বঙ্গবন্ধু টি-টুয়েন্টি কাপের গ্রুপ পর্বের খেলা শেষ। গ্রুপ পর্বের রোমাঞ্চকর অধ্যায় শেষে ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে প্লে-অফের দৃশ্যপটে এখন চার দল। বাদ পড়েছে মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী।
প্রথম কোয়ালিফায়ারে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের প্রতিপক্ষ জেমকন খুলনা এবং এলিমেনিটরে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে মাঠে নামবে বেক্সিমকো ঢাকা। শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এলিমেনিটরের ম্যাচটি শুরু হবে দুপুর সাড়ে বারোটায় এবং প্রথম কোয়ালিফায়ার মাঠে গড়াবে সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটায়।
চট্টগ্রাম ও খুলনার মধ্যেকার কোয়ালিফায়ারের বিজয়ী দল সরাসরি চলে যাবে ফাইনালে। আর হেরে যাওয়া দলটা অপেক্ষা করবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারের জন্য। অন্য দিকে বরিশাল ও ঢাকার মধ্যেকার এলিমিনেটরের হেরে যাওয়া দল সরাসরি বাদ পড়বে। আর জয়ী দল খেলবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার।
গ্রুপ পর্বের ৮ ম্যাচে ৪ জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় স্থানে ছিলো বেক্সিমকো ঢাকা আর ৮ ম্যাচে ৩ জয় নিয়ে ৪র্থ স্থানে থেকে শেষ চারে এসেছে ফরচুন বরিশাল। গ্রুপ পর্বে ঢাকা এবং বরিশাল ২ ম্যাচে মুখোমুখি হয়ে দুই দলই ১ করে ম্যাচে জয় লাভ করেছে। গ্রুপ পর্বে মুখোমুখি হওয়া প্রথম ম্যাচে ঢাকা জয় পেয়েছিলো ৭ উইকেটে এবং শ্বাসরুদ্ধকর ২য় ম্যাচে ২ রানে জিতে শেষ চার নিশ্চিত করেছিলো তামিমের দল।
এলিমেনিটরে বেক্সিমকো ঢাকার ব্যাটসম্যানদের ভিতর গত ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান নাঈম শেখের সাথে নজরে থাকবে মুশফিকুর রহিম ও ইয়াসির আলী। বল হাতে রবিউল ইসলাম ও মুক্তার আলীর সাথে ফ্রন্ট লাইটে থাকবেন রুবেল হোসেন এবং তরুণ শফিকুল ইসলাম। ৮ ম্যাচে ২৪৩ রান করে ঢাকার সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক নাঈম শেখ। সমান ম্যাচে ২১৯ রান করে ২য় স্থানে মুশফিক এবং ১ ম্যাচ কম খেলে ২১৬ রান নিয়ে তার পরের অবস্থানে ইয়াসির আলী। ৮ ম্যাচে ১৩ উইকেট নিয়ে ঢাকার পক্ষে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক মুক্তার আলী। ২ ম্যাচ কম খেলে ১২ উইকেট নিয়ে ২য় স্থানে রবিউল ইসলাম।
ফরচুন বরিশালের হয়ে ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেন টুর্নামেন্টের ২য় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তামিম ইকবাল। ৮ ম্যাচে তামিমের সংগ্রহ ৩০২ রান। বরিশালের হয়ে একমাত্র সেঞ্চুরিয়ান পারভেজ হোসেন ইমনের সাথে নজরে থাকবে আফিফ হোসেন এবং তৌহিদ হৃদয়ও। ৮ ম্যাচে ২৩১ রান করেছে ইমন। আর শেষ চারে ওঠার লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ঢাকার সাথেই ২৫ বলে অপরাজিত ৫০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন আফিফ আর ২২ বলে ৫১ করে অপরাজিত ছিলেন তৌহিদ। এই দুজনের জুটির কাছেই হেরেছিলো ঢাকা। বরিশালের বোলারদের ভিতর সবার চোখ থাকবে টুর্নামেন্টের একমাত্র হ্যাটট্রিক করা কামরুল ইসলাম রাব্বি ও সুমন খানের দিকে। রাব্বি শিকার করেছে ৮ ম্যাচে ১৪ উইকেট আর সুমন খানের শিকার ৬ ম্যাচে ৮ উইকেট।
দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথম কোয়ালিফায়ারে মাঠে নামবে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দল গাজি গ্রুপ চট্টগ্রাম এবং জেমকন খুলনা। গ্রুপ পর্বের ৮ ম্যাচে ৭ জয় নিয়ে শীর্ষে ছিলো চট্টগ্রাম। আর ৮ ম্যাচে ৪ জয় নিয়ে ২য় স্থানে ছিলো খুলনা। গ্রুপে নিজেদের মুখোমুখি হওয়া দুই ম্যাচেই জয় পেয়েছিলো লিটন সৌম্যরা।
জেমকন খুলনার ব্যাটসম্যানদের ভিতর চোখ থাকবে মাহমুদউল্লাহ ও জহুরুল ইসলামের উপর। ৮ ম্যাচে দুজনই ১৭৪ রান সংগ্রহ করে খুলনার সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ব্যাট হাতে টুর্নামেন্ট জুড়ে ব্যর্থ হলেও সবার দৃস্টি থাকবে সাকিব আল হাসানের উপরও। বল হাতে হাসান মাহমুদের সাথে ফ্রন্ট লাইটে থাকবেন সাকিব আল হাসান ও মাশরাফি বিন মর্তুজা।
টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান ও উইকেট সংগ্রাহক দুজনই গাজি গ্রুপ চট্টগ্রামের। ৭ ম্যাচে ৩০৬ রান করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান লিটন দাসের। ৭ ম্যাচে ১৬ উইকেট নিয়ে বোলিংয়ে শীর্ষে মোস্তাফিজুর রহমান। লিটন দাসের সাথে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে পারেন সৌম্য সরকার, মোসাদ্দেক হোসেন ও শামসুর রহমানও। ৮ ম্যাচে ২৫৩ রান করেছে সৌম্য, আর দলের প্রয়োজনে ব্যাট হাতে কয়েকটা ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে মোসাদ্দেক ও শামসুর রহমান। বল হাতে মোস্তাফিজের সাথে আলো কেড়ে নিতে পারেন মোসাদ্দেক ও নাহিদুল ইসলামও। মোসাদ্দেক ও নাহিদুল দুজনই টুর্নামেন্টে শিকার করেছেন ৭ উইকেট।