রোমাঞ্চকর সব অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। সিরিজের তিন ম্যাচেই লড়াই হয়েছে সমানে-সমানে; প্রতিটি ম্যাচের ফলাফল জানার জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে শেষ ওভার পর্যন্ত। শুধু জয়-পরাজয় নয়, বিশ্বকাপের আগে দুই দলের জন্যই এই সিরিজটি ছিল প্রস্তুতির বড় মঞ্চ; আর এই সুযোগ বেশ ভালভাবেই কাজে লাগিয়েছে তারা।
ভারত এবং অস্ট্রেলিয়া – দুইদলেরই বেশ কিছু প্রাপ্তি, অপ্রাপ্তি রয়েছে এই দ্বৈরথে। সেসব দিকে এবার আলোকপাত করা যাক।
- ক্যামেরন গ্রিন, টিম ডেভিড
প্রাপ্তির হিসেব করলে সবার আগে বলতে হয় ক্যামেরন গ্রিন এবং টিম ডেভিডের কথা। ভারতের বিপক্ষে পারফর্ম করার মধ্য দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি দলে নিজেদের গুরুত্ব প্রমাণ করেছেন দুইজনেই। অনেকদিন থেকেই অজি দলে টিম ডেভিডের অন্তর্ভুক্তিকে নিয়ে আলোচনা হয়েছিল, শেষপর্যন্ত বিশ্বকাপের স্কোয়াডে জায়গা পান এই হার্ড হিটার। হলুদ জার্সিতে নিজের অভিষেক সিরিজে ১৬৮ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করে আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন তিনি।
তাছাড়া তরুণ ক্যামেরন গ্রিনকে হুট করেই ওপেনিংয়ে সুযোগ দেয় টিম ম্যানেজমেন্ট, আর সেই সুযোগ দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছেন তিনি। গ্রিনের সাহসী ব্যাটিংয়ের ফলেই পাওয়ার প্লের সদ্ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছে অ্যারন ফিঞ্চের দল। পুরো সিরিজে এই অলরাউন্ডার দুইটি অর্ধ শতক তুলে নিয়েছেন আর ব্যাট করেছেন ২১৪.৫৫ স্ট্রাইক রেটে। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ দলে নেই ক্যামেরন গ্রিনের নাম, ভারতের বিপক্ষে এমন পারফরম্যান্স করার পর সেটা ভেবে মন খারাপ হতেই পারে এই ডানহাতির।
- অক্ষর প্যাটেল
ইনজুরির কারণে রবীন্দ্র জাদেজা বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ায় যে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল নির্বাচকদের সেটি অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছেন অ্যাক্সার প্যাটেল। সদ্য সমাপ্ত অস্ট্রেলিয়া সিরিজে জাদেজার অভাব বুঝতেই দেননি তিনি। তিন ম্যাচে ১০ ওভার বল করে তুলে নিয়েছেন আট উইকেট, আর ইকোনমি মাত্র ৬.৩০। উইকেট আর ইকোনমির হিসেবে সিরিজের সেরা বোলার অ্যাক্সার প্যাটেল, স্বাভাবিকভাবেই ম্যান অব দ্য সিরিজ নির্বাচিত হয়েছেন এই বাঁ-হাতি। তাই বিশ্ব আসরে রবীন্দ্র জাদেজা না থাকলেও নির্ভার থাকবে টিম ইন্ডিয়া।
এছাড়া অজিদের বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে ভারতের টপ অর্ডার। প্রথম ম্যাচে লোকেশ রাহুল, দ্বিতীয় ম্যাচে রোহিত শর্মা এবং শেষ ম্যাচে বিরাট কোহলি ছিলেন দলের অন্যতম সেরা পারফর্মার। এমন পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে লাভটা ভারতেরই হবে। একই সাথে সুরিয়াকুমার যাদব, ম্যাথু ওয়েডদের দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিংও এই সিরিজের বড় প্রাপ্তি।
- ডেথ বোলিং
অন্যদিকে দুই দলেরই ডেথ বোলিং সমস্যা ফুটে উঠেছে এই সিরিজে। এশিয়া কাপ থেকেই ভারতের ডেথ বোলিং পারফরম্যান্স ছিল প্রত্যাশামাফিক ছিল না। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিন ম্যাচের সবকয়টিতেও শেষদিকে দুই হাতে রান বিলিয়েছেন তারা; প্রথম ম্যাচে ২০০ এর বেশি রান করেও জিততে পারেনি ভারত৷ একই সমস্যায় ভুগছে অস্ট্রেলিয়াও, পরপর দুই ম্যাচে হেরেছে বোলিং ব্যর্থতায়। সবমিলিয়ে জস হ্যাজলউড, প্যাট কামিন্স, হার্শাল প্যাটেল, ভুবনেশ্বর কুমারদের অনিয়ন্ত্রিত বোলিং বাড়তি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দুই দলের জন্য।
- ফিল্ডিং
আবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারতীয় দলের ফিল্ডিং বেশ চোখে লেগেছে বিশ্লেষকদের৷ বেশ কয়েকটি দুর্দান্ত রান আউট করলেও মাঝেমধ্যেই ফিল্ডাররা করেছে অমার্জনীয় ভুল। বেশকিছু সহজ ক্যাচ মিস করেছে তারা, বড় টুর্নামেন্টে এসব ভুল ম্যাচের ভাগ্য বদলে দিতে পারে৷