বিশ্বকাপ ফুটবলের জ্বরে কাঁপছে গোটা বিশ্ব। দুদিন বাদেই ফাইনালে ফ্রান্সের মুখোমুখি হবে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। ফুটবলের সেই ডামাঢোলের মাঝেই ক্রিকেটে ঘটে গেছে এক অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ডের ঘটনা। অস্ট্রেলিয়ান ফ্যাঞ্চাইজি লিগ বিগ ব্যাশে অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে মাত্র ১৫ রানে অলআউট হয়েছে সিডনি থান্ডার্স যা কিনা টি টোয়েন্টি ইতিহাসেরই সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর।
অ্যাডিলেডের দেয়া ১৪০ রান তাড়া করতে নেমে পাওয়ারপ্লে শেষ হবার এক বল আগে মাত্র ১৫ রানে গুটিয়ে যায় সিডনি। দুই পেসার হেনরি থর্নটন এবং ওয়েস অ্যাগারের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি সিডনির ব্যাটাররা। থর্নটন তিন রানে নেন পাঁচ উইকেট, অন্যদিকে অ্যাগারের সংগ্রহ ছয় রানে চার উইকেট। সিডনির পক্ষে সর্বোচ্চ রান করেন পেসার ব্রেন্ডন ডগেট, ব্যাটের কানায় লেগে চার হওয়া ইনিংসের একমাত্র বাউন্ডারিও এসেছে তাঁর ব্যাট থেকেই।
টস জিতে ব্যাট করতে নামা অ্যাডিলেডের শুরুটাও ভালো হয়নি। পাওয়ার প্লেতেই তিন উইকেট হারিয়ে বসে তাঁরা। ক্রিস লিনের ৩৬ এবং কিউই অলরাউন্ডার কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের ৩৩ রানে ভর করে ১৩৯ রানের মাঝারি মানের সংগ্রহ পায় সফরকারীরা। অ্যালেক্স হেলস, রাইলি রুশো, জ্যাসন সাঙ্গাদের নিয়ে গড়া সিডনির ব্যাটিং লাইন আপ সহজেই ম্যাচ জিতে নেবে প্রথম ইনিংস শেষে এমনটাই ভেবেছিল সবাই।
কিন্তু সিডনি ব্যাটিং এ নামতেই যেন বোলিং স্বর্গে পরিণত হয় বাইশ গজ। থর্নটন এবং অ্যাগারের উপর যেন ভর করেন ডেনিস লিলি এবং গ্লেন ম্যাকগ্রা। তাঁদের গতি আর বাউন্সে অসহায় আত্নসমর্পন করেন প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানরা।
এর আগে প্রথম ওভারেই উইকেটকিপার ম্যাথু গিল্কসকে ফেরান স্পিনার ম্যাথু শর্ট। এরপর জুটি বেঁধে প্রতিপক্ষকে ধবংসের লীলায় মাতেন এই দুই পেসার। সিডনির পাঁচ ব্যাটসম্যান ফেরেন রানের খাতা খোলার আগেই, মাত্র ৩৫ বলের শেষ হয়ে যায় তাঁদের ইনিংস। ১৫ রানের মাঝে তিন রান আসে অতিরিক্ত থেকে, অন্যথায় আরো কম রানেই শেষ হয়ে যেতো সিডনির ইনিংস।
নিজের ২৬ তম জন্মদিনটা পাঁচ উইকেট নিয়ে স্মরণীয় করে রাখলেন থর্নটন। তাঁর বলে এক হাতে রাইলি রুশোর ক্যাচটা তালুবন্দি করে দারুণ শুরু এনে দেন শর্ট। সেই আত্নবিশ্বাসেই কিনা একে একে তুলে নেন জ্যাসন সাঙ্গা, অ্যালেক্স রস, অলিভার ডেভিডস, ডগেটের উইকেট। তাঁকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন আরেক পেসার অ্যাগার, দারুণ এক ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন অ্যালেক্স হেলসকে।
ম্যাচশেষে উচ্ছ্বসিত থর্নটন বলেন, ‘এমনকি আমার বাড়ির উঠানের খেলাতেও এরচেয়ে ভালো বোলিং ফিগার পাইনি। আমি এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না। এটা সত্যিই অসাধারণ!’
টি টোয়েন্টির ইতিহাসে সর্বনিম্ন রানে অলআউটের রেকর্ড এটাই। এর আগে ২০১৯ সালে চেক প্রজাতন্ত্রের বিপক্ষে ২১ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল তুরস্ক।