বিশ্বকাপের এক্স-ফ্যাক্টর

আগ্রহের সবটুকু নিয়ে এই উপমহাদেশের দর্শকরা বসে পড়বে টিভি সেটের সামনে। তাছাড়া পুরো ক্রিকেট বিশ্বের নজরও থাকবে তাসমান পারে। শ'খানেক নতুন রুপকথার গল্প হয়ত লেখা হবে। হতাশার গল্পেরও নিশ্চয়ই অভাবটা হবে না। তাইতো কিছু খেলোয়াড়দের দিকে থাকবে বাড়তি নজর।

বছর ঘুরতেই আরেকটা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। উন্মাদনা কমে যাবে বলে ভাবছেন? মোটেও না, বরং যেন বেড়েছে বহুগুণে। কারণটাও স্পষ্ট। স্বল্প সময়ের মধ্যে কোন দল নিজেদেরকে গুছিয়ে নিতে পেরেছে সেটাই বাড়াচ্ছে উন্মাদনা। তাছাড়া এবারের বিশ্বকাপ হয়ত হতে পারে বহু তারকা ক্রিকেটারদের শেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সেটাও উত্তেজনা বাড়াচ্ছে খানিকটা। পছন্দের খেলোয়াড়দের হয়ত আর দেখা যাবে না বিনোদনে ঠাসা এই ক্রিকেটীয় ফরম্যাটে।

আগ্রহের সবটুকু নিয়ে এই উপমহাদেশের দর্শকরা বসে পড়বে টিভি সেটের সামনে। তাছাড়া পুরো ক্রিকেট বিশ্বের নজরও থাকবে তাসমান পারে। শ’খানেক নতুন রুপকথার গল্প হয়ত লেখা হবে। হতাশার গল্পেরও নিশ্চয়ই অভাবটা হবে না। তাইতো কিছু খেলোয়াড়দের দিকে থাকবে বাড়তি নজর। তেমন কিছু খেলোয়াড়দের নিয়েই থাকছে আজকের আয়োজন।

  • ডেভিড ওয়ার্নার (অস্ট্রেলিয়া)

গেলবার প্রথম টি-টোয়েন্টি শিরোপা জয়ের আনন্দে ভেসেছিল অস্ট্রেলিয়া। ক্রিকেট দুনিয়ায় অস্ট্রেলিয়ার দাপট নতুন নয়। তবে এই ফরম্যাটে অস্ট্রেলিয়ার শিরোপা খরা ছিল বহুদিনের। তবে সে খরাতে বৃষ্টির অবারিত ধারা ঝড়েছে সপ্তম আসরে। তাতে অবশ্য অনেকটাই অবদান ছিল হার্ড-হিটার ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারের। ইনিংসের শুরুতে নেমে তিনি দলকে এনে দিয়েছিলেন উড়ন্ত সূচনা।

তিন অর্ধ-শতকের বদৌলতে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিল ২৮৯ রান। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর দিকে থাকবে বাড়তি নজর। যদিও বিশ্বকাপ পরবর্তী সময়ের তিনি খানিকটা রান অভাবে ভুগছিলেন। তবে সে দশা কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন তিনি। আর নিজের দিনে ওয়ার্নারের তোপে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে যেকোন শক্তিধর দল। তেমনটাই হয়ত দেখতে চাইবে দর্শকরা।

  • বিরাট কোহলি (ভারত)

দীর্ঘ অপেক্ষার পর পাওয়া ফল প্রশান্তির পরশ বুলিয়ে দেয়। তেমনই এক প্রশান্তিকর মুহূর্তের সম্মুখীন হয়েছেন বিরাট কোহলি। তাঁর সাথে সাথে গোটা ভারত এবং ক্রিকেট দুনিয়া। বহুদিনের সেঞ্চুরির অপেক্ষা তিনি ঘুচিয়েছেন। তাও আবার টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে। ছন্দে থাকা বিরাট কোহলির সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন থাকার কথা নয়।

দলের টপ অর্ডারের গুরুদায়িত্ব থাকবে তাঁর কাঁধে। তবে তিনি কিছুটা নির্ভার হয়েই খেলতে পারবেন। কেননা দলের থাকা রোহিত শর্মা, লোকেশ রাহুল ও সুরিয়াকুমার যাদবরা রয়েছেন ফর্মে। নির্ভার বিরাট কোহলি হয়ত হতে পারে ভীষণরকম ভয়ংকর। আর তিনি তেমন রুদ্রমূর্তি ধারণ করতে পারেন কি-না সে আগ্রহ নিশ্চয়ই থাকবে সমর্থকদের মধ্যে। আর বিরাটের দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিং মনোযোগ কাড়বে নিশ্চয়ই।

  • বাবর আজম (পাকিস্তান)

এই সময়ের সেরা ব্যাটারদের একজন বাবর আজম। তর্কের কোন অবকাশ নেই। শুধু যে সেরা ব্যাটার নন, চোখ জুড়ানো ব্যাটিং তাঁর। ক্রিকেটের ব্যাকরণ মেনে অবলীলায় প্রতিপক্ষ বোলারদের সামলে নিতে দারুণভাবে দক্ষ বাবর আজম। বাইশ গজে একবার নিজের ছন্দের দেখা পেলে বাবর আজমকে থামানো দায়।

ব্যাটিংয়ের সৌন্দর্য্যের পাশাপাশি দলের দায়িত্বভার কেমন সামলাতে পারেন বাবর সেদিকেও নজর থাকবে পাকিস্তানের সমর্থকদের। গেল আসরে চ্যাম্পিয়ন হবার সম্পূর্ণ রসদ থাকলেও সেমিফাইনালে গিয়ে হোচট খায় বাবর আজমের দল। এবার মিডল অর্ডার সমস্যা নিয়েই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পা রাখবে পাকিস্তান। পুরো দলকে আবারও শিরোপা জয়ী একটা দল হিসেবে উজ্জীবিত করতে পারবে কি-না বাবর সেটাই দেখার অপেক্ষা।

  • জশ বাটলার (ইংল্যান্ড)

ব্যাটিং, উইকেট কিপিং সেই সাথে অধিনায়কত্ব, এই তিন গুরুদায়িত্ব একাহাতে সামাল দিতে হবে জশ বাটলারকে। এই বছর হওয়া ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে তিনি ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে। বেশ কয়েকটি শতকের দেখাও পেয়েছেন তিনি। আইপিএল ছাড়াও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিনি ব্যাট হাতে রয়েছেন ছন্দে। তাছাড়া তাঁর দলও সাম্প্রতিক সময়ে দুর্বার গতিতে ছুটছে।

গোটা ইংল্যান্ড দলেই রয়েছে মারকাটারি ব্যাটারদের ছড়াছড়ি। এই পুরো দানবীয় ব্যাটিং লাইনআপের শুরুর দায়িত্বটা থাকবে বাটলারের কাঁধেই। ব্যাটে-বলে সংযোগটা ঠিকঠাক হলে বাটলার যেকোন দিন তুলোধুনো করে দিতে পারে প্রতিপক্ষকে সেকথা নতুন করে বলবার নয়। তাঁর ব্যাটিংয়ের প্রতিটা মুহূর্তই যেন বিনোদনে ভরপুর। আর তাই বিনোদিত হবার লোকের অভাবটা হবেনা।

  • সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ)

এত এত ব্যাটারদের ভীরে যদি একজন অলরাউন্ডারের নামই উল্লেখ না করা হয় তাহলে পুরো তালিকাটাই অপূর্ণ থেকে যায়। আর সাকিব আল হাসান ছাড়া দল কিংবা তালিকায় পূর্ণতা আর কেই-বা নিয়ে আসতে পারে। যথারীতি বড় টুর্নামেন্টের আগে সাকিব আবারও ফিরে পেতে শুরু করেছেন। বিশ্বকাপের আগে ত্রি-দেশীয় সিরিজে নিজের ফেরার ছাপটাই রেখে গেলেন সাকিব। একটা কথা বেশ প্রচলিত- সাকিব ব্যাট অথবা বল কোন একটা দিয়ে ঠিক পুষিয়ে দেবেন।

হ্যা অলরাউন্ডার সাকিব দু’টোতেই সিদ্ধহস্ত। ব্যাট হাতে যাওয়া খারাপ দিনে সাকিব উজ্জ্বল থাকবেন বল হাতে, ঠিক তার উল্টো চিত্রের দেখাও মেলে। দলের ভারসাম্য রক্ষার্থে সাকিবের বিকল্প খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। আর ফর্মে থাকা সাকিব টাইগার ক্রিকেটের জন্যে স্বস্তি। যদিও টি-টোয়েন্টিতে বেশ নড়বড়ে একটা দল বাংলাদেশ। সে দলকে কতদূরে টেনে নিয়ে যেতে পারেন সাকিব সে আগ্রহ নিশ্চয়ই থাকবে ক্রিকেট বিশ্বের।

  • ট্রেন্ট বোল্ট (নিউজিল্যান্ড)

বোলারদের মধ্যে ট্রেন্ট বোল্টের দিকে বাড়তি নজর রাখতেই হচ্ছে। গেল বিশ্বকাপের পর থেকে নিজের ফর্ম ধরে রেখেছেন। নিত্যদিন পারফরম করে যাচ্ছেন। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তিনি ১৩ খানা উইকেট শিকার করেন। ছিলের পেসারদের মধ্যে সবার উপরে। নিউজিল্যান্ডকে ফাইনাল অবধি নিয়ে যেতে অবদান রেখেছেন বোল্ট।

এবারও বেশ শক্তিশালী একটি দলের অংশ হয়েই বোল্ট যাচ্ছেন অস্ট্রেলিয়াতে। সেখানের কন্ডিশন সম্পর্কে বেশ ভাল করেই জানা বোল্টের। তিনি নিশ্চয়ই এসবকিছু মিশেল ঘটিয়ে চাইবেন দলকে প্রথম কোন বৈশ্বিক আসরের শিরোপা জেতাতে। বোল্টের উপরই অনেকটা ভরসা করে থাকবে গোটা ব্ল্যাকক্যাপস শিবির।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...