তাঁর সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেটে আসার গল্পটা যেন রূপকথার গল্পকেও হার মানায়। কাশ্মীরের এক মাঠ থেকে শুরু হওয়া পথটা হঠাতই কখন যেন আইপিএলের মত বিশাল এক মঞ্চে এসে ঠেকলো। যেন এত আলো, এত উৎসব, এই আনন্দ আয়োজন সবই তাঁকে কেন্দ্র করে। তবে ভারতের নতুন পেস সেনসেশন উমরান মালিকের জন্য যে অপেক্ষা করছে আরো বড় মঞ্চ। এই গতিতারকা প্রস্তুত তো?
এই বছর জুনে ভারত দক্ষিণ আফ্রিকা ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মোট ৭ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে। আর সেখানে বেশ ভালো ভাবেই নির্বাচকদের নজরে থাকবেন উমরান মালিক। এর আগে গতবছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ভারতের নেট বোলার হিসেবে ছিলেন গতির ঝড় তোলা এই পেসার। ফলে এবছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভারতেরও দারুণ এক পেস আক্রমণ প্রয়োজন।
ফলে আগামী কয়েকমাস সব ঠিক থাকলে ও উমরান মালিক ফিট থাকলে তাঁর পেসকে কাজে লাগাতে চায় ভারত। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ১৫০ কিমি গতিতে বল করা উমরান মালিক হতে পারেন ভারতের ট্রাম্পকার্ড। এছাড়া ভারতের নিয়মিত পেসারদের বিশ্রাম দেয়ার জন্যও উমরানের মত গতি তারকাদের উঠে আসা প্রয়োজন বলে মনে করছে ভারত।
ওদিকে এবারে আইপিএলে উমরান মালিক খেলছেন সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে। এখন পর্যন্ত হায়দ্রাবাদের হয়ে ৫ ম্যাচ খেলে তুলে নিয়েছেন ৯ উইকেট। পাঞ্জাবের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে মাত্র ২৮ রান খরচ করেই তুলে নিলেন ৪ উইকেট। ওদিকে হায়দ্রাবাদের পেস বোলিং কোচ ডেইল স্টেন উমরান মালিককে মনে করছেন একজন জিনিয়াস।
ডেল স্টেইন এই পেস সেনসেশনকে নিয়ে বলেন,’ আমার কাজ হচ্ছে উরমান মালিকের পেসটা ঠিক রাখা। যেন সে ব্যাটসম্যানদের ভোগাতে পারে। এছাড়া আমি তাঁকে ভবিষ্যতের জন্যও তৈরি করতে চাই। যেন সে ব্যাটসম্যানদের পরিকল্পনা বুঝে বল করতে পারে।‘
তিনি এই পেসারকে নিয়ে আরো বলেন,’ এটা দেখাটা খুব উপভোগ্য যে কী ভীষণ জিনিয়াস ছেলেটা। আমি চাইনা আমি যেমন ছিলাম তাঁকেও সেরকম বানাতে। আমি চাই যে তাঁর নিজের ভিতরের ব্যাপারটা বের করে আনতে।‘
সবমিলিয়ে এই মুহূর্তে ভারতের সবচেয়ে বেশি গতিতে বল করা পেসারদের একজন উরমান মালিক। ফলে ভারতের প্রধান নির্বাচক চেতন শর্মা এবং তাঁর কমিটি নিশ্চয়ই এই পেসারের উপর উপর আলাদা নজর রাখবে। কেননা আইপিএলেও নিয়মিত ১৫২ কিমি গতিতে বোলিং করে যাচ্ছেন এই পেসার।
এছাড়া কমেন্ট্রিবক্স থেকে এই পেসারকে নিয়ে সুনীল গাভাস্কার বলেন,’ অনেক পেসারই হয়তো ১৫০ এর আশেপাশে বল করার চেষ্টা করে। তবে উরমান মালিকের সবচেয়ে ভালো ব্যাপার হচ্ছে সে খুব বেশি ওয়াইড ডেলিভারি দেয় না। সে যদি লেগ সাইডের ওয়াইড ডেলিভারিগুলোকে আরো নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে তাহলে উমরান দারুণ সম্পদ হতে পারে।‘
গাভাস্কার আরো বলেন,’ সে যদি স্ট্যাম্প টু স্ট্যাম্প বল করে। সে মোটামুটি আনপ্লেয়েবল একজন বোলার হয়ে উঠবে। আমি বিশ্বাস করি সে খুব দ্রুতই ভারতের হয়ে খেলবে।‘
অথচ এই কয়েক বছর আগেও জম্মু-কাশ্মীরের মাঠে খেলে বেড়াতেন এই গতি তারকা। সেখান থেকেই নিয়ে আসা হয়েছিল তাঁকে ক্রিকেট কাঠামোতে। এখন পর্যন্ত মাত্র ৩ টি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেছেন। অথচ আইপিএলে গতির ঝড় তুলেই এবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছেন এই পেসার।