আসন্ন আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নিতে এরই মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছেছে টিম ইন্ডিয়া। ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে চ্যাম্পিয়ন ভারত বরাবরই ফেভারিটের তকমা নিয়েই বৈশ্বিক আসরে আসে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
এশিয়া কাপে ভরাডুবির পর ঘরের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে সিরিজ হারিয়েছে রোহিত শর্মার দল। এর মাধ্যমে পূর্ণ আত্মবিশ্বাস নিয়েই বিশ্বকাপ মিশনে নামবে ভারত।
তবে ভারতের জন্য সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হলো তাঁদের সেরা পেসার জাসপ্রিত বুমরাহর অনুপস্থিতি। হাঁটুর ইনজুরির কারণে এশিয়া কাপের পর বিশ্বকাপ স্কোয়াড থেকেও ছিটকে গিয়েছেন তিনি। বুমরাহর বিকল্প কে হবেন সেটিও ঠিক হয়নি এখন পর্যন্ত। তবে তাঁর জন্য আরও দিন সাতেক সময় পাচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্ট।
বুমরাহর বিকল্প হিসেবে মোহাম্মদ শামিকেই ভাবা হচ্ছিল এতদিন। তবে তাঁর ফিটনেস নিয়ে অনিশ্চয়তায় আছে বিসিসিআই। দলে ঢুকতে হলে তাকে ফিটনেস পরীক্ষায় উৎরাতে হবে। এনসিএর মেডিকেল দল শামির ফিটনেস দেখবে। এর পর শামিকে দলে নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী পূর্ণ স্কোয়াড ঘোষণা করার জন্য ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত সময় পাবে দল। শামি ফিট হলে পরে অস্ট্রেলিয়ায় ভারতীয় দলে যোগ দেবেন। তবে শামিকে না পাওয়া গেলে স্ট্যান্ডবাই থেকে মোহাম্মদ সিরাজ ও দীপক চাহারের মধ্য থেকে একজনকে নেওয়া হবে।
বুমরাহ দলে না থাকায় বোলিং আক্রমণের দিক দিয়ে খানিকটা দুর্বল অবস্থানেই আছে ভারত। ভারতের সাবেক ক্রিকেটার অজয় জাদেজা অবশ্য এটিকে বড় ধরনের সমস্যা হিসেবে মানতে নারাজ। ভারতের বিশ্বকাপ দল ও সম্ভবনা নিয়ে তিনি নিজের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
অজয় বলেন, ‘জাসপ্রিত বুমরাহকে বাদ দিয়ে আমরা কিছু ম্যাচ খেলেছি। সেগুলোতে খুব একটা খারাপ করেনি ভারত। সেদিক থেকে এটিকে খুব বড় সমস্যা না ভাবাই শ্রেয়। তবে অবশ্যই, বুমরাহকে কখনও রিপ্লেস করা যায় না। তাঁর যে ধরনের সক্ষমতা তাতে ধারের কাছেও কেউ নেই।’
অজয় জাদেজা এরপর অবশ্য ৩০ বছর আগে ঘটা একটি ঘটনার সাথে বুমরাহ’র ইনজুরির যোগসূত্র স্থাপন করেন। তিনি এখানে বুমরাহর সাথে তুলনা টানেন স্বয়ং ওয়াকার ইউনুসের।
তিনি বলেন, ‘৩০ বছর আগে ১৯৯২ সালে বিশ্বকাপ শিরোপা জিতেছিল পাকিস্তান। সে বিশ্বকাপের আগে ইনজুরির কারণে দল থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন ওয়াকার ইউনুস। অথচ সে সময় ভয়ংকর এক পেসার হিসেবেই ব্যাটারদের কাছে ত্রাস ছিলেন তিনি। ওয়াকার ইউনুস স্কোয়াডে না থাকায় তাই বিশাল এক ক্ষতি হয়ে যায় পাকিস্তানের। কিন্তু তারপরও সেবার বিশ্বকাপ জিতেছিল ইমরান খানের দল। আমিও এবার আশা করছি, ৩০ বছর পর অস্ট্রেলিয়ায় সেই একই রকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি হোক। সেবার আমাদের প্রতিবেশী দেশ জিতেছিল, এবার আমাদের পালা।’
২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতে শেষবার কোনো আইসিসি’র শিরোপা ঘরে তুলেছিল ভারত। এরপর আইসিসি’র ৮ টুর্নামেন্টের তিনটিতে ফাইনালে গেলেও একবারও শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হয়নি তাদের। প্রায় এক দশক পর আবারও কোনো শিরোপা জেতার মিশনে টিম ইন্ডিয়া।
আগামী ২৩ অক্টোবরে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে সে মিশন শুরু করবে তারা। আগের বার সংযুক্ত আমিরাতে হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে, গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ভারতকে ১০ উইকেটে হারিয়েছিল পাকিস্তান। এবার আগের হারের ব্যথায় প্রলেপ দিতে নিশ্চয় মুখিয়ে আছে রোহিত শর্মার দল। একই সাথে অজয় জাদেজার ভাবনাকে রূপ দিতে নিশ্চিতভাবেই বদ্ধ পরিকর থাকবে পুরো দল।