ক্যাচ মিস, বাংলাদেশের মিসিং লিংক

মহেন্দ্র সিং ধোনির অধীনে ২০০৭ সালে ভারত টি টোয়েন্টি বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ওয়ানডে ক্রিকেটেও অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দেয়া হয় তার হাতে। সে সময় ওয়ানডে দল গঠনে বেশ কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নেন ধোনি। দল থেকে বেশ কিছু সিনিয়র ক্রিকেটারকে সরাতে সুপারিশ করেন ধোনি। এর মধ্যে বিরাট কিছু নামও ছিল।

মহেন্দ্র সিং ধোনির অধীনে ২০০৭ সালে ভারত টি টোয়েন্টি বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ওয়ানডে ক্রিকেটেও অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দেয়া হয় তাঁর হাতে। সে সময় ওয়ানডে দল গঠনে বেশ কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নেন ধোনি। দল থেকে বেশ কিছু সিনিয়র ক্রিকেটারকে সরাতে সুপারিশ করেন ধোনি। এর মধ্যে বিরাট কিছু নামও ছিল।

সেসব সিনিয়র ক্রিকেটারদের ওয়ানডে দল থেকে বাদ দেয়ার কারণ হিসেবে ধোনি বলেন যে তাদের জায়গায় কিছু তরুণ খেলোয়াড় নেয়া হলে তাঁরা ব্যাট বা বল করার পাশাপাশি ভালো ফিল্ডিংয়ের মাধ্যমে দলের বেশ কিছু রান সেভ করবে, যা একটি দলকে ম্যাচ জেতানোর জন্য যথেষ্ট। ১৫ বছর আগের নেয়া এম এস ধোনির এই সিদ্ধান্তই বুঝিয়ে দেয় একটি ক্রিকেট ম্যাচ জিততে ফিল্ডিং কতোটা গুরুত্বপূর্ণ।

রবীন্দ্র জাদেজা, বিরাট কোহলি, ফ্যাবিয়েন অ্যালেন, শাদাব খানরা ব্যাটিং বোলিংয়ের পাশাপাশি ফিল্ডিং জগতেও নিজেদের নাম আলাদা ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। তবে, শুধু আধুনিক যুগেই নয় বরং ক্রিকেটের আগের যুগেই কোয়ালিটি ফিল্ডিংয়ের প্রদর্শন দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব। আধুনিক ক্রিকেটের এই যুগে প্রায় সকল দলই যেখানে নিজেদের ফিল্ডিং নিয়ে আলাদাভাবে কাজ করে যাচ্ছে ; সেখানে ভিন্নরূপ বাংলাদেশ দলে। মাঠে নিজেদের খাম খেয়ালিপনা এবং ক্যাচ মিসের মহড়ায় বহু ম্যাচ হারের সাক্ষী হতে হয়েছে বাংলাদেশ দলকে।

বিগত, ৫-৬ বছর ধরে এই ক্যাচ মিসের হিরিক যেন রীতিমত ডুবিয়েই যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে। এমন ক্যাচ মিসের কারণে বল হাতছাড়া হওয়ার পাশাপাশি হাতছাড়া হয়েছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচও, যা কাঁদিয়েছে লক্ষ-কোটি বাংলাদেশি ক্রিকেট ভক্তকে।

২০১৬ এশিয়া কাপ, নিজেদের মাটিতে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে আরেকবার ভারত বধের সুযোগ পেয়েছিল টাইগাররা। ৪২ রানেই ৩ উইকেট হারানো ভারতীয় দল যখন ছিলো ধুকতে থাকা অবস্থায়, এর কিছুক্ষণ পরই রোহিত শর্মার খেলা একটি কাট শট পয়েন্ট রিজিওনে মিস করেন সাকিব। রোহিত সেই ইনিংসে ৫৫ বলে ৮৩ রান করেন এবং বাংলাদেশ সেই ম্যাচটি জিততে ব্যর্থ হয়।

২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ। সেই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার সেঞ্চুরিয়ন ডেভিড ওয়ার্নারের ক্যাচ পয়েন্টে মিস করেন সাব্বির রহমান। অথচ, এই ক্যাচটি ধরলে ম্যাচের ফলাফলটা ভীন্ন হতে পারত। ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে মুস্তাফিজুর রহমানের বলে রোহিত শর্মার তুলে দেয়া ক্যাচ মিস করেন তামিম ইকবাল। সেই ম্যাচে জীবন পেয়ে পরবর্তীতে সেঞ্চুরি করেন রোহিত যা বাংলাদেশকে ম্যাচ হারাতে যথেষ্ট ছিল।

সাম্প্রতিক সিরিজগুলোতেও যেন এই ক্যাচ মিস বাংলাদেশকে একাই জয় থেকে বঞ্চিত করছে। এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজেদের ম্যাচেও কুসাল মেন্ডিসের ক্যাচ মিস করে ম্যাচটা নিজেদের নামে করতে পারেনি বাংলাদেশ। এছাড়াও, সম্প্রতি, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হারেও সেই সিরিজের ম্যান ইন ফর্ম সিকান্দার রাজার একাধিক ক্যাচ ছেড়েছিল বাংলাদেশ। যার মাশুল দিতে হয়েছিল বাংলাদেশকে সেই সিরিজ হেরেই।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষেও বাংলাদেশের একাধিক ক্যাচ মিস আসন্ন বিশ্বকাপ টি টোয়েন্টি শুরুর আগে এক প্রকার চিন্তার ভাজ ফেলে দিয়েছে দর্শক-সমর্থদের কপালে। সামনে বিশ্বকাপ, বড় আসর। সেখানেও এমন ভুল করলে তাঁর মাশুলটাও বিরাটই হবে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...