অঘটনের বিশ্বকাপে অনেক কিছুই দেখা হয়েছে। কিন্তু মরক্কো শেষ চারে খেলবে এটা বোধহয় ভাবেনি কেউ। কিন্তু ফুটবল তো এমনই।রূপকথার মত বিশ্বকাপের শেষ চারে পৌঁছালো মরক্কো। গল্পের শেষটাও বোধহয় দেখে ফেললেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ১-০ গোলের জয়ে অঘটনের বিশ্বকাপে আরো নতুন পালক যোগ করলো আফ্রিকান সিংহরা।
ম্যাচের শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রণ নেয় পর্তুগাল। খেলা গুছিয়ে নিতে কিছুটা সময় নিলেও এরপর আক্রমণে উঠতে থাকে পর্তুগাল। একের পর এক আক্রমণে উঠলেও ইস্পাত কঠিন মরক্কোর রক্ষণভাগের কাছে প্রতিহত হচ্ছিলো প্রতিটি আক্রমণ। গোলের বেশ কয়েকটি সহজ সুযোগ মিস করেন গঞ্জালো রামোস,ফেলিক্সরা।
প্রতি আক্রমণে সুযোগ তৈরি করছিলো মরক্কোও। তবে এন-নাসিরির হেডও হয় লক্ষভ্রষ্ট। খেলার স্রোতের বিপরীতে ৪২ মিনিটে খেলায় লিড নেয় আফ্রিকার প্রতিনিধিরা। বাঁ প্রান্ত থেকে আতিয়াত-আল্লাহ’র দুর্দান্ত ক্রস ঠেকাতে এগিয়ে এসছিলেন পর্তুগিজ গোলরক্ষক দিয়েগো কস্তা। কিন্তু তার আগেই দুর্দান্ত হেড সেভিয়া স্ট্রাইকার এন-নেসিরি।
৪৫তম মিনিটেই সমতা ফেরাতে পারত পর্তুগিজরা। তবে ব্রুনো ফার্নান্দেজ এর শট বারে লেগে ফিরে এলে ১-০ গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যায় পর্তুগাল। বল পজিশনে পর্তুগাল অনেকটা এগিয়ে থাকলেও প্রতি আক্রমণে ক্ষুরধার ছিলো মরক্কো।
দ্বিতীয়ার্ধে বদলি হিসেবে নামেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। দ্বিতীয়ার্ধেও চলতে থাকে পর্তুগালের একের পর এক আক্রমণের মহরা। কিন্তু গোছানো আক্রমণের ফল পাচ্ছিলো না তারা। হোয়াও ফেলিক্স, ব্রুনো ফার্নান্দেজদের আক্রমণ একের পর এক প্রতিহত হলে খেলায় ফেরা হয়নি পর্তুগাল। পর্তুগালের আক্রমণ যেন ভাগ্য আর মরক্কো গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনোর বীরত্বের কাছে পরাজিত।
ম্যাচের ৮৩ মিনিটে হোয়াও ফেলিক্স এর দুর্দান্ত শট বোনো অতিমানবীয় সেভ করলে এবারও খেলায় ফিরতে পারেনি রোনালদো, ফেলিক্সরা। ম্যাচের যোগ করা সময়ে আবারো মরক্কোর ত্রাতার ভূমিকায় বোনো। এবার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর শট ঠেকিয়ে আবারো মরক্কোর জয়ের পথ তৈরি করেন বোনো। খেলার বাকি সময় পর্তুগাল খেলায় সমতা ফেরাতে ব্যর্থ হলে ১-০ গোলের জয়ে শেষ চারে পৌঁছায় মরক্কো।
অঘটনের বিশ্বকাপের চমক দেখানো যেন থামছেই না। নিজেদের ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা দিন পেলো মরক্কো। প্রথমবারের মত সেমিফাইনালে আফ্রিকান অদম্য সিংহরা। ফাইনালে যাবার লড়াইতে তাদের প্রতিপক্ষ ফ্রান্স-ইংল্যান্ড শেষ কোয়ার্টার ফাইনালের বিজয়ীরা।