প্রেমের জন্য আজকালকার কপত-কপতিরা কত কি না করেন! কেউ সাত সাগর তের নদী পাড়ি দেওয়ার কথা দেন, কেউ বা বলেন আকাশের চাঁদ এনে দেবেন। সুনীল বন্দোপাধ্যায় তো রীতিমত সমস্ত সংসার তন্ন তন্ন করে খুঁজে ১০৮ টা নীল পদ্মও এনেছিলেন। কিন্তু, প্রেমিকের জন্য পাথর হাতে নেওয়ার নজীর সম্ভবত খুব বেশি খুঁজে পাওয়া যায় না!
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে। একজন নারী একটা পাথর হাতে নিয়ে মাঠের দিকে আগ্রাসী ভঙ্গিতে ছুটে যাচ্ছেন। আর সেই নারীকে আটকানোর চেষ্টা করছেন এক নিরাপত্তা কর্মী। পরে জানা যায় সেই ম্যাচেই নাকি তাঁর প্রেমিক আহত হয়েছেন। তাই প্রতিপক্ষ দলের ফুটবলারদের পাথর ছুঁড়ে মারতে গিয়েছিলেন এই প্রেমিকা।
ফুটবল কেনিয়া ফেডারেশন প্রিমিয়ার লিগের এক ম্যাচ চলছিল। একটি ম্যাচ দিয়েই এই লিগ এখন বিশ্বের নানা প্রান্তে থাকা মানুষদের নজর কাড়ছে। মাঠের ফুটবল দিয়ে নয় বরং মাঠের বাইরের কাণ্ড কীর্তির জন্যই এই আলোচনা।
সেই প্রেমিকার ছবিও এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ম্যাচটি যদিও বেশ কয়েকদিন আগেই হয়েছে। তবে এই ভদ্রমহিলা আসলে কেন পাথর নিয়ে ছুটে যাচ্ছিল সেই প্রশ্ন জেগেছে অনেকের মনেই। সেই নারীর নাম হচ্ছে নায়ার কাসাগাম।
এরপর দর্শকরা নিরপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে মাঠে ঢুকে পড়তে চায়। পরে অবশ্য প্রথম অর্ধ্বের পর খেলাটি বাতিল ঘোষণা করা হয়। তবে এর আগেই ম্যাচের মধ্যে গুরুতর ভাবে আহত হয় নায়ার কাসাগামের প্রেমিক। মাঠে এসে নিজের প্রেমিককে মাটিতে লুটিয়ে পড়ার দৃশ্য অবশ্য মেনে নিতে পারেননি এই নারী।
দ্য স্ট্যান্ডার্ডকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নায়ার বলেন, ‘আমি খুব ঠাণ্ডা একজন মানুষ। যেই নায়ারকে পাথর নিয়ে ছুটে যেতে সবাই সেদিন দেখেছে সেটা আসলে আমি কখনোই ছিলাম না।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি আসলে সেদিন মানসিক ভাবে খুব ডিস্টার্বড ছিলাম। আমার প্রেমিক আহত ছিল। আমি নিজেকে সামলাতে পারেনি কারণ সে আমাকে আর্থিক ভাবে সহযোগিতা করে। এছাড়া এই ফুটবল খেলাটাই আমাদের অর্থ উপার্জনের বড় মাধ্যম।’
‘আর শুরুর দিকে অনেকে এমনও বলছিল যে তাঁকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি মাঠে ঢুকেও দেখেছি ও ভীষণ ভাবে আহত হয়েছে। আমি দেখলাম ও অবচেতন অবস্থায় মাঠে পড়ে আছে। এরপর আমি খুঁজে বের করলাম কে ওকে আহত করেছি। পরে দেখি সেই লোকটা আমার পরিচিত। আমি আরো অবাক হয়ে যাই। এতে আমি আরো রেগে যাই। আমি সাথে সাথে একটা পাথর নিয়ে তাঁকে মারতে যাই।’, যোগ করেন তিনি।
যদিও পরে নিজের রাগকে আয়ত্বে এনেছিলেন এই নারী। পরে কেনিয়ার ফুটবল ফেডারেশনের কাছেও তাঁরা লিখিত অভিযোগ জানায়। এবং ফেডারেশন তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার আশ্বাসও দিয়েছে।