আরো একবার বিপর্যয়, আরো একবার সংকটে বাংলাদেশ দল। টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের আসা যাওয়ার মিছিলে আজ আবার দলের হাল ধরলেন চেনা সেই জুটি। বাংলাদেশের হয়ে সাত ও আট নাম্বারে ব্যাটিং করা দুই ব্যাটসম্যন আফিফ ও মিরাজ। দেখালেন জোহানেসবার্গের এই উইকেটেও কত রান ছিল। এই দুইজনের ব্যাটিং দেখে হয়তো তামিম-মুশফিকরা হয়তো কপাল চাপড়েছেন।
প্রথম ম্যাচটা হয়েছিল সেঞ্চুরিয়নে। সেখানে আগে ব্যাট করতে নেমে দারুণ ব্যাটিং করেছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যান। আর সেই আত্মবিশ্বাসেই হয়তো আজকেও জোহানেসবার্গে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিলেন তামিম ইকবাল। তবে আজ দেখা গেল ভিন্ন দৃশ্য।
তামিম ইকবাল নিশ্চয়ই তাঁর এই জন্মদিনটা ভুলে যেতে চাইবেন। প্রথম ম্যাচে এমন একটা জয়ের পর আজ আশাও ছিল বড়। সিরিজ জয়ের স্বপ্ন নিয়েই আজ মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। তবে ব্যাট করতে নেমে জোহানেসবার্গের উইকেটে আজ দাঁড়াতেই পারেননি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা।
অসাধারণ ফর্মে থাকা লিটন কুমার দাসও আজ ইনিংসটা বড় করতে পারেননি। আজকের পিচে খানিকটা বাড়তি বাউন্স ছিল ঠিকই তবে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা ধৈর্য্যের পরীক্ষা দিতে পারেননি। ফলে মাত্র ৩৪ রানেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। সেই সময় মনে হচ্ছিল আরো একটা ১০০ রানের নিচে অল আউটের লজ্জা পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
তবে সাত নম্বরে আফিফ ব্যাট করতে নেমে একপ্রান্ত থেকে দলের হাল ধরলেন। দলের এমন বিপর্যয়েও নিজের স্বাভাবিক ব্যাটিংটা করে গেলেন তিনি। আস্তে আস্তে আবার বাংলাদেশের স্কোরবোর্ড সচল হতে থাকলো। আফিফকে শুরুতে সাপোর্ট দিয়েছেন মাহমুদুল্লায় রিয়াদ। এই দুজনের জুটিতে বাংলাদেশ পাড়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে।
তবে মাঝপথে আফিফকে রেখেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরলেন রিয়াদ। রিয়াদ ২৫ রান করে ফিরে গেলে থামলো দুজনের ৬০ রানের জুটি। তবে আফিফ থেমে যাননি। এবার তাঁর সঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজকে। আফিফের প্রিয় সঙ্গী বটে।
ব্যাট হাতে দুজনে মিলে এই কিছুদিন আগেও একটা বিরাট পাহাড় পারি দিয়েছিলেন । সেটা অবশ্য ছিল চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। সেদিনও টপ ও মিডল অর্ডারের ব্যর্থতার পর দলের হাল ধরেছিলেন এই দুজন। দলকে একটি অবস্বরণীয় জয় এনে দিয়েছিলেন।
আজ মঞ্চটা চট্টগ্রাম ছিল না, ছিল জোহানেসবার্গে। আর এখানেও একইরকম দায়িত্ব পালন করতে চেয়েছেন এই দুজন। দুজন তাঁদের সর্বোচ্চ চেষ্টাটাই করেছেন । ৪৬ তম ওভারে রাবাদাকে চার্জ করতে গিয়ে আউট হয়ে ফিরেছেন আফিফ। এর আগে আফিফের ব্যাট থেকে এসেছে ৭২ রানের ইনিংস।
১০৭ বলে ৭২ রানের এই ইনিংসটা দলের বিপর্যয় কাটিয়ে তুলেছে, মান বাচিয়েছে। আর আফিফকে যোগ্য সঙ্গটা দিয়ে গিয়েছেন মিরাজ। মিরাজ ৪৯ বলে খেলেছেন ৩৮ রানের ইনিংস। দুজনে মিলে ১১২ বলে গড়েছেন ৮৬ রানের ইনিংস। এই জুটিতে ভর করেই একটা সম্মানজনক স্কোরে পৌছাতে পেরেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের হয়ে নিয়মিতই ভালো ইনিংস খেলছেন আফিফ হোসেন। আসলে বলা ভালো বড় ইনিংস খেলছেন। প্রমাণ করছেন বাইশ গজে সময় দিলে তিনি কতটা ভয়ংকর ব্যাটসম্যান হয়ে উঠেন। তবে বাংলাদেশ দল তাঁকে খেলাচ্ছে সাত নাম্বারে একজন স্লগার হিসেবে। এতে ব্যাটসম্যান আফিফকে কতটুকু ব্যবহার করা যাচ্ছে সেই প্রশ্ন থেকেই যায়।