জাতীয় দলের পাইপলাইন ঠিক রাখার জন্যই মূলত পরিকল্পনাটা করা হয়েছিল। জাতীয় দলের দরজায় যারা কড়া নাড়ছেন কিংবা জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া ক্রিকেটারদের আবার প্রস্তুত করার জন্যই এই কার্যক্রম। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের একট ছায়া দল গড়া হলো বাংলা টাইগার্স নামে। এখন পর্যন্ত এই ক্যাম্প নিয়ে দারুণ উচ্ছ্বাসই শোনা যাচ্ছে ক্রিকেটারদের কণ্ঠে।
২৩ জন ক্রিকেটারকে নিয়ে গড়া এই ক্যাম্প শুরু হয়েছে গতমাসের ২৫ তারিখে। বগুড়াতে শুরু হওয়া সেই ক্যাম্পে চলছে সকাল-বিকাল অনুশীলন। এতদিন জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া কিংবা বিশেষ করে টেস্ট দলের ক্রিকেটাররা মোটামুটি একাকী অনুশীলন করতেন। তাঁদের নিয়ে কাজ করার মত থাকতেন না কোচ। ফলে লড়াইটা ছিল পুরোপুরি একার।
যেমন টেস্ট দলের নিয়মিত সদস্য নাঈম হাসানের কথাই ধরা যাক। ডানহাতি এই স্পিনারকে নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট স্কোয়াডে রাখা হয়নি। তবে এই ক্রিকেটারকে তো নিজেকে প্রস্তুত রাখতে হতো। কেননা দেশের মাটিতে খেলা হলেই তো নাঈমের ডাক পড়ে। অথচ যখন টেস্ট ম্যাচ থাকেনা তখন নাঈমদের প্রস্তুত রাখার উপায় কী?
নাঈম জানাচ্ছিলেন এই ক্যাম্প কীভাবে তাঁর ক্রিকেটটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করছে। খেলা৭১ এর সাথে আলাপচারিতায় নাঈম বলেন, ‘ভাই, যারা জাতীয় দলের বাইরে থাকে তাঁরা কিন্তু এমন কোয়ালিটি প্র্যাকটিস করার সুযোগ পায়না। এইখানে আমরা কোচ পাচ্ছি ভালো। কোন ভুল হলে স্যাররা আছেন। সাথে সাথে দেখিয়ে দিচ্ছেন। এছাড়া সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত লম্বা সময় অনুশীলন করছি। একা একা করলে হয়তো একবেলা একটু করেই দিন শেষ হয়ে যেত। ফলে আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য আমরা ভালোভাবে প্রস্তুত হতে পারছি।’
এছাড়া বগুড়ায় ক্যাম্প করার সিদ্ধান্তটাও ক্রিকেটারদের জন্য দারুণ কাজে দিয়েছে। বাংলাদেশের অন্য যেকোন জায়গার থেকে বগুড়ার পিচটা আলাদা। এখানে পেসারদের জন্য বাড়তি কিছু থাকে। স্পিনারদের নিজেদের বোলিং নিয়ে আলাদা করে কাজ করতে হয়। যেমন নাঈম বলছিলেন, ‘আমরা এইখানে দারুণ একটা উইকেট পেয়েছি। ব্যাটিং আর পেসারদের জন্য খুব ভালো উইকেট। এইখানে আমাদের স্পিনারদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। এইখানে যদি সবসময় বোলিং করি তাহলে দেশের বাইরে গিয়ে কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়। এটা প্রায় বাইরের উইকেটের মতই।’
পেস বোলিং উইকেটে খেলে নিজের বোলিংকে কীভাবে উন্নত করছেন সেকথাও জানাচ্ছিলেন নাঈম। তিনি বলেন, ‘ধরেন আজকে প্রথম বল করলাম। আজকে করার পর আমাকে যা চ্যালেঞ্জে পড়তে হইসে সেটা নিয়ে আমি আবার কাজ করতেসি। পরেরদিন আমি আবার এর চেয়ে ভালো করতে পারব। দিনদিন এভাবে অনেক উন্নতি করা সম্ভব।’
যদিও নাঈমদের এই ক্যাম্প আপাতত বন্ধ হচ্ছে আগামীকালই। কেননা এরপরই বাংলা টাইগার্সের ২৩ জন ক্রিকেটার ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের জন্য নিজেদের দলে যোগ দিবেন। তবে এর আগে এই ক্যাম্প নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন সৌম্য সরকারও।
জাতীয় দলের বাইরে চলে যাওয়া এই ব্যাটসম্যান বলেন, ‘আমরা সকাল থেকে শুরু করে বিকাল পর্যন্ত প্র্যাকটিস করতাম। এটা অনেকটা ম্যাচ প্র্যাকটিসের মত হয়েছে। লম্বা সময় ক্রিকেট খেলার অভ্যাস তৈরি হয়েছে। এটার ফলে ম্যাচে গিয়ে আমরা একদম শেষ পর্যন্ত মনোযোগটা ধরে রাখতে পারব। এতে দিনশেষে আসলে দেশের জন্যই ভালো হবে।’