টি-টোয়েন্টি থেকে মুশফিকের অবসর

টি-টোয়েন্টির মেজাজটা যে তিনি একেবারেই ধরতে পারছেন না, সেটা বুঝতে বুঝতে একটু বেশি সময়ই নিয়ে ফেললেন মুশফিকুর রহিম। এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বের সবগুলো ম্যাাচ হেরে ফিরেই বোধোদয় হল তাঁর। ঘোষণা দিলেন, আর নয় আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি। এখন থেকে তিনি মনোযোগ দেবেন কেবল টেস্ট আর ওয়ানডে ফরম্যাটে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক বার্তায় মুশফিকুর রহিম ক্রিকেটের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাট থেকে বিদায়ের ঘোষণা দেন। তিনি লিখেছেন, ‘টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ার থেকে আজ আমি অবসর নিচ্ছি। তবে, বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট এবং ওয়ানডে খেলা চালিয়ে যাবো। আশা করছি এই দুই ফরম্যাটে আমি আরো কিছু নিয়ে আসতে পারবো দেশের জন্য।’

যদিও, মুশফিক টি-টোয়েন্টির ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটটা ঠিকই চালিয়ে যাবেন। তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)-সহ অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে আমি আমার খেলা চালিয়ে যাবো টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। দীর্ঘ ক্রিকেট ক্যারিয়ারের যাত্রায় আমি আপনাদের সবাইকে পাশে পেয়েছি। ভাল এবং খারাপ দুই সময়েই আপনাদের অকুন্ঠ সমর্থন আমার প্রেরণা।’

১০০’র ওপর টি-টোয়েন্টি খেলা এলিট ক্লাবের সদস্য মুশফিক। তবে, করেছেন মাত্র ১৫০০ রান। স্ট্রাইক রেট ১১৫’র মত, গড় ২০-এর নিচে। হাফ সেঞ্চুরি ছয়টি। সর্বশেষ এশিয়া কাপেও সমালোচিত হন তিনি।

তিনি যে গড়পরতা মানের সে বিষয়টা অবশ্য খোলামেলা ভাবেই বলে বসেছেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি বোলার ওয়াসিম আকরাম। এশিয়া কাপের ম্যাচে ধারাভাষ্য কক্ষে ওয়াসিম আকরামের কণ্ঠটাও বেশ প্রতাপশালী। বাকি দেশের প্রতিনিধিদের মত সেখানটায় স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশের আতাহার আলী খান। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে এই দুই কিংবদন্তি ছিলেন ধারাবিবরণের দায়িত্বে।

মুশফিকুর রহিম যখন ব্যাট করতে নামেন তখন এই দুই জন একসাথেই ধারাভাষ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। মেহেদি হাসান আউট হওয়ার পর যখন মুশফিকুর রহিমের পরিসংখ্যানের একটা ঝলক ভেসে ওঠে টেলিভিশনের পর্দায় তখনই তাঁর প্রসংশা করেন আতাহার। মুশফিকুর রহিমের স্ট্রাইক রেটের উপরই বেশি জোর দেন আতাহার।

তিনি বলেন, ‘মুশফিকুর রহিম আর সাকিব আল হাসানের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচকতা বয়ে নিয়ে আসতে পারে। পরিসংখ্যানের দিকে নজর দেওয়া যাক। ১০০ এর বেশি ম্যাচ খেলে প্রায় ১৫০০ রানের কাছাকাছি এবং স্ট্রাইক রেট ১১৫।’ ১০০টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা একজন খেলোয়াড়ের রান এতদিনে অন্তত ২০০০ রানের গণ্ডি পেরিয়ে যাওয়ার কথা। তবুও আতাহার আলী খান প্রসংশা করলেন। স্ট্রাইক রেটটা ইতিবাচক সে বিষয়টা জোর দিয়ে বলার চেষ্টা করলেন।

তবে ওয়াসিম আকরাম এই আলোচনা একেবারেই এড়িয়ে যেতে পারেননি। এই কিংবদন্তি পরক্ষণেই নিজের মতামত রেখেছেন। তিনি আতাহার আলী খানের সাথে সম্মতি না জানিয়ে বরং বলেন, ‘আমার বলতেই হচ্ছে এটা সেরা স্ট্রাইক রেট নয়। সে একজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। কিন্তু এই ফরম্যাটের সেরা ব্যাটারদের স্ট্রাইক রেটের দিকে যদি নজর দেওয়া যায় তবে দেখা যাবে তাঁদের স্ট্রাইক রেট ১৩০ এর উপরে।’

বিষয়টা একটু দেরিতে হলেও অন্তত বুঝলেন মুশফিক!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link