জমজমাট এক নিলামের সমাপ্তি তো হয়েই গেলো। এখন অপেক্ষার পালা খেলা মাঠে গড়ানোর। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) সবগুলো দলই মোটামুটি ঢেলে সাজিয়েছে ফ্রাঞ্চাইজিগুলো। কিছু খেলোয়াড় ফিরেছেন নিজেদের চিরচেনা ফ্রাঞ্চাইজির শিবির কিছু খেলোয়াড় খুঁজে পেয়েছেন নতুন ঘর। তবে আজকের আলোচনায় থাকছেন ঘর না পাওয়া খেলোয়াড়েরা।
সেই ২০০৮ থেকে শুরু হয়ে ২০২২ এ এসে পঞ্চদশতম আসর আয়োজিত হতে চলেছে। এখন অবধি সবগুলো আসর খেলা খেলোয়াড়দের সংখ্যা কম নয়। আগের সব আসর খেলেও এবারের আসরে দল না পাওয়া খেলোয়াড়দের সংখ্যাটা অল্প হলেও নি:সন্দেহে তাঁদেরকে মিস করবে আইপিএল। দীর্ঘ এক সম্পর্কের বিচ্ছেদে বেদনার সুর তো অবধারিত।
- ধাওয়াল কুলকার্নি (ভারত)
আইপিএল ক্যারিয়ারের শুরুটা ধাওয়াল কুলকার্নি করেছিলেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে। নতুন বলে দুই দিকে মুভমেন্ট করার সামর্থ্য ছিলো তাঁর। ২০১৩ অবধি বেশ ভাল সময়ই কাটিয়েছেন তিনি মুম্বাইয়ের পতাকাতলে। এরপর ২০১৫ পর্যন্ত ছিলেন রাজস্থান রয়্যালসের ডেরায়। দুই বছরের জন্যে রাজস্থান রয়্যালস ব্যান হওয়ায় তিনি খেলেছিলেন গুজরাট লায়ন্সের হয়ে।
এ সময়ে নিজের ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং ফিগারের দেখা পান ধাওয়াল কুলকার্নি। প্রথম কোয়ালিফায়ার এরপর আবারও তিনি ফিরে গিয়েছিলেন রাজস্থানে। সেখান থেকে আবার মুম্বাইয়ে জার্সি গায়ে জড়ান ২০১৯ সালে। ২০২২ সালের মেগা নিলামের আগে তাঁকে ছেড়ে দেয় মুম্বাই। আর মেগা নিলামে তিনি পাননি কোন দল।
- অমিত মিশ্র (ভারত)
আইপিএলের ইতিহাসের তিনবার হ্যাট্রিক করা একমাত্র বোলার অমিত মিশ্র। ২০০৮ সালের প্রথম আসরেই তিনি করেছিলেন প্রথম হ্যাট্রিক তৎকালীন ডেকান চার্জার্সের বিপক্ষে। তারপর ২০১১ ও ২০১৩ সালে নিয়েছিলেন পরপর তিন বলে তিন উইকেট। ১৪ বছরে তিনি তিনটি ফ্রাঞ্চাইজির হয়ে খেলেছিলেন।
এর মধ্যে দিল্লী ক্যাপিটালসের হয়ে একশোর বেশি ম্যাচ খেলার কৃতীত্ব গড়েছিলেন অমিত মিশ্র। এছাড়া তিনি ডেক্কান চার্জার্স এবং সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়েও খেলেছিলেন তিনি। আর মাত্র পাঁচটি উইকেট নিতে পারলেই এই লেগ স্পিনার ছাড়িয়ে যেতে পারতেন লংকান কিংবদন্তি লাসিথ মালিঙ্গাকে। কিন্তু আফসোস অভিজ্ঞ এই খেলোয়াড়ও দল পাননি এবারের মেগা অকশনে।
- পিযুষ চাওলা (ভারত)
৩৩ বছর বয়সী লেগ স্পিনার পিযুষ চাওলাও ছিলেন এবারের মেগা অকশনে অবিক্রিত ছিলেন। অথচ টুর্নামেন্টের চতুর্থ সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি পিযুষ চাওলা। ১৫৭ ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ১৬৫ উইকেট। প্রথম ছয় আসর তিনি ছিলেন কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের সাথে।
২০১৪ আসরে যুক্ত হয়েছিলেন কোলকাতা নাইট রাইডার্সের সাথে। সেখানেও ছয় বছর কাটিয়ে তিনি শেষের দুই আসর খেলেছিলেন চেন্নাই সুপার কিংসের শিবিরে। সেখান থেকেই তিনি উঠেছিলেন মেগা নিলামে। তবে তাঁকে দলে নিতে কোন ফ্রাঞ্চাইজিই খুব বেশি আগ্রহ দেখায়নি।
- এবি ডি ভিলিয়ার্স (দক্ষিণ আফ্রিকা)
একেবারে শুরুর দিকে মিস্টার থ্রিসিক্সটি খ্যাত এবি ডি ভিলিয়ার্স ছিলেন দিল্লী ডেয়ারডেভিলস দলের সদস্য। সেখান থেকে রয়েল চ্যালেঞ্জার্সে কাটিয়েছেন দীর্ঘ সময়। এ সময়েই তিনি যত কীর্তি গড়েছেন তা হয়ত লেখা হয়ে থাকবে আইপিএলের ইতিহাসে। ৫০টি হাফ সেঞ্চুরির পাশাপাশি তিনটি সেঞ্চুরিও করেছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম সংস্করণে এ আয়োজনে।
বিরাট কোহলির সাথে ২০১৬ সালে আইপিএল সর্বোচ্চ ২২৯ রানের পার্টনারশীপ করেছিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। ব্যক্তিগত কারণে তিনি সব ধরণের ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন সব ধরণের ক্রিকেট থেকে। সে কারণে এই খেলোয়াড় খেলোয়াড়কেও দেখা যাবে আর আইপিএলের মঞ্চে। তাঁর মতো তারকা ব্যাটারকের নিশ্চয়ই মিস করবে আইপিএল ভক্তরা।
এবার মূলত তিন বছর মেয়াদে দল গোছাতে হয়েছে দলগুলোকে। সেইদিক বিবেচনায় ফ্রাঞ্চাইজিগুলো তরুণ খেলোয়াড়দের প্রধান্য বেশি দিয়েছে দল গোছানোর ক্ষেত্রে। বয়সের মারপ্যাঁচে হয়ত অভিজ্ঞ অনেক খেলোয়াড় এবার দল পাননি আইপিএলের মেগা অকশনে।