠে দেখার। সেই স্বপ্নই পূরণ হতে চলেছে আজ। ঠিক ৪০২ দিন পর আবার বাইশ গজে ফিরছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। ঢাকার হয়ে আজ সিলেটের বিপক্ষে মাঠ নামছেন এই পেসার।

৪০২ দিনের বিশাল এক বিরতি। তবে মাশরাফির ক্যারিয়ারের এটাই প্রথম লম্বা বিরতি নয়। ইনজুরিরর কারণে ক্যারিয়ারে অনেকবার মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে। তখন লম্বা সময় মাঠের বাইরে কাটিয়েছেন। তবে সবচেয়ে বড় বিরতিটা এসেছিল তাঁর ক্যারিয়ারের একেবারে শুরুতে। মাশরাফি যখন বল হাতে রীতমত আগুনের গোলা।

সেই সময় ২০০১ সালের ২৬ ডিসেম্বর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়লেন। এরপর মাঠে ফিরতে সময় নিয়েছেন প্রায় দেড় বছর। সেবার ঠিক ৪০৮ দিন পর মাঠে ফিরেছিলেন নড়াইল এক্সপ্রেস। আর এবার ফিরলেন ৪০২ দিন পর। ক্যারিয়ারের শেষবেলায় এসে এ যেন এক নতুন শুরু।

ইনজুরির কারণে তাঁর ক্যারিয়ারের আসা যাওয়ার পর্ব অনেক। তবে ক্রিকেট মাঠে যতবার ফিরে এসেছেন ততবারই নতুন করে তাঁকে আবিষ্কার করা গিয়েছে। বারংবার ইনজুরিতে পড়ে হয়তো পেস হারিয়েছেন তবে যোগ করেছেন নতুন কোন অস্ত্র। এখনো কাটার শিখতে বাংলাদেশের তরুণ পেসাররা তাঁর কাছে ক্লাস নেয়।

আর অধিনায়ক মাশরাফি তো সবসময়ই অনন্য। ক্রিকেটারদের সাথে তাঁর সম্পর্ক, মাঠে তাঁর অনুপস্থিতি সবকিছুই একটা দলকে বদলে দিতে পারে। মিনিস্টার ঢাকার অধিনায়ম হলেও মাঠে মাশরাফির একটা ভূমিকা তো থাকবেই।

এছাড়া  বিপিএলে ঢাকার শুরুটা খুব একটা ভালো হয়নি। প্রথম দুই ম্যাচ হেরে পড়ে গিয়েছিল খাদের কিনারায়। তৃতীয় ম্যাচে জয় তুলে নিতেও বেশ লড়াই করতে হয়েছে। সবমিলিয়ে ঢাকা দলটার অবস্থা এখনো খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। মাশরাফি ফিরছেন ঢাকার হয়ে। বাংলাদেশের মত ঢাকাকেও একসুতোয় হয়তো বেঁধে ফেলবেন মাশরাফি। মিরপুরে আরেকবার ‘ম্যাশ’ ধ্বনি উঠুক।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...