হঠাৎ ছন্দপতনের সুর

২০১৭ সাল থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে বিচরণ করছেন ঋষাভ পান্ত। ভারতীয় দলে উইকেটরক্ষক-ব্যাটার হিসেবে বেশ শক্তপোক্ত অবস্থান তাঁর। ২০১৯ সালে আইসিসি কর্তৃপক্ষ ঋষাভ পান্তকে আইসিসি বর্ষসেরা উদীয়মান খেলোয়াড়ের পুরস্কারের সম্মাননা দিয়েছিল। নিয়মিতই আপন ছন্দে নিজেকে উজাড় করে খেলে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু সম্প্রতি যেন কিছুটা ছন্দপতনের সুর দেখা গেল তাঁর ব্যাটে। যেন কোথায় হারিয়ে ফেলেছেন নিজেকে।

সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক সুনীল গাভাস্কার মনে করেন যে, ঋষাভ পান্তের ব্যাটিং নিয়ে ভাবার এটাই সঠিক সময়। কারণ চলমান দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজে পান্ত তার ব্যাটিংয়ে ভালো করতে পারেননি। শেষ চারটি ম্যাচে তিনি যথাক্রমে ২৯, ৫, ৬, এবং ১৭ রান করেছেন।

স্টার স্পোর্টসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সুনীল গাভাস্কার বলেন, ‘লোকেরা আশা করে যে, ও এসেই বাউন্ডারি এবং ছক্কার জন্য বল পেটাতে শুরু করবে। গত ৩-৪ বছর ধরে সে তাই করেছে। যার কারণে মানুষের প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, তাই তারা হতাশ হচ্ছে। কিন্তু আমি মনে করি তার যা করা দরকার, তা হল আত্মবিশ্বাস।’

এবার অধিনায়কত্বের দায়িত্বও যোগ হয়েছে ঋষাভ পান্তের কাঁধে। সুনীল গাভাস্কার বলেন, ‘অধিনায়কত্বের সময় প্রায়শই দেখা যায় কখনো আপনি নিজের খেলা নিয়ে ভাবছেন না। আপনাকে অন্য বোলার বা ব্যাটারের খেলার কথা ভাবতে হচ্ছে। তাই আপনি নিজের ব্যাটিংয়ের টেকনিক্যাল সমস্যাগুলো ধরতে পারছেন না। এবং এটাই তাঁকে (পান্ত) বসে ভাবতে হবে। সে দু’দিন সময় পেয়েছে। প্রথমত ভারত জিতেছে বলে সে কিছুটা নিশ্চিন্ত থাকতে পারবে। এটা তাঁর চাপ কিছুটা কমাবে। এখন কিছুটা স্বস্তিতে থেকে তাঁকে তাঁর নিজের ব্যাটিং নিয়ে ভাবতে হবে।’

এই সিরিজে তৃতীয়বারের মতো পান্ত যখন আউট হয়ে গেলেন ওয়াইড ডেলিভারি করার চেষ্টার সময়। তখন স্টার স্পোর্টসে তার ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় গাভাস্কার এভাবে বলেছিলেন, ‘সে অতীত থেকে কিছু শেখেনি। তার আগের তিনটি ডিসমিসাল থেকে সে শিক্ষা নিতে পারেনি। তারা ওয়াইড দিচ্ছিল এবং সে (পান্ত) এটি খেলতে যাচ্ছিল। এখানে সে পেশির জোর দেখাতে পারেনা। অফ-স্টাম্পের বাইরে এতো উঁচুতে খেলতে চেষ্টা করা তাঁকে বন্ধ করতে হবে।’

চতুর্থ ম্যাচে ভারত দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৮২ রানে বিধ্বস্ত করার পর, ঋষাভ পান্তও স্বীকার করেছেন যে তার ব্যাটিংয়ে ‘কিছু নির্দিষ্ট দিক’ রয়েছে যা তাকে উন্নতি করতে হবে।

শুক্রবার রাতে ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পান্ত বলেছেন, ‘একজন ব্যাটার হিসাবে আমি কিছু ক্ষেত্রে উন্নতি করতে পারি। যদিও আমি এ নিয়ে খুব চিন্তিত না। কিন্তু ইতিবাচক মানসিকতা রেখে উন্নতির দিকে লক্ষ্য রাখব। দেখা যাক ব্যাঙ্গালোরে কি হয়। আমাদের ১০০ ভাগ উজাড় করে দেওয়ার অপেক্ষায় আছি।’

সুনীল গাভাস্কারের উপদেশ মাথায় রেখে আবার কবে নিজেকে খুঁজে পাবেন ঋষাভ পান্ত, এবার সেদিকেই থাকবে ক্রিকেটপ্রেমীদের নজর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link