এক সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ছিল বিশ্বক্রিকেটের অন্যতম পরাশক্তি। ক্লাইভ লয়েড, ভিভ রিচার্ডস, ব্রায়ান লারা, কার্টলি অ্যামব্রোস এর মত কত শত কিংবদন্তি তৈরি হয়েছে এই ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে। আর প্রসঙ্গ যখন টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের তখন তো ওয়েস্ট ইন্ডিজ যেন দুর্দান্ত একটি দল ছিল।
২০১২ এবং ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন দল ছিলো তাঁরা। ওই সময়টাতে বিশ ওভারের খেলাকে কেন্দ্র করে ক্যারিবিয় দ্বীপপুঞ্জে দারুণ একটি প্রজন্ম গড়ে উঠেছিল, যারা বিশ্বব্যাপী এই ফরম্যাটে নিজেদের দাপট দেখিয়ে বেড়াতো। ক্রিস গেইল, স্যামুয়েল বদ্রি, মারলন স্যামুয়েলস, কায়রন পোলার্ড, আন্দ্রে রাসেল, ডোয়াইন ব্রাভো কতো বাঘা বাঘা নাম জড়িয়ে আছে দেশটির ক্রিকেটীয় ইতিহাসে।
কিন্তু সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ এখন শুধুই গল্প। সময়ের আবর্তনে এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খর্বশক্তির একটি দল। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের র্যাংকিংয়েও তাঁরা পেছনের সারির সদস্য। ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবারের আসরে ফেভারিট তো নয়ই বরং এই তকমার ধারেকাছেও নেই। অথচ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সাত আসরের মধ্যে একমাত্র দল হিসেবে দুইবারের শিরোপাধারী তাঁরা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের সোনালী যুগের যে অবসান ঘটেছে তার প্রমাণ এবারের বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভেও দলটির জায়গা হয়নি। তাই বাছাইপর্বে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ‘আন্ডারডগ’ দলটিকে বিশ্বকাপের মিশন শুরু করতে হচ্ছে। ১৭ অক্টোবর,২০২২ (সোমবার) দলটি মুখোমুখি হতে যাচ্ছে স্কটল্যান্ডের। গ্রুপ ‘বি’ তে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে আরও আছে জিম্বাবুয়ে, স্কটল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড। এই গ্রুপ থেকে শীর্ষ দুইটি দল সুপার টুয়েলভের টিকিট কাটবে।
গত বছরের বিশ ওভারের বিশ্বকাপের আসরটাও একেবারেই ভালো কাটেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করে সুপার টুয়েলভ থেকেই তাঁদের বিদায় নিতে হয়েছিল। অর্থাৎ ২০১৬ এর চ্যাম্পিয়ন দল ২০২১ এ এসে কোনরকম জুবুথুবু একটি দল বনে গিয়েছিলো।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলটির নেতৃত্ব এবার নিকোলাস পুরানের কাঁধে। নিজেদের অবস্থান নিয়ে এই ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা যতোই দুইবারের চ্যাম্পিয়ন হই না কেন, আমরা এই টুর্নামেন্টের আন্ডারডগ। অনেকে তো মনে করে আমরা সুপার টুয়েলভে কোয়ালিফাইও করতে পারবো না। অবশ্যই চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে তা আমাদের জন্য অনেক বড় অর্জন হবে।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে এখন আর দারুণ পারফর্মার নেই, অভিজ্ঞরা নেই। দলের আগের সেই প্রতাপও নেই। তাই বিশ্বকাপ মিশনে দলটি কতটা আত্মবিশ্বাস সঞ্চার করে নেমেছে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে ক্রিকেটবোদ্ধাদের। আপাতত সেটি জানতে হলে চোখ রাখতে হবে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে আসন্ন ম্যাচটির দিকে।