২০১০ বিশ্বকাপের শতভাগ সফল ভবিষ্যদ্বাণী করা অক্টোপাস পলের কথা মনে আছে নিশ্চয়? দক্ষিণ আফ্রিকায় হওয়া সে বিশ্বকাপে কী হইচইটাই না ফেলে দিয়েছিল এই অক্টোপাস। বিশ্বকাপ জয়ের পরে এই প্রাণীটিকে জাতীয় সম্পদ হিসেবে চেয়েছিল স্পেন। আর কয়েকটা দেশ বাড়তি উন্মাদনায় নাগরিকত্বও দিতে চেয়েছিল পলকে। যাহোক, সেই ‘পল’ এখন আর পৃথিবীতে নেই। ৩৩ মাসের জীবনে সে বছরই মারা গিয়েছিল এই প্রাণীটি।
২০১০ এর পর কাতার বিশ্বকাপ দিয়ে তিন তিনটি বিশ্বকাপ পেরিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু অক্টোপাস পলের মত প্রেডিকশন আর কেউই দিতে পারেনি কোনো বিশ্বকাপে। অন্তত শতভাগ নির্ভুল তো হয়-ই নি। কিন্তু ২০২২-এ এসে দেখা মিল ইগর স্টিমাচের। না। তিনি পল অক্টোপাসের মত প্রাণী নন।
তিনি তো রীতিমত রক্ত মাংসের মানুষ। ভারত জাতীয় ফুটবল দলের কোচের দায়িত্ব পালন করা এই ক্রোয়াট নাগরিক এ বিশ্বকাপের প্রত্যেকটি কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে সঠিক প্রেডিকশন করেছেন। তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী করা চারটি দলই এবার সেমিফাইনালে জায়গা পেয়েছে।
২০২২ বিশ্বকাপ চলাকালীন স্পোর্টস ১৮ স্টুডিও চ্যানেলের এক্সপার্ট প্যানেলে ছিলেন ইগর স্টিমাচ। তাঁর সাথে সেই প্যানেলে ছিলেন ওয়েন রুনি, লুই ফিগোর মত কিংবদন্তিরা। কিন্তু প্রেডিকশনের দিক দিয়ে স্টিমাচ পেছনে ফেলেছেন এই কিংবদন্তিদেরও। কোয়ার্টার ফাইনালের আগে স্টিমাচ প্রেডিকশন দিয়েছিলেন, সেমিফাইনালে উঠবে ক্রোয়েশিয়া, আর্জেন্টিনা, মরক্কো আর ফ্রান্স। স্টিমাচের সেই ভবিষ্যদ্বাণী একদম অক্ষরে অক্ষরে মিলেছে।
আর প্রেডিকশন শতভাগ নির্ভুল হওয়ার পর ইগর স্টিমাচ নিজেও একটা টুইট করেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘আমার প্রেডিকশন সাধারণত ভুল হয় না। যদিও এভাবে ধারণা করে বলা পছন্দ না আমার। তবে আমি যা বলেছি তা আমার মন এবং হৃদয় থেকে বলেছি।’
বর্তমানে ভারতের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করছেন এই ইগর স্টিমাচ। খেলোয়াড়ি জীবনে খেলেছেন বিশ্বকাপও। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়া স্কোয়াডের অন্যতম ডিফেন্ডার ছিলেন স্টিমাচ। ক্রোয়েশিয়ার বয়সভিত্তিক দলেও স্টিমাচের অবদান অনেক। তাঁর হাত ধরেই, ক্রোয়েশিয়ার এ সোনালি প্রজন্মের উত্থান হয়েছিল। ইভান রাকিটিচ, পেরিসিচ, লুকা মদ্রিচ তাঁর সরাসরি ছাত্র ছিল। তাই ক্রোয়েশিয়ার এ বিশ্বকাপ দলটার অগ্রগতির আড়ালের নায়ক ছিলেন স্টিমাচ।