আবারও দস্তানা হাতে ফিরছেন মুশফিক

বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক পরিবর্তন হয়েছে। এ খবর নতুন নয়। সাকিব আল হাসান পেয়েছে দায়িত্ব। তবে দায়িত্ব পেয়েই যেন ছড়ি ঘোরাতে শুরু করেছেন সাকিব। এবার তাই তাঁর সিদ্ধান্ত উইকেটের পেছনে দস্তানা হাতে দাঁড়াবেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। আর সেই দস্তানা জোড়া কখনোই খুলে ফেলতে না চাওয়া মুশফিক নিশ্চয়ই তাতে বেজায় খুশি।

দলের নিয়মিত উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহান এবং লিটন দাসের ইঞ্জুরিতে দলে কিপার এ ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তাতে নির্বাচকদের কপালে পড়েছিলো চিন্তার ভাজ। উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান মুশফিককে প্রাথমিকভাবে উইকেট কিপিংয়ের জন্য বলা হলেও প্রথমাবস্থায় রাজী ছিলেন নাহ তিনি। শেষ পর্যন্ত এনামুল হক বিজয়ের কাঁধেই উইকেট কিপিংয়ের দায়িত্ব দিয়ে দল ঘোষনা করেছিলো নির্বাচকমণ্ডলী।

একদিনের ক্রিকেটে দারুণ ধারাবাহিক হলেও শর্টার ফরম্যাটে নিজেকে হারিয়ে খুঁজছিলেন এনামুল হক বিজয়। সর্বশেষ বিপিএল এ দারুণ কিছু ইনিংস খেললেও দলে সুযোগ পাওয়ার পর উইন্ডিজ এবং জিম্বাবুয়ে সিরিজে একদমই ভালো করতে পারেননি বিজয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছিলো তাকে টি-টোয়েন্টি থেকে বাদ দেওয়ার শোরগোল।

উইন্ডিজ সিরিজে ৩ ম্যাচে সুযোগ পেয়ে সংগ্রহ করেছিলেন মাত্র ২৯ রান এবং জিম্বাবুয়ে সিরিজে ৩ ম্যাচে সুযোগ পেয়ে সংগ্রহ করেছিলন ৫৬ রান। দলে আর কোন স্পেশালিষ্ট উইকেট কিপার না থাকায় এবং লিটন দাসের ইঞ্জুরির কারণে এশিয়া কাপের দলে সুযোগ দেওয়া হয়েছিলো তাকে।

দলে মূলত উইকেট কিপারের সংকট তৈরি হয়েছিলো লিটন দাস, নুরুল হাসান সোহানের ইঞ্জুরি এবং মুশফিকের কিপিংয়ে অনিচ্ছার কারণে। মুশফিকের কিপিংয়ে অনিচ্ছার কারণ হিসেবে হেড কোচ রাসেল ডোমিঙ্গোর অপমানজনক একটি উক্তিকে মনে করছেন অনেকে।

ঘটনার শুরু হয়েছিলো গতবছরে ঘরের মাঠে পাঁচ ম্যাচের নিউজিল্যান্ড সিরিজকে কেন্দ্র করে। আগের সিরিজে অষ্টেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে পারেননি জৈব সুরক্ষা বলয় ভাঙ্গার কারণে। তাই নিউজিল্যান্ড সিরিজে দলে ফেরত আসায় ম্যানেজমেন্টের মাঝে উইকেটকিপিং কে করবে তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দের সৃষ্টি হয়। নিয়মিত উইকেটকিপার মুশফিক নাকি আগের সিরিজে কিপিং করা সোহান?

এমন ধরণের কোনো এক প্রশ্নের উত্তরে রাসেল ডোমিঙ্গো বলেছিলেন ‘প্রথম দুই ম্যাচে সোহান কিপিং করবে। আসন্ন সিরিজে আমরা উইকেটকিপিংয়ের দায়িত্ব ভাগাভাগি করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছি। দুজনকেই দুটি করে ম্যাচে দেখা হবে। তারপর পঞ্চম ম্যাচের সিদ্ধান্ত নেবো।’

যা সিনিয়র ক্যাম্পেইনার মুশফিকের জন্য ছিলো অপমানজনক। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আর উইকেট কিপিং করবেন না। সেই সূত্রে এশিয়া কাপে উইকেট কিপিংয়ের জন্য বলা হলেও প্রাথমিক অবস্থায় রাজি হননি তিনি।
শেষ পর্যন্ত ক্যাপ্টেন সাকিব আল হাসানের অনুরোধে কিপিংয়ে রাজী হয়েছেন অভিজ্ঞ এই উইকেটকিপার এবং দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান।

এশিয়া কাপের দল ঘোষণার আগে ক্যাপ্টেন সাকিব আল হাসান দুই সিনিয়র মুশফিক এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে দলে চেয়েছিলেন। তিনি হয়ত তাঁর দীর্ঘদিনে সতীর্থ ও পরিক্ষিত ক্রিকেটারদের উপরই ভরসা করতে চাইছেন। তিনি অন্তত চাইছেন দলের একটা ভারসাম্যতা থাকুক। একটা সেতুবন্দন হোক। তবে সাকিবের এসব সিদ্ধান্ত ঠিক কতটা ফলপ্রসু হবে তা হয়ত সময়ই বলে দেবে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link