জিতলে ফাইনালে যাওয়ার জন্য আরো এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া; আর হারলে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়া-এমন ছিলো সমীকরণ। আর এই জায়গা থেকে প্রথম এলিমিনেটরে ইয়াসিরের ব্যাটিং ও শফিকুল এবং মুক্তার আলীর বোলিংয়ের কাছে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিলো ফরচুন বরিশাল। এদিকে ফাইনালে যাওয়ার জন্য আর মাত্র একটি ধাপ পার হতে হবে মুশফিকদের ঢাকা।
বঙ্গবন্ধু টি-টুয়েন্টি কাপের প্রথম এলিমিনেটরে ইয়াসির আলীর বীরত্বে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ৯ রানের জয় পেয়েছে বেক্সিমকো ঢাকা। বল হাতে ঢাকার জয়ে শফিকুল ইসলাম ও মুক্তার আলীর সাথে অবদান রেখেছে আল আমিন হোসেনও।
১৫১ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা বরিশালকে শুরুতেই চেঁপে ধরেন বেক্সিমকো ঢাকার বোলাররা। দলীয় ২২ রানে সাইফ হাসান ও ২৭ রানে পারভেজ হোসেন ইমনকে হারায় বরিশাল। সাইফ ১২ ও ইমন ২ রান করে বিদায় নেন। ইমনের বিদায়ের পর আফিফ উইকেটে এসে আক্রমণাত্মক খেললেও অন্য পাশে তামিম ছিলেন নিজের ছাঁয়া হয়ে। ২৮ বলে ২২ রানের ধীরগতির ইনিংস খেলে তামিম যখন প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তখনও জয়ের জন্য ৫৪ বলে ৯২ রান প্রয়োজন ছিলো বরিশালের।
আগের ম্যাচে আফিফ ও তৌহিদের দুর্দান্ত জুটিতে ম্যাচ জেতা বরিশাল এই দিনও তাকিয়ে ছিলো তাদের জুটির দিকেই। কিন্তু সময়ের দাবি মেটাতে পারেননি তৌহিদ হৃদয়। ১৬ বলে ১২ রান করে তৌহিদ আউট হলে ভাঙ্গে তাদের ৩৭ রানের জুটি। তৌহিদের বিদায়ের পরের বলেই এলবিডাব্লিউ এর ফাঁদে পড়েন সোহরাওয়ার্দী শুভ।
শেষ ৪ ওভারে জয়ের জন্য ৫৫ রানের সমীকরণ মেলাতে হতো বরিশালকে। বরিশালের ভরষা হয়ে উইকেটে থাকা আফিফ ৩৫ বলে ৫৫ রান করে বিদায় নিলে জয়ের স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় বরিশালের। শেষের দিবে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের ৮ বলে ১৫ ও মিরাজের ১০ বলে ১৫ রান বরিশালের হারের ব্যাবধানই কমিয়েছে শুধু। সুমন খান করেন ৫ রান। বেক্সিমকো ঢাকার পক্ষে শফিকুল ইসলাম ও মুক্তার আলী ৩ টি, আলআমিন হোসেন ২ টি এবং রবিউল ইসলাম নেন ১ টি উইকেট।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বেক্সিমকো ঢাকা। ইনিংসের ২য় ওভারে মিরাজের বলে তাসকিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ৫ রান করে ফিরে যান গত ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান নাঈম শেখ। নাঈমের বিদায়ের পর উইকেটে এসে রানের খাতা খোলার আগেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন আলআমিন হোসেন।সোহরাওয়ার্দী শুভর বলে সাব্বির রহমান ৮ রান করে বোল্ড হয়ে গেলে ২২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বেক্সিমকো ঢাকা। পাওয়ার প্লেতে ঢাকা সংগ্রহ করতে পারে মাত্র ২৪ রান।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে মুশফিকুর রহিম ও ইয়াসির আলীর জুটিতে প্রাথমিক বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠে মুশফিকের দল। বিপর্যয় কাটিয়ে ঢাকা যখন বড় স্কোরের স্বপ্ন দেখছে তখনই ঢাকার ইনিংসে সবচেয়ে বড় আঘাতটা করেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। নিজের বলে দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে ৩০ বলে ৪৩ রান করে পথের কাঁটা হয়ে থাকা মুশফিকুর রহিমকে বিদায় করে দেন রাব্বি। মুশফিকের বিদায়ের পর উইকেটে আক্রমণাত্মক শুরু করলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি আকবর আলী। ৯ বলে ২১ রান করে ফিরে যান তিনি।
টুর্নামেন্টে ইয়াসির আলীর ২য় অর্ধশতকে ভর করে লড়াইয়ের পুঁজি পায় বেক্সিমকো ঢাকা। ৪৩ বলে ৩ টি চার ও ২ টি ছয়ে ৫৪ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন ইয়াসির আলী। মুক্তার আলী ৬ ও রবিউল ইসলাম করেন ৫ রান। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৫০ রান সংগ্রহ করে ঢাকা। ফরচুন বরিশালের পক্ষে মেহেদী হাসান মিরাজ ও কামরুল ইসলাম ২ টি করে এবং তাসকিন ও সোহরাওয়ার্দী শুভ ১ টি করে উইকেট শিকার করেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বেক্সিমকো ঢাকা: ২০ ওভারে ১৫০/৮ (নাঈম- ৫, সাব্বির- ৮, আলআমিন- ০, মুশফিক- ৪৩, ইয়াসির- ৫৪, আকবর- ২১, মুক্তার- ৬, রবিউল- ৫, নাসুম- ১; মিরাজ- ২/২৩, কামরুল- ২/৪০, তাসকিন- ১/২১, শুভ- ১/৩২)
ফরচুন বরিশাল: ২০ ওভারে ১৪১/৯ (তামিম- ২২, সাইফ- ১২, পারভেজ- ২, আফিফ- ৫৫, তৌহিদ- ১২, শুভ- ০, মাহিদুল- ১৫, মিরাজ- ১৫, সুমন- ৫; শফিকুল- ৩/৩৯, মুক্তার- ৩/১৮, আলআমিন- ২/২২, রবিউল- ১/১৫)
ফলাফল: বেক্সিমকো ঢাকা ৯ রানে জয়ী।