বাংলাদেশ দল তখন ব্রিসবেনে। প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, একটা ম্যাচ জয়ই এই দলটার মানসিকতা পাল্টে দিবে। তখন কথাটার সমালোচকের কমতি ছিল না। যদিও, সৈকতের কথাই ঠিক। একটা জয় বাংলাদেশ দলের আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে।
দলকে এমন চনমনে করার নায়ক খুঁজতে গেলে তাসকিন আহমেদের নামই আসবে সবার আগে। তিনিই তো চার উইকেট নিয়ে দলের জয়টা নিশ্চিত করেছিলেন নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে।
প্রথম দুটি ডেলিভারিতেই নিজের মনোভাবটা পরিস্কার করে দিয়েছিলেন তিনি। নিজের দু:সময় কাটিয়ে তাসকিন আহমেদ এখন দলের দু:সময়টাও চিরতরে নিশ্চয়ই কাটিয়ে দিতে চাইবেন। আর এই কাজে বরাবরের মত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে পেলেন পাশে।
গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে এসে সাকিব কোনো রাখঢাক রাখলেন না। তাঁর চোখে এই মুহূর্তে বাংলাদেশের পেস বোলিংয়ের নেতা তাসকিন আহমেদ। মাশরাফি বিন মুর্তজা চলে যাওয়ার পর নিজের পরিশ্রম ও চেষ্টা দিয়ে এই জায়গাটা গড়ে তুলেছেন তাসকিন। সাকিব অবশ্য পুরো পেস বোলিং ইউনিটেরই প্রশংসা করলেন।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, মাশরাফির বিদায়ের পর তাসকিনকেই বাংলাদেশের পেস আক্রমণের নেতা বলা যায়। গত দুই তিনটা বছরে ও বাংলাদেশের হয়ে দারুণ বোলিং করছে। দারুণ কিছু নজীর সৃষ্টি করে ও নেতৃত্ব দিচ্ছে। আসলে তিন ফরম্যাটেই আমাদের দারুণ একটা ফাস্ট বোলিং গ্রুপ আছে। ওরা সবাই দারুণ বোলিং করছে। যেভাবে তারা উন্নতি করে এত দূর এসেছে, তাতে আমি গর্ব করতেই পারি। সেই ফলাফলটাই এখন দেখা যাচ্ছে। আশা করবো, পুরো টুর্নামেন্টেই ওদের এই ফর্ম অব্যাহত থাকবে আর আমরা খুবই ভাল একটা বিশ্বকাপ কাটাবো।’
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে নির্ভার থাকলেও নজর ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার দিকে। কারণ, পরের ম্যাচে তো এই প্রোটিয়াদের মুখোমুখিই হতে হবে বাংলাদেশকে। তাই, হোটেল রুমে ফিরে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার ম্যাচে চোখ রেখেছিল সাকিবের দল। যদিও, বৃষ্টির বাগড়ায় প্রতিপক্ষকে সামান্যই পরখ করতে পেরেছেন তাঁরা।
তবে, ম্যাচের আগের দিন সাকিব জানালেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলতে প্রস্তুতই আছে তাঁর দল। বললেন, ‘আমরা প্রেডিক্টেবল হতে চাই না। আমরা প্রতিপক্ষ দেখে, কন্ডিশন বুুঝে নিজেদের প্রস্তুত করছি বিশ্বকাপে। কারণ, এখানে প্রতিটা মাঠের চরিত্র আলাদা। প্রতিটা মাঠের কন্ডিশন আলাদা, আবহাওয়া ভিন্ন রকমের। ফলে, আমাদের সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা করতে হবে। সব সময় সব কিছু আমার মন মত হবে না। কিন্তু, সব কিছুর জন্য নিজেদের তৈরি রাখতে হবে।’
আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় বঞ্চিত দক্ষিণ আফ্রিকা অনেক বেশি ক্ষুধার্ত হয়েই মাঠে নামবে বাংলাদেশের বিপক্ষে। আর সেমির লড়াইয়ে টিকতে দু’দলেরই খেলতে হবে নিজেদের উজাড় করে। সাকিব-তাসকিনরাও নিশ্চয়ই সেই উত্তাপটা টের পাচ্ছেন।