সেরা অলরাউন্ডারের পাকিস্তানি ধারা

একটা তকমা পাকিস্তান ক্রিকেটকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে রাখে। পেস বোলার তৈরির কারখানা পাকিস্তান। ক্রিকেট ইতিহাসের শুরু থেকেই এই তকমা নিয়েই চলছে পাকিস্তান। সবাই হয়ত ভাবতে পারে এই পেসারদের উপর ভর করেই পাকিস্তান লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তবে না, সবুজ সে জার্সি গায়ে নানন্দিক সব ব্যাটাররাও বিকশিত করেছে পাকিস্তানের ক্রিকেট। সেই সাথে অলরাউন্ডারদেরও আনাগোনা কম নয়।

বরং বিশ্বমানের অলরাউন্ডাররা সমৃদ্ধ করেছে পাকিস্তানের ক্রিকেটকে। তেমন কিছু অলরাউন্ডারদের নিয়েই থাকছে আজকের আয়োজন। পাকিস্তানের হয়ে তাঁরা ব্যাটে-বলে সমানতালে রেখেছিলেন অবদান।

  • শহীদ আফ্রিদি

পাকিস্তানের সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারদের কোন তালিকা হলে সেখানটায় সবার উপরেই থাকবেন শহীদ আফ্রিদি। ওয়ানডে ক্রিকেটে তিনি একটা সময় আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছেন।

কঠিন সব ম্যাচ তিনি প্রতিপক্ষের মুখ থেকে ফিরিয়ে এনেছেন। দুর্ধর্ষ ব্যাটিং পারফরমেন্সে তিনি মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন। পাশাপাশি তাঁর বোলিংয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হতেন দর্শক-সমর্থকরা। তাঁর ব্যাটিং দেখেই ভক্তরা ‘বুম বুম’ তকমা জুড়ে দিয়েছিলেন তাঁর নামের পাশে।

  • ইমরান খান

পাকিস্তানকে প্রথম ও এখন অবধি একমাত্র বিশ্বকাপ জেতানো অধিনায়ক ইমরান খান। তিনিও ছিলে দারুণ একজন অলরাউন্ডার। মূলত একজন পেস বোলিং অলরাউন্ডার ছিলেন তিনি। তবে ব্যাট হাতেও কোন অংশেই কম ছিলেন না ইমরান খান।

দলকে ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ জেতাতে রেখেছিলেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। পাকিস্তানের পেস বোলিংয়ের এই যে এত সুনাম, সে সুনামে একটা বড় অংশের দাবিদার তিনি। তিনি বিমোহিত করেছেন পুরো ক্রিকেট বিশ্বকে। গতির সাথে সুইংয়ের একটা মিশ্রণ দিয়ে প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের কুপোকাত করবার ফন্দিটা তাঁর খুব ভাল করেই জানা ছিল।

  • আবদুল রাজ্জাক

আবদুল রাজ্জাক এই তালিকায় জায়গা পাওয়া আরও একজন অলরাউন্ডার। ডান-হাতি এই অলরাউন্ডার যখনই সুযোগ পেয়েছেন তখনই দলের জন্য নিজের সর্বস্বটুকু দিয়ে চেষ্টা করে গিয়েছেন।

ব্যাট আর বলে তিনি প্রতিপক্ষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য যথেষ্ট ছিলেন। টেস্টে ১০০ এর বেশি উইকেট নেওয়া ছাড়াও ওয়ানডেতে ২৬৯টি উইকেট শিকার করেছিলেন রাজ্জাক। সেই সাথে ওয়ানডেতে প্রায় ৩০ গড়ে রান করেছেন তিনি।

  • ওয়াসিম রাজা

পাকিস্তানের বর্তমান বোর্ড প্রেসিডেন্ট ও ক্রিকেট কমেন্টেটর রমিজ রাজার ভাই হলেন ওয়াসিম রাজা। রমিজ রাজার মত ওয়াসিম রাজাও ক্রিকেট খেলেছেন। এমনকি রাজও করেছেন। ওয়াসিম রাজা ছিলেন একজন অলরাউন্ডার। লেগ-স্পিন বোলিংয়ের পাশাপাশি তিনি বা-হাতে ব্যাটটা চালাতেন বেশ।

দৃষ্টিনন্দন বলতে যা বোঝায় তাঁর পুরোটা জুড়েই ছিল তাঁর অবস্থান। তাঁর ব্যাটিং মুগ্ধতা ছড়াতো। অপলক চেয়ে থাকা যেত অনেকক্ষণ। তিনিও যতটুকু সময় পেয়েছেন দলের জন্য সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।

  • শোয়েব মালিক

প্রায় দুই দশকের বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলে যাওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। সে কাজটাই করে গিয়েছেন শোয়েব মালিক। একাধারে বোলিং-ব্যাটিং দুই ভাবেই তিনি দলের জন্য রেখে গিয়েছেন অবদান। সময়ের সাথে নিজেকে সবসময় মানিয়ে নেওয়ার একটা প্রচেষ্টা ছিল তাঁর।

তিনি তিন ফরম্যাটেই পাকিস্তানের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। স্লগওভারগুলোতে দ্রুত রান তোলার পাশাপাশি নিজের স্পিন বোলিং দিয়ে মিডল ওভারগুলোতে কাবু করতেন প্রতিপক্ষে ব্যাটারদের। তিনি দলে থাকা মানেই একটা বাড়তি আস্থার সঞ্চার হত।

  • মোহাম্মদ হাফিজ

বিতর্কিত বোলিং অ্যাকশনের কারণে বহুবার তাঁকে বোলিংটা বাদ দিতে হয়েছে। তবুও তিনি নিজের প্রয়োজনে দলের প্রয়োজনে বারবার নিজের বোলিং অ্যাকশন ঠিক করে ফিরেছেন। ঠিক এতটাই ডেডিকেটেড ছিলেন মোহাম্মদ হাফিজ।

দলের হয়ে টপ অর্ডারে ব্যাটিং করা ছাড়াও তিনি বল হাতেও রাখতে চেয়েছিলেন অবদান। বিপদের মুখ থেকে দলকে বহুবার বাঁচিয়ে নিয়েছিলেন। তাইতো মোহাম্মদ হাফিজ রয়েছেন পাকিস্তানের সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারদের তালিকায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link