এক ধসেই ম্যাচ শেষ

বাংলাদেশ মূলত অ্যান্টিগা টেস্টটা হেরেছে ম্যাচের প্রথমদিনেই। আরো স্পষ্ট করে বললে ম্যাচের প্রথম সেশনে, টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের কারণে। যেই সমস্যায় বাংলাদেশ ভুগছে অনেকদিন ধরেই। তবুও এরপর বাংলাদেশের বোলাররা বিশেষ করে পেসাররা তাঁদের সক্ষমতা দেখিয়েছেন। ম্যাচে প্রাণ ফিরিয়ে আনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। শেষপর্যন্ত এক ফালি আক্ষেপ নিয়েই প্রথম টেস্টে হেরেছে বাংলাদেশ।

খুব বেশিদিন আগের কথা নয়। যখন বাংলাদেশ টেস্ট ম্যাচ জিততে পারতো না বোলারদের কারণে। বিশেষ করে পেস বোলারদের কারণে। বলা হতো বিদেশের মাটিতে ২০ উইকেট নেয়ার মত পেসার বাংলাদেশের নেই। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দেশের পেসাররা এই ধারণা ভুল প্রমাণ করেছেন।

কিছুদিন আগেই অধিনায়কত্বের দায়িত্ব ছাড়া মুমিনুল হকের সময়েই মূলত বাংলাদেশের পেস আক্রমণে একটা বিপ্লব এসেছে। বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে একটা পেস সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। কেননা সাবেক এই অধিনায়ক তাঁর পেসারদের উপর দিনের পর দিন ভরসা করে গিয়েছেন। আর এখন সেই ভরসার প্রতিদান দিতে শুরু করেছেন এবাদত হোসেন, খালেদ আহমেদরা।

যেমন এই টেস্টে নামার আগেও বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চিন্তার জায়গা ছিল টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। কেননা তিন ও চার নাম্বারে খেলা নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক অনেকদিন ধরেই রানের দেখা পাচ্ছেন না। ফলে বাংলাদেশ ম্যাচের শুরুতেই দ্রুত উইকেট হারিয়ে ফেলছিল। আর অ্যান্টিগা টেস্টেও এই ভয়ই সত্যিই হয়েছে। দুই ইনিংসেই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হয়েছেন। এমনকি প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ছয় জন ব্যাটসম্যানই ফিরেছিলেন ডাক মেরে।

দ্বিতীয় ইনিংসেও শান্ত, মুমিনুলরা বড় ইনিংস খেলতে পারেনি। তবুও সাকিব আল হাসান ও নুরুল হাসান সোহানের জুটিতে লিড নিতে পেরেছিল বাংলাদেশ। যদিও ৮৩ রানের সেই লিড ম্যাচ জেতার জন্য যথেষ্ট ছিল না।

এমনকি প্রথম ইনিংসে মাত্র ১০৩ রানে অল আউট হয়ে যাওয়ার পরেই ম্যাচে কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবার কথা ছিল না। কিন্তু সেই ধারণা ভুল করে ম্যাচে লড়াই করে গিয়েছেন বোলাররা। প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বড় লিড নিতে দেননি। এবাদত, খালেদদের সাথে মিরাজও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানদের চেপে ধরেছিলেন।

ওদিকে চতুর্থ ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে মাত্র ৮৪ রানের টার্গেট দেয় বাংলাদেশের ব্যাটসম্যান। এই অল্প পুঁজি নিয়েও গতকাল রাতে খালেদ আহমেদ আশা জাগিয়েছিলেন। নিজের প্রথম দুই ওভারেই তুলে নিয়েছিলেন তিন উইকেট। ৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ক্যারিবীয়রা খানিকটা বিপাকেই পড়ে গিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ব্যাকউড ও ক্যাম্পবেল ম্যাচটা শেষ করে এসেছেন। ফলে প্রথম টেস্টে ৭ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ।

কিন্তু এই টেস্ট বাংলাদেশকে প্রমাণ করে দিয়ে গেল বিদেশের মাটিতে এবাদত, খালেদরা কী করতে পারেন। এছাড়া আরেকবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে গেল টপ অর্ডারে বাংলাদেশের চরম দুর্বলতা। সাথে একটু আক্ষেপও রয়ে গেল। প্রথম ইনিংসে ব্যাটসম্যানরা আরেকটু দায়িত্ব নিলে হয়তো ম্যাচটা জিতিয়ে দিতে পারতেন খালেদ, এবাদতরা।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link