সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ, কোন কিছুই তো আর একস্থানে থাকে না বন্দি। রাতের কোন এক সময় ফেসবুকে ঘুরপাক খেতে খেতে নিশ্চয়ই নানানরকমের বাহারি খাবারের চটকদার সব ভিডিও এসে সামনে পড়েছে। আপনি, আমি, আমরা সবাই সেসব ভিডিও অবশ্য মনের অজান্তেই খুব মনোযোগ দিয়েই দেখে থাকি। দেশ-বিদেশি কত ধরণের খাবারে ভিডিওই তো দেখা যায়। সেখানে নিশ্চয়ই পাকিস্তানের খাবারও বাদ যায়নি।
মাংসের ছড়াছড়ি। মোঘল আমলের সব খাবারের ধারক হয়ে এখনও বোধহয় টিকে আছে পাকিস্তান। কতসব বাহারি খাবার। রমজান মাস জুড়ে ঢাকার আনাচে-কানাচে মুখরোচক সব খাবারের আয়োজন বসে। এই উপমহাদেশের মানুষগুলো ভোজনরসিক বলেই বোধহয় খাবারের এতসব আয়োজন। বাংলাদেশ কিংবা ভারত অথবা পাকিস্তান, সবখানেই খাবারটা সম্মানের চাইতেও যেন পরিণত হয়েছে একটা শিল্পে।
পুরান ঢাকার বিরিয়ানি হোক কিংবা চট্টগ্রামের মেজবানি মাংস। আবার খুলনার চুইঝালের মাংস অথবা মাওয়ার ইলিশ। কোনটা সেরা বা কোন অঞ্চলের খাবার সেরা তেমন একটা প্রতিদ্বন্দীতা কিন্তু এই বাংলাদেশেও রয়েছে। বলে রাখা ভাল সে প্রতিযোগিতা যথেষ্ট স্বাস্থ্যকর, যদি আপনি কোলেস্টেরল আর পরিচ্ছন্নতার কথা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলেন আরকি। ঠিক তেমন এক লড়াই চলে পাকিস্তানেও। লাহোর আর করাচির মধ্যে খাদ্যের স্বাদের লড়াই। এই লড়াইটা বহুদিনের। তবে এ দফা খানিকটা বোধহয় এগিয়ে গেল করাচি।
দীর্ঘ প্রায় বছর পনেরো বাদে পাকিস্তানের মাটিতে সিরিজ খেলতে হাজির হয়েছিল ইংল্যান্ড। স্বাভাবিকভাবেই নিরাপত্তার প্রশ্নটা ছাপিয়ে পরিস্থিতি একটু শিথিল করতেই খাদ্যের প্রসঙ্গ এসেছে বারবার। আর তেমন প্রসঙ্গে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক হয়ে সফর করতে আসা মঈন আলীর ভোটটা চলে যায় করাচির পক্ষে। এই সফরে সাতখানা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে পাকিস্তান ও ইংল্যান্ড। খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই প্রধান শহর করাচি ও লাহোরে।
আর এই দুই শহরের মধ্যে খাদ্যের দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে কোন শহর? এমন প্রশ্নের জবাবে মঈন বলেন, ‘আমি লাহোরে খানিকটা হতাশ হয়েছি, তবে করাচি ছিল রীতিমত দূর্দান্ত।’ খাদ্যরসিকদের দ্বন্দের একটা সুরহা করেই যেন দিয়ে গেলেন মঈন। পাকিস্তানের বংশদ্ভুত মঈনের জন্ম থেকে বেড়ে ওঠা সবটাই ঘটেছে ইংল্যান্ডে। হয়ত পরিবারিকভাবে পাকিস্তানি খাবার খাওয়ার সুযোগ তাঁর হয়েছে বহুবার। তবে ভিনদেশি তারকা হিসেবে আপ্যায়নের খুব বেশি সুযোগ তিনি পাননি নিশ্চয়ই।
মঈন অবশ্য বাংলাদেশেরও জামাই হন। বাংলাদেশি এক মেয়েকেই তো নিজের ঘরের রাণী করে নিয়ে গেছেন তিনি। সে সুবাদে তিনি নিশ্চয়ই আরও অন্তত একদফা আসবেন বাংলাদেশে। সেবার অবশ্য তাঁর সামনে ছুড়ে দেওয়া যাবে আরও এক চ্যালেঞ্জ। চট্টগ্রামের মেজবান নাকি খুলনার চুইঝাল? সেদিন হয়ত আরও একটা দ্বৈরথের মিলবে ফলাফল। ও এফডিসির কালাভুনা দিয়েও নিশ্চয়ই আপ্যায়ন করা যাবে তাঁকে।