দোড়গোড়ায় বিশ্বকাপ দলগুলো নিজেদের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু এমন সময়ে ভারতীয় দলের অবস্থা নাস্তানাবুদ। ইনজুরির কারণে ছিটকে যাচ্ছে একের পর এক খেলোয়াড়। আজ জাসপ্রিত বুমরাহ আবার কাল দীপক চাহার।
এই ইনজুরির মধ্যেই আলোচনায় আইপিএল, মােনে ভারতের সবেধন নীলমনি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ। সাধারণ সমর্থক থেকে ক্রিকেটবোদ্ধা সকলের কাঠগড়ায় ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের সবচেয়ে ঝাঁকঝমকপূর্ণ এই আসর। তবে কি আইপিএল খেলার চাপেই অতিরিক্ত ইনজুরিপ্রবণ ভারতীয় ক্রিকেটাররা?
প্রতিটি দেশের ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট আসরে তাদের তারকা খেলোয়াড়দের আবশ্যিক অংশগ্রহণ এ যেন অলিখিত এক নিয়ম। এছাড়াও টাকার ঝনঝনানির এই আসর গুলোই খেলতে সবসময়ই মুখিয়ে থাকে তারকারা। আর এই আসরগুলোতে খেলতে গিয়ে ইনজুরিতে পড়ার দৃষ্টান্ত তো স্বয়ং বাংলাদেশের কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান।
মুম্বাই প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে সাবেক ভারতীয় কোচ রবি শাস্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ায়, এটা অবশ্যই মাথায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে একজন খেলোয়াড় ঠিক কতটা ম্যাচ খেলতে সক্ষম। যদি কোনো ক্রিকেটারকে দেশের হয়ে খেলার জন্য আইপিএল থেকে বিশ্রাম দেওয়ার দরকার পড়ে তবে এই ক্ষেত্রে ফ্র্যাঞ্চাইজির আগে দেশকে নিয়ে ভাবতে হবে বিসিসিআইকে।’
মানে রবি শাস্ত্রীর কথায় এটা পরিস্কার যে তিনিও কাঠগড়ায় তুলছেন ওই আইপিএলকেই। তবে, জাতীয় দলের ক্রিকেট আর ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট – এই দুইয়ের মধ্যে একটা সমন্বয় করাটা জরুরি। সাবেক খেলোয়াড়, কোচ আর বর্তমান কমেন্টেটর রবি শাস্ত্রী ক্রিকেটারদের পর্যাপ্ত বিশ্রামের প্রতি জোর দেন।
তিনি বলেন, ‘একজন কোচ হিসেবে এটা খুবই হতাশার যখন আপনি ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে খেলতে যান কিন্তু ওই উইকেটে ভালো করার সক্ষমতা সম্পন্ন বোলার থাকার পরেও তাকে দলে নিতে পারেন না কারণ আইপিএলে খেলার সময় তার ইনজুরি। আশা করি নতুন বিসিসিআই সভাপতি এই বিষয়ে নজর দিবেন।’
নতুন বিসিসিআই সভাপতিকেও মানে রজার বিনিকেও তিনি শুভেচ্ছা জানাতে ভুলেননি। বিনি আবার ছিলেন শাস্ত্রীর সাবেক সতীর্থ। দু’জন এক সাথে জিতেছেন ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ। শাস্ত্রী বলেন, ‘ও কর্নাটক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হিসেবে কাজ করছে। এখন বিসিসিআই সভাপতি হচ্ছে। আমি ভীষণ খুশি । বিসিসিআইয়ের ইতিহাসে প্রথমবার এমন একজন সভাপতি হচ্ছেন যিনি বিশ্বকাপ জিতেছেন। ওর যোগ্যতা প্রশ্নাতীত। ওর সততা, চরিত্রের দিকে তাকান। আমি আগেই বলেছি ও বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার। বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য যা যা প্রয়োজন সব বিভাগেই বিনি আদর্শ।’
অন্যদিকে, সৌরভ গাঙ্গুলির সাথে আবার শাস্ত্রীর পুরনো ‘দুশমনি’। তবে, এবার অবশ্য গাঙ্গুলিকে কোনো খোঁচা দেননি শাস্ত্রী।। তিনি বলেন, ‘মিডিয়া থেকেই জানলাম, অতীতে টানা দু’বার কেউই সভাপতি ছিল না। তাই নতুন একজন সাবেক ক্রিকেটার সুযোগ পেতে চলেছে। জীবনে কোনও কিছুই স্থায়ী নয়। তাই অনেক সময় সরে দাঁড়াতেও হয়। এখন আমি কোনও কাজ করছি মানে তিন বছর পরেও সেটা করে যাব, এমন কোনও কথা নেই। নতুন মানুষ আসবে, দায়িত্ব নেবে, এটাই তো স্বাভাবিক।