ইনিংসের প্রথম ওভারেই অভিষিক্ত নাসুম আহমেদের হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তবে নিজের দ্বিতীয় ওভারেই বিতর্কের জন্ম দেন এই স্পিনার। ওভারের শেষ বলটিতে শামার ব্রুকসকে পরাজিত করেন নাসুম। এই ব্যাটসম্যানের ব্যাটের ঠিক পাশ দিয়ে গিয়ে বলটি আঘাত করে প্যাডে। আম্পায়ার আঙুল তুলে আউটের ইশারাও দিলেন। তবে ব্রুকস রিভিউ নেয়ার পর বিতর্কিত সিদ্ধান্ত দিলেন থার্ড আম্পায়ার। ব্যাটে ও বলে গ্যাপ থাকার পরেও তিনি নট আউটের ঘোষণা দিলেন।
আর সেটা নিয়েই মাঠে প্রায় তুলকালাম কান্ড। প্রথমেই আম্পায়ারের কাছে দৌড়ে গিয়ে নালিশ জানালেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। এরপর পুরো বাংলাদেশ দলকেই আম্পায়ারের সাথে কথা বলতে দেখা যায়। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের শরীরি ভাষায় স্পষ্ট তাঁরা থার্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত একেবারেই মেনে নিতে পারছিলেন না। এই নিয়ে মিনিট খানেক খেলাও বন্ধ রাখতে হয়। তবে শেষ পর্যন্ত আবার বোলিং করা শুরু করে বাংলাদেশ দল।
ওদিকে ধারাভাষ্য কক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সব জায়গাতেই থার্ড আম্পায়ারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। মূল আম্পারায় আউট দেয়ার পরেও শতভাগ নিশ্চিত না হয়েই কী করে নট আউটের সিদ্ধান্ত দিলেন থার্ড আম্পায়ার সেই প্রশ্নও উঠছে। ওদিকে মূল আম্পায়ারের সিদ্ধান ঠিক থাকলে এটিই হতে পারতো ওয়ানডে ক্রিকেটে নাসুম আহমেদের প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেট।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসের তৃতীয় ওভারের শেষ বলের ঘটনাটা আরেকটু স্পষ্ট করে বর্ননা করা যাক। নাসুম আহমেদের বলটি ব্রুকসের প্যাডে আঘাত করলেও ইনসাইড এজ নিয়ে একটি দ্বিধা ছিল। সেজন্যই আম্পায়ার আউট দেয়ার সাথে সাথেই রিভিউ নেন শামার ব্রুকস। তখন স্পষ্ট দেখা যায় বল ব্যাট অতিক্রম করার আগে থেকেই আল্ট্রা এজে স্পাইক দেখা যাচ্ছিল। কেননা ব্রুকসের ব্যাটে তাঁর প্যাডে আঘাত করছিল।
আর সেই স্পাইকটা বল ব্যাট অতিক্রম করার সময়ও দেখা যায়। তবে সেই স্পাইকটা ব্যাট আর প্যাডের সংঘর্ষের কারণে দেখা যাচ্ছিল বলেই ধারণা করা হচ্ছিল। কেননা ব্যাট আর বলের মধ্যে খানিকটা গ্যাপ খালি চোখেই দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু সেটা ভালো করে দেখারই প্রয়োজন বোধ করেননি থার্ড আম্পায়ার। তিনি শুধু স্পাইক দেখেই নট আউট দেয়ার সিদ্ধান্ত জানান। আর স্বাভাবিকভাবেই সেটি মানতে পারেননি তামিম ইকবাল। দুই অন-ফিল্ড আম্পায়ারের সঙ্গেই বেশ উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করতে দেখা গেছে বাংলাদেশ অধিনায়ককে।
ওদিকে নিয়ম আছে মূল আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে ভুল প্রমাণিত করতে হলে থার্ড আম্পায়ারকে শতভাগ নিশ্চিত হতে হবে। কিন্তু ব্যাট আর প্যাডের কারণে হওয়া স্পাইক দেখেই আউটের সিদ্ধান্ত দিয়ে দেন টিভি আম্পায়ার নাইজেল ডুগিড। আর সেজন্যই বিতর্কটা আরো বেশি। ফলে বাংলাদেশ একটা উইকেট বঞ্চিত হলো কিনা সেই প্রশ্ন করাই যায়। ওদিকে ডুগিডের কারণে বেচে যাওয়া শামার ব্রুকসকে পরে কট বিহাইন্ড করে ফেরান পেসার শরিফুল ইসলাম। ৬৬ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলে মাঠ ছাড়েন এই ব্যাটার।
ওদিকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের নিয়মিত পারফর্মার নাসুম আহমেদ। মূলত ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজেই উত্থান এই স্পিনারের। এরপর থেকে টি-টোয়েন্টি দলে বাংলাদেশের নিয়মিত মুখ তিনি। তবে ওয়ানডে ক্রিকেটে নাসুমের অভিষেক হওয়াটা কঠিনই ছিল। কেননা সাকিব-মিরাজের বোলিং জুটি বেশ জমে উঠেছে ওয়ানডে ফরম্যাটে। তবে এবার সাকিব না থাকায় সুযোগটা মিললো নাসুমের এবং সেটাকে পুরোপুরি কাজে লাগাচ্ছেন নাসুম আহমেদ। এখনো উইকেট না পেলেও তাঁর বলে রানই নিতে পারছেন না ক্যারিবীয় ব্যাটাররা।