ধারাভাষ্যে অভিষেক তামিমের

এ যেন না থেকেও আছেন তামিম ইকবাল। দুইদিন আগে পর্যন্তও তাঁর প্লে অফ খেলার একটা সম্ভাবনা ছিল। তবে মিনিস্টার ঢাকা বিদায় নিলে আর মাঠে নাম হচ্ছে না এই ওপেনারের। এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও (বিপিএল) ৪০০ এর বেশি রান করেছেন।

এখনও পর্যন্ত, চলতি আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনি। আজ বাইশ গজে না থাকলেও মাঠে ঠিকই দেখা গেল তামিমকে। ভিন্ন রূপে, ভিন্ন ভূমিকায়। কি সেই ভূমিকা? মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এবার ধারাভাষ্যকার হিসেবে অভিষেক হয়ে গেল তামিম ইকবাল খানের।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে ছয় মাসের জন্য বিরতি নিয়েছেন তামিম ইকবাল। এই সময়টায় সংক্ষিপ্ত এই ফরম্যাটটা নিয়ে ভাবতে চাচ্ছেন না। তবে ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের অধিনায়ক তিনি। টেস্ট ক্রিকেটেও বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটসম্যান। সবমিলিয়ে এই মুহূর্তে জাতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তামিম ইকবাল।

তবে এর মাঝেই তামিমকে দেখা গেল ভিন্ন এক চরিত্রে। আজ মিরপুরে চলছিল খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যে এলিমেনিটর ম্যাচ। সেই ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে হঠাতই কমেন্ট্রি বক্সে হাজির হলেন তামিম। ব্যাট হাতে এক যুগেরও বেশি সময় বাংলাদেশকে সার্ভিস দেয়া তামিম এবার হয়ে উঠলেন পুরোদস্তর ধারাভাষ্যকার। অর্থাৎ কমেন্ট্রি বক্সে নতুন এক জীবনের শুরু হলো এই ক্রিকেটারে।

আতাহার আলী খানের পর বাংলাদেশের হয়ে কেউ কমেন্ট্রি বক্সে হাল ধরবেন এই আশা যেন পূরনই হচ্ছিল না। তবে তামিমকে নিয়ে এবার স্বপ্ন দেখতে পারে বাংলাদেশ। এই স্টাইলিশ ব্যাটসম্যানের ক্রিকেট বোঝাপড়াটাও তো দারুণ।

এছাড়া ধারাভাষ্যে যে তামিমকে দেখা যাবে তা অনুমেয়ই ছিল। কেননা উপস্তাপনা দিয়ে আগের দর্শকদের মন কেড়ে নিয়েছেন এই ক্রিকেটার। শুরুটা হয়েছিল করোনার সময়ে। সেই সময় তামিম নিজের পেজ থেকে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের নিয়ে একটি লাইভ শো করেন। সেখানে বিদেশি কয়েকজন ক্রিকেটারও এসেছিলেন।

সেসময় তাঁর কথা বলার ভঙ্গি ও উপস্থাপনার দিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন। এরপর গতবছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময়ও টেলিভিশনে একটি শো করেন তামিম ইকবাল। ফলে কমেন্ট্রিবক্সে তামিমের দেখা মেলাটা শুধু একটা অপেক্ষা ছিল। তবে এই অপেক্ষা যে এত দ্রুতই মিটবে সেটা অবশ্য কারো ভাবনাতেও ছিল না। আবারো সবাইকে অবাকই করলেন তামিম।

ধারাভাষ্যে এসে তামিম চলমান আসরে মিনিস্টার ঢাকার ব্যর্থতার কারণ জানালেন। তামিমের মতে দল হিসেবে খেলতে না পারাই ঢাকার ব্যর্থতার কারণ। তামিম বলেন, ‘আমরা দল হিসেবে ভাল খেলতে পারিনি। হয়তো আমি অনেক রান পেয়েছে। ব্যক্তিগত ভাবে কয়েকজন ভাল করেছে, কিন্তু সেটা দলের সামগ্রিক পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলেনি। চট্টগ্রামের বিপক্ষে যে ম্যাচটাতে শেষ ওভারে জয়ের জন্য আমাদের নয় রান দরকার ছিল, সেটায় জিততে পারা উচিৎ ছিল। ওই ম্যাচটা জিতলে হয়তো এখনকার দৃশ্য হয়তো অন্যরকম হয়তো।’

ওই ম্যাচটা জিতলে হয়তো, আজকের ম্যাচে তামিম মাঠেই থাকতেন। তাহলে হয়তো ধারাভাষ্যকার হিসেবে তাঁর অভিষেকটা আরো খানিকটা পিছিয়ে যেত। কে জানে, মাঠের ক্রিকেটকে পাঁকাপাকি ভাবে ছেড়ে দেওয়ার পর হয়তো ধারাভাষ্যেই থিতু হবেন তামিম।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link