পরিসংখ্যানে মেক্সিকোর চেয়ে স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে ছিল আর্জেন্টিনা। ৩৫ বারের মোকাবেলায় মেক্সিকানরা জিতেছিল মাত্র পাঁচটি ম্যাচে। আর এই জয়ের কোনোটাই আবার বিশ্বকাপের মঞ্চে নয়।
বিশ্বকাপে এর আগে তিনবার মেক্সিকোর মুখোমুখি হয়েছিল আর্জেন্টিনা। সেখানে প্রতিবারই ম্যাচ শেষে জয়ী দলের নামটা আর্জেন্টিনা। তবে, এবারের প্রতিপক্ষটা ঠিক মেক্সিকো ছিল না। এবারে প্রতিপক্ষ ছিল খোদ – ভয় আর শঙ্কা। তার ওপর সামনে দাঁড়িয়ে এক মূর্তিমান আতঙ্ক – মেক্সিকোর গোলরক্ষক গিলের্মো ওচোয়া।
কারণ, লিওনেল মেসি কিংবা অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ারা ঠিক ভাল করেই জানতেন এবার হারা বা ড্র করার অর্থই হল বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়া। আর অন্তত লিওনেল মেসি এই স্বপ্নটাকে এত সহজে হাতছাড়া করতে রাজি হবেন কেন। এটাই যে তাঁর শেষ বিশ্বকাপ।
প্রথমার্ধে কোনো গোল এল না, যখন তখন নিশ্চয়ই স্নায়ুর চাপা অনেক বেশি ছিল মেসিদের। অবশ্য, ডেডলকটা মেসিই ভাঙেন ম্যাচের। ৬৪ মিনিটে দলের হয়ে প্রথম গোলটা করলেন তিনি। বিশ্বকাপের স্বপ্নটায় যেন একটু বাতাস লাগল।
অবশ্য, ম্যাচে মাঠে নামার মধ্য দিয়েই একটা রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন মেসি। বিশ্বকাপে ম্যাচের সংখ্যায় ফুটবলের রাজপুত্র ডিয়েগো ম্যারাডোনাকে ছুঁলেন লিওনেল মেসি। বিশ্বকাপে ২১ নম্বর ম্যাচ খেলে ফেললেন মেসি। একই সংখ্যক ম্যাচ ম্যারাডোনাও খেলেছেন।
বলা উচিৎ, অবশ্যই বিশ্বকাপের মঞ্চে তাঁর অন্য়তম কঠিন ম্যাচ ছিল এটা। যদিও, একবার গোল পেয়ে যাওয়ায়, বাকি ম্যাচটা তাঁর ও আর্জেন্টিনার জন্য সহজই ছিল বলা যায়। ম্যাচের ৮৭ মিনিটে আবারও লক্ষ্যভেদ করে ব্যবধানটা বাড়িয়ে দেন এনজো পেরেজ।
নিজেদের প্রথম ম্যাচেই গ্রুপের সবচেয়ে হজস প্রতিপক্ষ সৌদি আরবের কাছে বাজে ভাবে হেরে যায় লিওনেল মেসিরা। সৌদি আরব জেতে ২-১ ব্যবধানে। সেই হারের পর ব্যাকফুটেই ছিল লিওনেল মেসির দল। ফলে, পরের দুই ম্যাচে জেতার কোনো বিকল্প নেই। এখন মেক্সিকোর বিপক্ষে ২-০ গোলের জয়ে প্রথম যুদ্ধটা সফল ভাবে সম্পন্ন হল।
আগের ম্যাচের মত এবারও দল হিসেবে নিজেদের অবশ্য আর্জেন্টিনা গুছিয়ে নিতে পারেনি। বিশেষ করে, প্রথমার্ধে দলটা যাচ্ছেতাই ফুটবলই খেলেছে। তবে, শেষ ২৫ টা মিনিট নিজেদের খেলায় প্রাণ ফেরায় তাঁরা। হঠাৎ করে পাওয়া মেসির গোলটাই সব পাল্টে দেয়।
তবুও দ্বিতীয় পর্বের টিকেট এখনও নিশ্চিত নয় আর্জেন্টিনার। শেষ যুদ্ধ ৩০ নভেম্বর রাত একটায়। প্রতিপক্ষ পোল্যান্ড। আপাতত সেই রাতের অপেক্ষা করা যাক।