রান পাহাড়ের মালিকানা দ্বন্দ

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর্দা উঠেছে, অপেক্ষা শুধু মূল পর্ব শুরু হবার। প্রতিটা ক্রিকেটারই চেষ্টা করবেন দারুণ পারফর্ম করে এবারের বিশ্বকাপ রাঙিয়ে তুলতে। বিশ্বকাপকে সামনে রেখে কয়েকজন ব্যাটসম্যান আছেন দারুণ ফর্মে, যারা চেষ্টা করবেন প্রতিটি ম্যাচেই দলের পক্ষে ব্যবধান গড়ে দেয়ার। নিজেদের দিনে তাঁরা একাই প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেয়ার সামর্থ্য রাখেন। আসুন দেখে নেয়া যাক পাঁচ ব্যাটসম্যানকে যারা কিনা হতে পারেন এবারের বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। 

  • জস বাটলার (ইংল্যান্ড)

বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বিধ্বংসী ব্যাটসম্যানের তালিকায় উপরের দিকেই থাকবে জস বাটলারের নাম। গত বছর দু’য়েক ধরেই নিজের ক্যারিয়ারের চূড়ান্ত ফর্মে আছেন বাটলার। কাফ মাসলের ইনজুরির কারণে বিশ্বকাপের আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে সাত ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে মাঠে নামেননি সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের এই অধিনায়ক।

কিন্তু বিশ্বকাপের ঠিক আগ মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন মেগা ইভেন্টে আলো ছড়াতে তিনি প্রস্তুত। সিরিজের তিন ম্যাচেই অজি বোলারদের উপর আধিপত্য বিস্তার করেছেন বাটলার, হাঁকিয়েছেন দুই ফিফটি।

ভুলে গেলে চলবে না, এ বছরের আইপিএলেও সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন বাটলার। বলাই বাহুল্য, এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় উপরের দিকেই থাকবে তাঁর নাম। 

  • ডেভিড ওয়ার্নার (অস্ট্রেলিয়া)

অভিষেকের পর থেকেই তিন ফরম্যাটেই ব্যাট হাতে অস্ট্রেলিয়ার ভরসার নাম ডেভিড ওয়ার্নার। ক্যারিয়ারে নানা ঝড়-ঝাপটার সম্মুখীন হলেও, ব্যাট হাতে কখনও আপোস করেননি। রান করে গিয়েছেন সমানতালে। এবারের বিশ্বকাপ শুরুর আগে ওয়ার্নার তাই ভীষণ আত্নবিশ্বাসী।

আগের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়াকে প্রথমবারের মত বিশ্বকাপ জেতানোর পাশাপাশি নিজে জিতেছিলেন ম্যান অব দ্য টূর্নামেন্টের খেতাব। সেবার সাত ম্যাচে ২৮৯ রান করার পাশাপাশি সেমিফাইনাল এবং ফাইনালের মহাগুরুত্বপূর্ণ মঞ্চে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠেছিলেন তিনি। এবার ঘরের মাঠে নিশ্চিতভাবেই গতবারের পুনরাবৃত্তি করতে চাইবেন ওয়ার্নার।  

  • বাবর আজম (পাকিস্তান)

আরব আমিরাতে গত বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। ব্যাট হাতে ছিলেন রীতিমতো অপ্রতিরোধ্য। প্রথম ম্যাচেই চিরপ্রতিদ্বন্দী ভারতের বিপক্ষে হাফ সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দলকে এনে দিয়েছিলেন প্রথমবারের মতো বিশ্বমঞ্চে ভারতকে হারানোর স্বাদ। সেবার ছয় ম্যাচে সংগ্রহ করেছিলেন ৩০৩ রান।

বিশ্বকাপের আগে ইংল্যান্ড সিরিজ এবং নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে পুরনো ছন্দে বাবর। এবারের বিশ্বকাপে তাই বাবর নিশ্চয়ই প্রচেষ্টা চালাবেন ব্যাট হাতে গতবারের সাফল্যকে ছাড়িয়ে যেতে। 

  • মোহাম্মদ রিজওয়ান (পাকিস্তান)

এবারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে ভাল ফর্ম নিয়ে যাচ্ছেন পাকিস্তানের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ রিজওয়ান। ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম এই সংস্করণে রীতিমতো দুর্দমনীয় তিনি।

মিডল অর্ডার ব্যাটার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করলেও ওপেনার হিসেনে উপরে উঠে আসার পরই ক্যারিয়ারে পালাবদল আসে রিজওয়ানের। টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে তাঁর চেয়ে দ্রুততম সময়ে দুই হাজার রানের কোটা স্পর্শ করতে পারেননি তিনি।

আরব আমিরাতে এশিয়া কাপ, ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড সিরিজ কিংবা নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ – স্থান, প্রতিপক্ষ, পরিস্থিতি সবকিছু বদলালেও বদলায়নি একটি দৃশ্য। সব খানেই রিজওয়ান  রান করে গিয়েছেন দেদারসে।

মাঝে মাঝে তাঁর স্ট্রাইক রেট নিয়ে প্রশ্ন তোলা হলেও ম্যাচ প্রতি তাঁর রান করার হার নিয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহের অবকাশ নেই। আইসিসি টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যান র‍্যাংকিংয়ের নম্বর ওয়ান ব্যাটার রিজওয়ান চাইবেন বিশ্বকাপেও রান সংগ্রাহকের তালিকায় সবার উপরেই থাকতে। 

  • বিরাট কোহলি (ভারত)

শচীন টেন্ডুলকার পরবর্তী যুগে ব্যাট হাতে পুরো বিশ্বকে শাসন করেছেন বিরাট কোহলি। মাঝে অফফর্মে থাকলেও এশিয়া কাপে ফিরেছেন পুরনো ছন্দে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে অনবদ্য এক সেঞ্চুরি করে জানান দিয়েছেন প্রত্যাবর্তনের। টি-টোয়েন্টিতে সেটাই ছিল তাঁর প্রথম সেঞ্চুরি। এশিয়া কাপের পর অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও ধরে রেখেছেন রানের স্রোতধারা।

অজিদের বিপক্ষে অপরাজিত ৬৩ রানের পাশাপাশি প্রোটিয়াদের বিপক্ষে খেলেছেন মহাগুরুত্বপূর্ণ ৪৯ রানের ইনিংস। এবারের বিশ্বকাপে কোহলির সামনে সুযোগ নিজেকে ছাড়িয়ে যাবার। এর আগে ২০১৪ এবং ২০১৬ বিশ্বকাপে টানা দু’বার ‘ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট’ নির্বাচিত হয়েছিলেন কোহলি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link