মিরপুরের ইনডোরে কিছুদিন আগের ছবি। ইনজুরির কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজ যেতে পারেননি। তাই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সাথে একাকি অনুশীলন করে যাচ্ছিলেন। ইনজুরি কাটিয়ে বোলিং করাও শুরু করেছেন তখন। তাই মনের মধ্যেও একটা সুপ্ত আশা ছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট খেলার। শরিফুলের মনে সেই আশা অবশেষে মিটতে যাচ্ছে।
ওদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ হবার আগে বাংলাদেশের অন্যতম দুশ্চিন্তা ছিল পেস আক্রমণ। নতুন করে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পাওয়া সাকিব আল হাসানের জন্য পেস আক্রমণ সাজানো ছিল বেশ কঠিনই। কেননা ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের আগেই ইনজুরিতে পড়ে যান দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম।
তাহলে কী ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেস স্বর্গের পুরো ব্যবহার করতে পারবে না বাংলাদেশ? কেননা এই মুহূর্তে বাংলাদেশের পেস আক্রমণের সবচেয়ে বড় পারফর্মার তাসকিন আহমেদ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে তাঁকে না পাওয়াটা তাই বাংলাদেশের জন্য বড় ধাক্কাই ছিল।
এছাড়া গত একবছর ধরে শরিফুল ইসলামও বাংলাদেশের পেস আক্রমণের অন্যতম ভরসা হয়ে উঠেছেন। নিখুঁত লাইন-লেন্থ, বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং আর আগ্রাসন দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ইতোমধ্যেই নিজের একটা জায়গা তৈরি করে ফেলেছেন। মোটামুটি তিন ফরম্যাটেই এখন তিনি বাংলাদেশের পরিকল্পনায় থাকেন। ফলে মাত্র বছর খানেকের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার হলেও বেশ কিছু ম্যাচ খেলে ফেলেছেন এই পেসার। এছাড়া তাসকিনের সাথে তাঁর বোলিং জুটিটাও বেশ জমে উঠেছে।
ফলে ক্যারিবীয় কন্ডিশনে এই দুই পেসারের বাজিমাত করারই কথা ছিল। কিন্তু ইনজুরির কারণে সেটা আর হচ্ছিল না সাদা পোশাকের ক্রিকেটে। বাংলাদেশ দল নিশ্চয়ই টেস্টে শরিফুলের মত একজন পেসারকে মিস করছিল।
ওদিকে তাসকিন, শরিফুলদের ইনজুরির পর এবাদত হোসেন, খালেদ আহমেদদের নিয়ে বোলিং আক্রমণ সাজিয়েছিল বাংলাদেশ। এছাড়া লম্বা সময় পর মুস্তাফিজুর রহমানকে টেস্ট ক্রিকেটে নিয়ে এসেছিল বাংলাদেশ। যদিও মুস্তাফিজকে নিয়ে একটা শঙ্কা ছিল। কেননা এতদিন পর এসে তিনি লাল বলের ক্রিকেটে মানিয়ে নিতে পারবেন কিনা সেই প্রশ্নও ছিল।
মুস্তাফিজের বেলায় আসলে হয়েছেও তাই। অ্যান্টিগার উইকেটে খালেদ আহমেদ ও এবাদত হোসেন যেভাবে বোলিং করেছেন সেভাবে মানিয়ে নিতে পারেননি মুস্তাফিজ। প্রথম টেস্টে বাকি দুই পেসার যেভাবে কার্যকর হয়েছেন ততটা হতে পারেননি মুস্তাফিজুর রহমান।
ফলে দ্বিতীয় টেস্টের আগে বাংলাদেশের শরিফুলের মত একজন পেসারকেই প্রয়োজন ছিল। বাংলাদেশের প্রয়োজন মেটাতেই তাই কেবলই ইনজুরি থেকে সেরে উঠা শরিফুল ইসলামকে দলে ডেকে পাঠিয়েছে। আজ রাতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন শরিফুল। খুব সম্ভবত দ্বিতীয় টেস্টে তিনি বাংলাদেশের হয়ে মাঠেও নামবেন।
বাংলাদেশের যেমন প্রয়োজন ছিল শরিফুলকে। তেমনি শরিফুলও আশায় বুক বেধেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজে টেস্ট খেলার। বাংলাদেশের প্রয়োজন আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের আশা দুটোই তাই মিটতে যাচ্ছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ যাবার আগে শরিফুল বলেন, ‘আমার জন্য খুবই রোমাঞ্চকর। খুব ইচ্ছে ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজে টেস্ট খেলার। যাচ্ছি এখন। দেখা যাক যাওয়ার পরে কী হয়। এখন মনে হচ্ছে ভালো অবস্থানে আছি।’
তিনি আরো যোগ করেন, ‘আমি যা দেখেছি, ওইখানে বল জায়গায় করলেই সুবিধাটা পাওয়া যাচ্ছে। ওদের ক্ষেত্রেও, আমাদের ক্ষেত্রেও। চেষ্টা করবো লাইন ও লেংন্থ ঠিক রেখে বোলিং করার।’