ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিদায় করে সুপার টুয়েলভে নাম লিখিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। তবে সুপার টুয়েলভের প্রথম ম্যাচেই শ্রীলঙ্কার কাছে নয় উইকেটে হেরে মুখ থুবড়ে পড়েছিল আয়ারল্যান্ড। গ্রুপ পর্বে দারুণ ক্রিকেট খেলা আয়ারল্যান্ড ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলে নিজেদের সমর্থকদের সুখস্মৃতি উপহার দেয়ার প্রত্যয়ের কথা জানিয়েছিল।
অপরদিকে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে উড়িয়ে দেওয়া জশ বাটলারের দলের লক্ষ্য ছিল জয়ের ধারা অব্যাহত রাখা। তবে দিনশেষে বিজয়ী আয়ারল্যান্ডের ভয়ডরহীন ক্রিকেটই। গ্রুপ ১ এর নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডকে বৃষ্টি আইনে ৫ রানে হারিয়ে গ্রুপ-১ এর সেমিফাইনালের লড়াই জমিয়ে তুললো আয়ারল্যান্ড।
মেলবোর্নে এদিন টস জিতে আগে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক জশ বাটলার। লক্ষ্য ছিল আগের ম্যাচে আফগানিস্তানের মতো অল্প রানেই গুটিয়ে দিবে আয়ারল্যান্ডকে। তবে কাউন্টি ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের বোলারদের গতি আর সুইং মোকাবেলা করতে অভ্যস্ত আইরিশ ব্যাটাররা শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক। ওয়েস্ট ইন্ডিজ বধের নায়ক পল স্টার্লিং ৮ বলে ১৪ করে সাজঘরে ফিরে গেলেও দ্বিতীয় উইকেটে অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবির্নি ও লরক্যান ট্যাকার দারুণ ব্যাটিং করতে থাকেন।
দ্বিতীয় উইকেটে দুজনের ৫৭ বলে ৮২ রানের জুটিতে বড় স্কোরের স্বপ্ন দেখতে থাকে আয়ারল্যান্ড। ইনিংসের ১২তম ওভারের শেষ বলে অদ্ভুতুড়ে রানআউটে লরক্যান ট্যাকার কাঁটা পড়লে দলীয় ১০৩ রানে আয়ারল্যান্ডের দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটে। এরপরের ওভারে মার্ক উডের বলে শূন্য করে ফেরেন কয়েক মাস আগে ভারতের বিপক্ষে ব্যাট হাতে ঝড় তোলা হ্যারি টেক্টর।
তরুণ কার্টিস ক্যামফার ও অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবির্নি ব্যাটে এগিয়ে যেতে থাকে আয়ারল্যান্ডের ইনিংস। তবে ১৬তম ওভারের তৃতীয় বলে অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবার্নি ফিরে গেলে যেন ধস নামে আয়ারল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনে।
১৫.৩ ওভার থেকে ১৯.২ ওভার এই ২৩ বলে মাত্র ২৫ রান তুলতেই বাকি ৭ উইকেট হারায়। ১৮০ রানের স্বপ্নে বিভোর থাকা আয়ারল্যান্ড থামে ১৯.২ ওভারে ১৫৭ রানে অলআউট হয়ে। অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবার্নি সর্বোচ্চ ৪৭ বলে ৬২ রান করেন। ইংল্যান্ডের মার্ক উড ও লিয়াম লিভিংস্টোন উভয়ে তিনটি করে উইকেট তুলে নেন।
১৫৮ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুর বোলিংয়ের মতোই বেহাল দশা ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনে। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই শূন্য করে আউট হয়ে যান অধিনায়ক জশ বাটলার। এর পরে আরেক ওপেনার অ্যালেক্স হেলস ও অলরাউন্ডার বেন স্টোকস ও ফিরে যান পাওয়ারপ্লের মধ্যেই। পাওয়ারপ্লের ছয় ওভার শেষে ইংল্যান্ডের রান দাঁড়ায় তিন উইকেট হারিয়ে ৩৭। এরপর ডেভিড ম্যালান ও হ্যারি ব্রুক মিলে স্থিতিশীলতা আনেন ইংল্যান্ডের ইনিংসে। উইকেট না হারালেও দ্রুত রান তুলতে না পারায় চাপে পড়তে থাকে ইংল্যান্ড।
একাদশ ওভারে হ্যারি ব্রুক ২১ বলে ১৮ করে ফিরলে চতুর্থ উইকেটের পতন ঘটে ইংল্যান্ডের। অলরাউন্ডার মঈন আলীর সাথে মিলে রান তোলার গতি বাড়ানোর চেষ্টায় থাকা ডেভিড ম্যালান ১৪তম ওভারের প্রথম বলে ব্যারি ম্যাকার্থির বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। ম্যালান ৩৭ বলে ৩৫ রানে শ্লথগতির ইনিংস খেলেন।
মঈন আলী ১২ বলে ২৪ করে ইংল্যান্ডকে ম্যাচে ফেরানোর চেষ্টা করলেও ইনিংসের ১৫তম ওভারে বৃষ্টি নামায় খেলা বন্ধ ঘোষণা করেন কর্তব্যরত আম্পায়াররা। শেষ পর্যন্ত খেলা পুনরায় চালু সম্ভব না হলে বৃষ্টি আইনে আয়ারল্যান্ড ৫ রানে জয়লাভ করে। আয়ারল্যান্ডের হয়ে জশুয়া লিটল ১৬ রান দিয়ে দুই উইকেট তুলে নেন।
আয়ারল্যান্ডের এই জয়ে সব দলের জন্য উন্মুক্ত হয়ে গেল সেমিফাইনালের দরজা। বেলা দুইটায় নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানের মোকাবেলা করবে নিউজিল্যান্ড।