শেষ সাত ম্যাচে ব্রাজিল টানা জয়ের মুখ দেখেছে। অন্যদিকে ছয় ম্যাচে হারেনি সার্বিয়া। বিশ্বকাপের আগে এই দুই দলের প্রস্তুতির এর থেকে ভাল চিত্র বোধ হয় আর হতে পারে না। আর এই দুই দল যখন বিশ্বকাপের মঞ্চে মুখোমুখি তখন লড়াইটা হবে দুর্দান্ত, সেটা আর নতুন করে বলে দেওয়ার কিছু নেই। এবারের বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম দাবিদার ব্রাজিল। সেটা ভাল করেই জানা সার্বিয়া। ম্যাচটা যে তাদের জন্যে কঠিন হতে চলেছে সে ধারণা নিশ্চয়ই ছিল সার্বিয়ার।
হয়েছেও তাই। ব্রাজিলের আক্রমণভাগে এবারে বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা সেটা নিয়ে বিতর্ক করবার সুযোগ নেই। আর এই আক্রমণভাগ বেশ ভুগিয়েছে সার্বিয়ানদের রক্ষণকে। তবে তাঁরাও নাছোড়বান্দা। সহজের হাল ছেড়ে দেবার কোন মানসিকতাই নেই। রক্ষণে ভাঙ্গন ধরিয়েছে নেইমার, ক্যাসেমিরোদের পাস। তবে সার্বিয়ান গোলরক্ষক মিলিংকোভিচ-স্যাভিচ তাদের গোলবার রেখেছেন প্রথমার্ধে অক্ষত।
ম্যাচের আধিপত্য অবশ্য ব্রাজিলই দখলে রেখেছে একেবারে শুরু থেকেই। ৩-৪-৩ ফরমেশনে খেলা সার্বিয়া মূলত কাউন্টার অ্যাটাকের উপরই নির্ভর করেছে প্রথম অর্ধে। বেশকিছু আক্রমণের সূত্রপাত ঘটালেও শেষ অবধি খেই হারিয়ে ফেলেন মিত্রোভিচ, তাদিচরা। গোলশূন্য অবস্থায় দুই দল ড্রেসিং রুমের দিকে অগ্রসর হয়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণের ধার বাড়িয়ে দেয় সেলেসাওরা। একের পর এক আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়ে সার্বিয়ান রক্ষণ। ম্যাচের দুই তৃতীয়াংশ সময় অবধি ব্রাজিলকে আটকে রাখতে পেরেছিল সার্বিয়া। তবে ব্রাজিলের ক্রমাগত আক্রমণ দম ফেলবার সুযোগটুকু না দিয়ে ম্যাচে ৬২ মিনিটে গোল আদায় করে নেয়। নেইমারে পা থেকে ছুটে যাওয়া বলে সজোরে শ্যুট চালান ভিনিসিয়াস জুনিয়র।
সে শটও ফিরিয়ে দেন মিলিংকোভিচ-স্যাভিচ। তবে রিবাউন্ড হওয়া বল খুঁজে নেয় রিচার্লিসনের পা। আর এদফা কোন ভুল করেননি ব্রাজিলের এই নাম্বার নাইন। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। তাতে অবশ্য ব্রাজিলের স্বস্তি এসে পড়ার কথা নয়। আসেওনি। ব্রাজিল আক্রমণ চালাতে থাকে। ওদিকে আক্রমণে ধার বাড়িয়ে দেয় সার্বিয়া। উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে কাতারের দোহা থেকে মধ্যরাতের ঢাকাতেও।
আর সে উত্তেজনার পারদে মুগ্ধতার পরশ বুলিয়ে দেয় ভিনিসিয়াস ও রিচার্লিসন জুটি। ভিনিসিয়াসের আউটার ফুটের ক্রস। সেটা রিসিভ করেই রিচার্লিসনের অ্যাক্রোব্যাটিক বাইসাইকেল গোল। স্রেফ তাকিয়ে দেখা ছাড়া আর যেন কিছু করারই ছিল না সার্বিয়ার রক্ষণভাগের। অসাধারণ সেই গোল সার্বিয়াকে ছিটকে দেয় ম্যাচ থেকে।
এরপরও ব্রাজিল আক্রমণ চালিয়ে যেতে থাকে বিরতিহীনভাবে। শেষ অবধি আর কোন গোল না হলে, ২-০ গোলের জয় নিয়েই নিজেদের হেক্সা মিশন শুরু করে সেলেসাওরা।