স্কোরবোর্ডে পুঁজি মাত্র ১২৭ রান। শারজাহ’র এই ছোট মাঠে ১৩০ এর কম করে কখনো ম্যাচ জিতেনি কোন দল। ফলে বাংলাদেশের জন্য কাজটা ছিল প্রায় অসম্ভবই। তবে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের সহজ ফর্মুলা। ডট বল দেও, চাপ তৈরি করো। পথটা তিনি নিজেই সামনে থেকে দেখিয়ে দিলেন। মোসাদ্দেক, তাসকিনরাও সেনাপতির পিছু ধরলো।
সাকিব আল হাসান নিজেকে বোলিংয়ে আনলেন একেবারে প্রথম ওভারেই। শারজাহ’র ধীর হয়ে আসা উইকেটের সুবিধাটা নিতে চাইলেন। তাতে কাজও হলো। শুরু থেকে সাকিবের কিপটে বোলিং। নিজের কোটার চার ওভার শেষ করেছেন দ্রুতই। খরচ করেছেন মাত্র ১৩ রান, ইকনোমি রেট ৩.২৫। এক উইকেট নিলেও ডট বল দিয়েছেন ১২ টি। আর এটিই আসলে কাজের কাজটা করে দিয়েছে।
সাকিবের দেখানো পথে হেঁটেছেন মোসাদ্দেকও। এর আগে অবশ্য ব্যাট হাতে তিনিই বাংলাদেশকে অন্তত একটা লড়াকু সংগ্রহ এনে দিয়েছিলেন। ৩১ বল খেলে করেছিলেন ৪৮ রান। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে তাঁর ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংসই বটে। এরপর বল হাতেও হেঁটেছেন অধিনায়ক সাকিবের দেখানো পথ ধরেই।
প্রথম দুই ওভার বোলিং করে খরচ করেছেন মাত্র পাঁচ রান। তুলে নিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ হজরতুল্লাহ জাজাইয়ের উইকেট। ওদিকে মোহাম্মদ নাবি ভয়ংকর হয়ে উঠানোর আগেই তাঁকে ফিরিয়েছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। পেসার তাসকিন আহমেদও নিজের কাজটা ভালো ভাবেই করেছেন।
ফলে এই অল্প স্কোর করেও ম্যাচ কাছাকাছি নিয়ে আসে বাংলাদেশ। এমনকি শেষ চার ওভারে আফগানিস্তানের আয়োজন ছিল ৪৩ রান। তবে ইনিংসের ১৭ তম ওভারে মুস্তাফিজের বোলিং যেন বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়। এক ওভারে বাঁ-হাতি এই পেসার খরচ করলেন ১৭ রান। নাজিবুল্লাহ জাদরান মুস্তাফিজের এই ওভারে মারলেন দুটি ছয়।
ফলে শেষ তিন ওভারে আফগানিস্তানের প্রয়োজন ২৬ রান। অধিনায়ক সাকিব অনেক আশা নিয়ে বল তুলে দিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের হাতে। তবে সাইফউদ্দিনের ইনিংসের ১৮ তম ওভার শুরু করলেন চার খেয়ে। ওভারের তৃতীয় বলে আরেকটি চার আসে নাজিবুল্লাহ জাদরানের ব্যাট থেকে।
বাংলাদেশের বোলিং লাইন আপকে একাই যেন হতাশ করে তুললেন এই ব্যাটার। সাইফউদ্দিনের ওভারের শেষ দুই বলে মারলেন আরো দুটি ছয়। ফলে মুস্তাফিজ ও সাইফউদ্দিনের এই দুই ওভারেই ম্যাচ বের করে ফেলে আফগানরা।
অথচ প্রথম দুই ওভারে মাত্র ৫ রান খরচ করে এক উইকেট নেয়া মোসাদ্দেককে এর মাঝে আর বোলিংয়েই আনলেন না সাকিব আল হাসান। শেষ পর্যন্ত ইনিংসের ১৯ তম ওভারে বোলিংয়ে আনা হয় তাঁকে। যদিও ম্যাচের তখন আর কিছু বাকি ছিল না। শেষ পর্যন্ত ১৭ বলে অপরাজিত ৪৩ রান করে দলকে ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন নাজিবুল্লাহ জাদরান।
ফলে মাঠে নামার আগে বাংলাদেশ যে ভয়টা পেয়েছিল সেটাই সত্যি হলো। অনেক চেষ্টা করেও ম্যাচ জেতাতে পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা। কেননা বাংলাদেশের ব্যাটাররা যে ম্যাচের শুরুতেই ভুলটা করে ফেলেছেন। ব্যাট হাতে রশিদ খান, মুজিবুর রহমানদের সামলাতে পারেননি। এরপর ব্যাট করতে নেমেও জাদরানরা দেখিয়ে দিয়ে গেলেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটটা কীভাবে খেলতে হয়। ফলে প্রত্যাশিত কিংবা অপ্রত্যাশিত হার দিয়েই শুরু হলো বাংলাদেশের এশিয়া কাপ যাত্রা।