ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে একটি দলের হয়েই খেলে গেলেন তেরোটি মৌসুম। এতটা মৌসুমের সান্নিধ্যে সেই দলের সাথে আত্মার সম্পর্ক তৈরী হবে তাই স্বাভাবিক। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই অলরাউন্ডার আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে পথচলা শুরু করেছিলেন সেই ২০০৯ সালের নিলাম থেকে।
তারপর থেকেই মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের নিয়মিত মুখ ছিলেন পোলার্ড। এখানেই কাটিয়ে দিয়েছেন নিজের আইপিএলের জৌলুস ক্যারিয়ারটা। এবার ঘোষণা দিলেন আইপিএল থেকে অবসর নেয়ার। অর্থাৎ মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের নীল জার্সিতে আর মাঠে দেখা যাবে না চিরচেনা পোলার্ডকে।
তবে যেই দলের সাথে সম্পর্কটা এক যুগেরও বেশি তাঁদের সাথে তো হুট করে সম্পর্ক ছিন্ন করা সম্ভব নয়। অবশ্য তা পারলেন ও না পোলার্ড। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের প্রতি তাঁর ভালোবাসা এতটাই তীব্র যে সেখানকার ব্যাটিং কোচ হিসেবেই রয়ে গেলেন। আগামী মৌসুমে দলটির ব্যাটিং গুরু হিসেবে দেখা যাবে এই উইন্ডিজ ক্রিকেটারকে। দলটির প্রতি ভালোবাসার বহি:প্রকাশে পোলার্ড একবার বলেছিলেন, ‘ওয়ান্স এন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, অলওয়েজ এন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।’
তবে আইপিএলে খেলোয়াড়ী জীবনের ইতি টানলেও, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের আরেক শাখা সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফ্র্যাঞ্চাইজি দল (ইউএই লিগ) মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স এমিরেটসে খেলোয়াড় হিসেবে দেখা যাবে তাকে। যাইহোক পোলার্ড ছিলেন আইপিএলের অন্যতম সেরা বিদেশী খেলোয়াড়ের একজন। গেল মৌসুমেও ছয় কোটি রুপি দিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি দলটি পোলার্ডকে ধরে রেখেছিল। যদিও আইপিএলে তাঁর গত মৌসুমটা তেমন একটা ভাল যায়নি।
বিগত এতগুলো বছর ধরে কাইরন পোলার্ড মুম্বাইয়ের সাফল্যে বরাবরই অবদান রেখে এসেছেন। দলটির হয়ে আইপিএলে ১৮৯টি ম্যাচ খেলেছেন পোলার্ড। ২০১৩ সালে মুম্বাইয়ের প্রথম আইপিএলের শিরোপাজয়েও ব্যাট হাতে দারুণ অবদান রেখেছিলেন। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে পাঁচটি আইপিএল শিরোপা জয় এবং দু’টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফি জয়ী দলের অংশ ছিলেন পোলার্ড।
অবসরের বিবৃতিতে কাইরন পোলার্ড বলেন, ‘সিদ্ধান্তটি খুব সহজ ছিল না। কারণ আমি আরও কয়েক বছর খেলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমি বুঝি এই অবিশ্বাস্য ফ্রাঞ্চাইজি যারা এত কিছু অর্জন করেছে তাদের ট্রানজিশন প্রয়োজন ৷ আমি যদি মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে খেলতে না পারি, তবে আমি মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষেও খেলতে পারব না৷’
এদিকে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের মালিক মুকেশ আম্বানির সহধর্মিনী নীতা আম্বানি পোলার্ডের অবসরের ঘোষণায় বলেন, ‘তৃতীয় মৌসুম থেকে আমরা আনন্দ, পরিশ্রম এবং অশ্রু ভাগ করে এসেছি – সেই শক্তিশালী আবেগ মাঠে এবং মাঠের বাইরে সারাজীবনের বন্ধন তৈরি করে। পোলার্ড মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের এর সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। আমাদের পাঁচটি আইপিএল শিরোপা এবং দুইটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জয়ী দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলেন। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স মাঠে তাঁর জাদু মিস করবে। কিন্তু আমি আনন্দিত সে এমিরেটসের হয়ে খেলবে। আবার মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের ব্যাটিং কোচ হিসেবে তরুণ খেলোয়াড়দের পরামর্শদাতাও থাকছেন পোলার্ড। তাঁর নতুন যাত্রা আরও বেশি গৌরব, বিজয়, পূর্ণতা বয়ে আনুক। আমি তাঁর মঙ্গল কামনা করি।’