সোহানের অস্ত্রোপচার: অনিশ্চয়তা আর দোটানা

নুরুল হাসান সোহানের কপালটা খারাপ বলতেই হয়। বাজে সময় কাটিয়ে সুদিন দেখতে পারছিলেন তিনি। অন্ধকার শেষে যেমন আলো আসে। সোহান ব্যাটে রান পাওয়া শুরু করেছিলেন। তাঁকে নিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যে ভরসা – তাঁর প্রতিদান দিতে শুরু করেছিলেন।

এমন সময় অধিনায়কত্বও পেলেন টি-টোয়েন্টি দলের। প্রথম ম্যাচটায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দারুণ ব্যাট করেও দলের জয় আনতে পারেননি। পরের ম্যাচটায় জিতলেন ঠিকই কিন্তু সাথে বাঁধিয়ে বসলেন বেরসিক এক ইনজুরি। এর চেয়ে বাজে কপাল আর কিই বা হতে পারে।

এই মুহূর্তে জিম্বাবুয়েতে সোহানের থাকাটা যে খুবই জরুরী ছিল। কিন্তু, ভাগ্যের লিখন কি আর পাল্টানো যায়! আর ইনজুরির মত এই ব্যাপারগুলো তো ক্রিকেটারদের জীবনের নিত্য সঙ্গী।

সোহান তাই বাধ্য হয়েই ফিরে এসেছেন দেশে। সময়ক্ষেপণ না করে শুরু করে দিয়েছেন পুনর্বাসন প্রক্রিয়া। আর সেটা কেবল দেশে স্থায়ী নয়। সোহানকে পাড়ি জমাতে হবে সিঙ্গাপুরেই। জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চিকিৎসক ডাক্তার দেবাশীষ চৌধুরী।

যদিও, সোহানের ভাগ্যে কি আছে, সেটা না জানেন বিসিবির প্রধান চিকিৎসক, না জানেন তিনি নিজে। জিম্বাবুয়ে সিরিজের মাঝপথে তাই যখন তিনি ফিরে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিসিবির কার্যালয়ে আসলেন, তখন তাঁকে বেশ বিমর্ষই দেখাল।

ইনজুরির সাথে এই বিমর্ষতার পেছনে আরো বড় একটা কারণ হল, সোহানকে অস্ত্রোপচারের মধ্য দিয়েও যেতে হতে পারে। যদিও বিষয়টা এখনও নিশ্চিত নয়। তাই  টি-টোয়েন্টির এই ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের সাথে দেবাশীষ চোধুরীও যাওয়ার চেষ্টা করবেন।

 

অস্ত্রোপচার বিষয়ে তিনি আছেন দোটানায়। তিনি জানিয়েছেন, একেক চিকিৎসক একেক কথা বলছেন। ফলে এখনও নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাচ্ছে না। যদিও, যতদূর বোঝা গেল অস্ত্রোপচার ধরে নিয়েই মানসিক ভাবে প্রস্তুত আছেন সোহান, প্রস্তুত আছেন বিসিবিও।

দেবাশীষ বলেন, ‘আমরা ইংল্যান্ডের চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেছি। আরও কয়েকজনের সঙ্গে আলোচনা করেছি। কেউ অস্ত্রোপচারের পক্ষে আবার কেউ না। তাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে সিঙ্গাপুর যাচ্ছি।’

ভাগ্যকে সোহান এখন দুষতেই পারেন। কারণ, থাকার কথা ছিল জিম্বাবুয়েতে। টি-টোয়েন্টির দু:খ ভুলে মন দেওয়ার কথা ছিল ওয়ানডে ক্রিকেটের দিকে। কিংবা এর পরও তো তিনি থাকবেন দলের সাথেই। কিন্তু, বিধাতা ভেবে রেখেছিলেন অন্যরকম কিছু। ভাগ্যোর ফেরে তাঁকে এখন উঠতে হবে সিঙ্গাপুরের বিমানে। হাসপাতাল, ডাক্তার, পুনর্বাসনের জীবনে আবদ্ধ থাকতে হবে কয়টা দিন।

শঙ্কা আছে, এই সময়ে আবার না যেন পারফরম্যান্সের সূতোটা ছিড়ে না যায়। কারণ, সোহানের ক্রিকেটীয় দক্ষতার চেয়ে তিনি অনেক বেশি মোমেন্টাম কিংবা ফর্ম নির্ভর ক্রিকেটার। ফর্মটা একদম মোক্ষম থাকলে, তিনি হয়তো যে কোনো কিছুই করে ফেলতে পারেন। কিন্তু, ইনজুরি সেই ধারাবাহিকতায় একটা বিরাম চিহ্ন বসিয়েই দিল।

ইনজুরির এই বাঁধায় হঠাৎ নেমে আসা বিশ্রামের বোঝা যেন খুব লম্বা না হয় – সেটাই এখন প্রত্যাশা। কারণ, টি-টোয়েন্টি দলের এখন যা অবস্থা তাতে সোহানের মত সাহসী ক্রিকেটারের খুবই দরকার বাংলাদেশের ক্রিকেটে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link