টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের সময়টা খুব বেশি ভালো যাচ্ছিল না। বিশেষ করে ঘরের মাঠেও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ হারের পর থেকে সমালোচনাটা আরো জেঁকে বসেছিল। ক্রিকেট পাড়ায় জোর গুঞ্জন ছিল দ্রুতই সাদা পোশাকের ক্রিকেটে নতুন অধিনায়কের নাম ঘোষণা করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
এরই মাঝে টেস্ট অধিনায়কের দায়িত্ব থেকেই নিজের সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন মুমিনুল হক সৌরভ। এর অর্থ হল, টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে সাকিব আল হাসানের ফেরাটা এখন অনেকটাই নিশ্চিত।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে টেস্ট জয়ই অধিনায়ক হিসেবে তাঁর অন্যতম বড় সাফল্য। তাঁর সময়েই টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ একটি শক্ত পেস বোলিং ইউনিট গড়ে তুলেছিল। তবে এটা ঠিক যে দল হিসেবে ধারাবাহিক ভাবে ভালো করছিল না বাংলাদেশ।
এছাড়া অধিনায়ক হিসেবেও বেশ সমালোচনা ছিল মুমিনুলকে নিয়ে। মাঠে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলার কথা থাকলেও তাঁর অনেক সিদ্ধান্তই হয়েছে প্রশ্নবিদ্ধ। এছাড়া ম্যাচের নানা পরিকল্পনা, রিভিউ নেয়া না নেয়া এবং দলে তাঁর কর্তিত্ব নিয়েও আছে প্রশ্ন। ফলে সবমিলিয়ে অধিনায়ক হিসেবে আস্থাটা অর্জন করতে পারছিলেন না মুমিনুল।
তবে সবচেয়ে বড় সমস্যাটা হয়েছে ব্যাট হাতে তাঁর অফ ফর্ম। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে সেই ইনিংসের পর থেকেই আর হাসছে না তাঁর ব্যাট। এমনকি গত গত দশ ইনিংসে মুমিনুল দুই অংকের স্কোর করতে পেরেছেন মাত্র দুইবার। এই সময়ে তাঁর ব্যাট থেকে আসেনি একটিও হাফ সেঞ্চুরি। এমনকি শেষ সাত ইনিংসে দুই অংকের স্কোর ছুঁতে পারেননি একবারো। এমন পারফর্মেন্সের পর যেকোন ব্যাটসম্যানই দলে জায়গা হারাতে পারেন। তবে টেস্ট অধিনায়কই একাদশে না থাকলে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিবে কে?
এমন প্রশ্ন যখন দলের অধিনায়ককে নিয়ে উঠে তখন একটা সিদ্ধান্ত নিতেই হয়। আর সেই সিদ্ধান্তটা আসার গুঞ্জন পাওয়া যাচ্ছিল আজ বোর্ড সভাপতি নাজমুল হোসেন পাপনের বাসায় বৈঠকের পর। সেজন্যই বিকেল থেকে বোর্ড সভাপতির বাসায় ভিড় করেছিল সংবাদকর্মীরা।
আর সেখানে বৈঠকে প্রথমে হাজির হয়েছিলেন বর্তমান টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক। বৈঠক শেষে সংবাদমাধ্যমকে নিজের অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর কথাই জানিয়েছেন মুমিনুল। তিনি বলেন,‘দলের অধিনায়ক রান পেলে আসলে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়াটা কঠিন হয়ে যায়। আর একটা বাড়তি চাপ তো আসেই। তাই আমি যেন ব্যাটিংটায় বেশি মনো্যোগ দিতে পারি সেজন্য অধিনায়কত্বে দায়িত্ব থেকে সরে দাড়াতে চাইছি। সেকথাই আমি পাপন ভাইকে জানিয়ে এসেছি। এখন কবে থেকে সেটা হবে বা আমার পরে কে আসবে সেটা বোর্ডই আপনাদের জানাবে।’
মুমিনুল অধিনায়ক হিসেবে আর থাকছেন না সেটা এখন নিশ্চিত। তবে এখন বাংলাদেশের নতুন টেস্ট অধিনায়ক কে হবেন সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। সবচেয়ে বেশি আলোচিত ও যোগ্য নাম সাকিব আল হাসান। তবে তিনি দায়িত্ব নিবেন কি নিবেন না সেটা নিয়েও প্রশ্ন আছে। আজ সাকিবের সাথেও বোর্ড সভাপতির বৈঠকে বসার কথা। তাহলে হয়তো রাতের মধ্যেই জানা যাবে বাংলাদেশের নতুন টেস্ট অধিনায়কের নাম।