হোবার্টে শেষ হাসি হেসেছে বাংলাদেশ। এবার টিম টাইগার্সের ঠিকানা সিডনি। যেখানে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। সেখানেও নিশ্চয়ই জয়ের ধারা বজায় রাখতে চাইবে বাংলাদেশ। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের একাদশ কিংবা পরিকল্পনায় কোন পরিবর্তন আসবে কী?
প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশ জয় তুলে নিয়েছে। ব্যাটিং, বোলিং দুই ডিপার্টমেন্টেই কিছু ভুল সাকিবরা করেছেন তবে দল জয় পেয়েছে। সব মিলিয়ে দলের পারফর্মেন্সেও খুব বেশি হতাশ হওয়ার সুযোগ নেই। বিশেষ করে পেস বোলিং ডিপার্টমেন্ট বাংলাদেশকে বড় স্বপ্নই দেখাচ্ছে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ছোট কোন ভুলও ম্যাচ থেকে ছিটকে দিতে পারে বাংলাদেশকে।
বিশেষ করে পাওয়ার প্লে ও স্লগ ওভারের ব্যবহারটা বাংলাদেশ কোনভাবেই করতে পারছেনা। ওপেনার, ফিনিশার সবাইকেই তাই নিতে হবে বাড়তি দায়িত্ব। মিডল অর্ডারে বাংলাদেশ খানিকটা সস্তিতে থাকলেও সিডনিতে ভয়ের কারণও আছে।
কেননা হোবার্টের থেকে সিডনির মাঠ বেশ বড়। বাংলাদেশের ব্যাটারদের জন্য বিশেষ করে মিডল অর্ডারে বাউন্ডারি আদায় করাটা বেশ কঠিনই হবে। ফলে সাকিব, লিটন, আফিফদের অনেক বেশি নির্ভর করতে হবে ডাবলসের উপর। বড় মাঠের গ্যাপগুলো ব্যবহার করতে পারলেই সচল রাখা যাবে রানের চাকা। আর জোর করে বাউন্ডারি আদায় করতে চাইলে বরং ক্যাচ আউট হবার সম্ভাবনাই বেশি থাকবে।
আর এই কাজটা মিডল অর্ডারে ব্যাট করা লিটন, সাকিব, আফিফ কিংবা রাব্বিদেরই করতে হবে। আবার ফিল্ডারদেরও এই বড় মাঠে নিজেদের সেরাটা দিতে হবে। প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানদের দুই রান নেয়া থেকে আটকানোটা জরুরি। সেটা করতে পারলেই চাপে পড়বে দক্ষিন আফ্রিকা। তখন বোলারদের জন্যও উইকেট নেয়া সহজ হয়ে যাবে।
তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মাঠে নামার আগে সবচেয়ে বড় চিন্তার বিষয় ফিফথ বোলার। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচেও ফিফথ বোলার না থাকায় ভুগতে হয়েছে বাংলাদেশকে। পার্টটাইমার মোসাদ্দেক কিংবা সৌম্য কেউই খুব একটা কার্যকর হতে পারেননি। আর বড় দল গুলোর বিপক্ষে এই সংকট আরো প্রবল হয়েই উঠবে।
সেক্ষেত্রে সিডনির উইকেটে একজন বাড়তি স্পিনারই খেলাতে চাইবে বাংলাদেশ দল। সিডনিতে বরাবরই একটু স্পিন ধরে। আর সেটা ব্যবহার করতে চাইলে একাদশে পরিবর্তন আনতে হবে বাংলাদেশকে। কিন্তু উইনিং কম্বিনেশন ভেঙে কাকে বাদ দেয়া হবে সেটাও যেন এক মধুর সমস্যা।
কেননা ব্যাটিং লাইন আপে প্রথম পাচ জনের জায়গা প্রায় পাকা। সৌম্য, শান্ত, লিটন, সাকিব, আফিফ সবার নিজ নিজ জায়গায় খেলবেন। ওদিকে সাতে খেলছেন সহ-অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। আর মোসাদ্দেকও নিজেকে প্রমাণ করেছেন শেষ ম্যাচে। ওদিকে পেস আক্রমণে তাসকিন, মুস্তাফিজ, হাসান মাহমুদ তিনজনই নিজেদের সেরাটা দিয়েছেন। ফলে তাদের জায়গায় নিয়েও কোন নড়চড় করতে চাইবেনা টিম ম্যানেজম্যান্ট।
বাকি থাকেন শুধু ছয়ে ব্যাট করা ইয়াসির আলি রাব্বি। শেষ ম্যাচে তিনি রান পাননি। তবে তাকে নিয়ে বিশ্বকাপে তার বড় পরিকল্পনাই ছিল। ফলে তাকে বাদ দেয়াটাও কঠিন। তবে মিরাজকে খেলাতে হলে রাব্বিকেই হয়তো বাদ দেয়া হবে।
কেননা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিডনির উইকেটে একজন বাড়তি স্পিনার খেলানোর পক্ষে টিম ম্যানেজম্যান্ট। সেক্ষেতে দলে অপশন আছে দুজন। মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাসুম আহমেদ। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরাজই বেশি এগিয়ে থাকবেন প্রোটিয়া ব্যাটিং লাইন আপে বাঁহাতি বেশি থাকায়।
সেজন্য সাকিবের সাথে স্পিন আক্রমণ সামলানোর জন্য মিরাজই হতে পারেন প্রথম পছন্দ। সেক্ষেত্রে ফিফথ বোলারও পেয়ে যাবে বাংলাদেশ। আবার ব্যাট হাতেও রান করতে পারেন তিনি। তবে প্রশ্ন হচ্ছে দল কী উইনিং কম্বিনেশন ভেঙে মিরাজকে খেলাবে নাকি সম্ভাবনাময় রাব্বির উপরই আস্থা রাখা হবে?