ব্যাটিংটা পাকিস্তানকে ক’দিন হল বেশ ভালই ভোগাচ্ছে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে। বিশ্বকাপের আগে মিডল অর্ডারের সংকটটা রীতিমত গলার কাঁটা হয়ে গিয়েছে পাকিস্তানের। দুই ওপেনার, মানে বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান যদি নিজেদের মেলে ধরতে পারেন, তাহলে ঠিক আছে। না হলে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন আপ যেন তাসের ঘর।
ত্রিদেশীয় সিরিজের নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৯ উইকেটে হারা ম্যাচের পর আবারও আলোচনায় পাকিস্তানের ব্যাটিং। বারবার সুযোগ পেয়েও পাকিস্তানের মিডল অর্ডার প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স করতে না পারায় সমর্থকদের হতাশার পাল্লা ভারি হচ্ছে। ঘুরেফিরে সেই একই আলোচনা – বাবর আজম অথবা মোহাম্মদ রিজওয়ানের মধ্যে একজনকে কি পুরনো পজিশন মিডল অর্ডারে ফিরিয়ে আনা যায়? – এমন প্রশ্ন করছেন অনেকে।
যদিও, পাকিস্তানের টিম ম্যানেজমেন্ট এই জুটি ভাঙতে চান না। সেই আলোচনায় পানি ঢেলে দিলেন স্বয়ং পাকিস্তানের ব্যাটিং কোচ মোহাম্মদ ইউসুফ। সংবাদ সম্মেলনে সাবেক এই পাকিস্তানি গ্রেট বলেন, ‘বিগত দুই বছর ধরে বাবর-রিজওয়ান ওপেনিংয়ে দারুণ খেলে আসছে। এবং দল চায় না ওপেনিং পজিশনে কোনো পরিবর্তন আনতে। বিশ্বকাপের ঠিক আগে এমন পরিবর্তন যেকোনো দলের জন্যই অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ।’
বিগত দুই বছর ধরে পাকিস্তান তো বটেই, সকল ক্রিকেট খেলুড়ে দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ২০২১ থেকে এখন পর্যন্ত মোট সাতটি শতাধিক রানের পার্টনারশিপ আছে যার মধ্যে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০৩ রানের অপরাজিত জুটিও অন্তর্ভুক্ত। এই পরিসংখ্যান যেকোনো দলের জন্যই ঈর্ষণীয় বটে।
তবে, পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনের সমস্যা হল যখনই দেখা যায় বাবর-রিজওয়ান পারফর্ম করতে ব্যর্থ হচ্ছে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ছে মিডল অর্ডার। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাবর-রিজওয়ান দ্রুত ফিরে যাওয়ার পর মাকসুদ-শাদাব-ইফতেখাররা কিউই বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি। ওই ম্যাচে ইফতেখার ২৭ বলে ১০০ স্ট্রাইক রেটে ২৭ রান আর আসিফ আলী ২০ বল খেলে ১২৫ স্ট্রাইক রেটে ২৫ রান করেন, যা তাদের কাছে প্রত্যাশার তুলনায় অনেক কম।
ফলশ্রুতিতে, পাকিস্তানও ১৩০ রানে আটকে যায়। পাকিস্তানি অধিনায়ক বাবর আজমও তাদের ব্যাটিং নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমাদের ব্যাটিং আপ টু দ্য মার্ক ছিল না।আমাদের যাতে এর পুনরাবৃত্তি না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। ১৩০ কখনোই ম্যাচ জেতার মত স্কোর নয়।’
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা পুনরুদ্ধারের মিশন নিয়ে ডাউন আন্ডারে গিয়েছে পাকিস্তান দল। কিন্তু, বারবার একই সংকটে ভুগে স্বপ্ন থেকে পিছিয়ে যেতে হচ্ছে গেল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালিস্টদের। সংকটটা কি? – সেটা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছে পাকিস্তানের টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে এর থেকে মুক্তির পথ এখনও অজানা।