কারো কাছে তিনি সাইলেন্ট কিলার কিংবা কারো কাছে তিনি ক্যাপ্টেন কুল। তিনি সদ্যই প্রথমবারের মতো ক্যাপ্টেন হিসেবে ট্রফি জয়ের স্বাদ পাওয়া মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
অধিনায়ক হিসেবে আরেকটা অর্জনের পর আবেগে ভেসে যাচ্ছেন না রিয়াদ। বরং বঙ্গবন্ধু টি-টুয়েন্টি কাপের ফাইনালে মাহমুদুল্লাহর জেমকন খুলনা ৫ রানে পরাজিত করে গাজী গ্রুপ চট্রগ্রামকে। ট্রফি জয়ের পরও অধিনায়ক প্রশংসায় ভাসালেন সতীর্থদের। আলাদা করে কৃতজ্ঞতা জানালেন তিনি টুর্নামেন্টের শেষ ভাগে দলে যুক্ত হওয়া অভিজ্ঞ পেসার মাশরাফি বিন মুর্তজাকে।
দলের সবাইকে প্রশংসা করে রিয়াদ বললেন, ‘সঠিক সময়ে ছেলেরা নিজেদের সত্যিকারের চরিত্র মেলে ধরেছে। এর চেয়ে বেশি কিছু চাইতে পারতাম না। যেভাবে ব্যাটসম্যানরা, বোলাররা, বিশেষ করে আজকে ফিল্ডার হৃদয় উজার করে খেলেছেন, এজন্যই লক্ষ্য পূরণ করতে পেরেছি আমরা।’
সেই সাথে দলে থাকা বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফির প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানিয়ে রিয়াদ বলেছেন, ‘ছেলেদেরকে ধন্যবাদ। বিশেষ কৃতজ্ঞতা ম্যাশের প্রতি। তিনি দারুণভাবে পাশে থেকেছেন, তার ক্যারিয়ারের অভিজ্ঞতা থেকে আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন সিদ্ধান্ত নিতে। তাকে পাওয়া ছিল অনেক বড় প্রাপ্তি।’
ফাইনালে দলের জয়ে একদম সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। ৪৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে দল যখন খাদের কিনারায় ঠিক ওই মূহুর্তে ক্রিজে এসে সাইলেন্ট কিলারের মতো খেললেন ৮টি চার এবং ২টি ছক্কার সাহায্যে ৪৮ বলে ৭০ রানের অসাধারণ এক ইনিংস।
পুরো টুর্নামেন্টে সেভাবে জ্বলে উঠতে না পারলেও ফাইনালে দেখালেন তার বড় ম্যাচে পারফরম্যান্স করার ক্যারিশমা। ক্যাপ্টেনের এই ইনিংসে ভর করে খুলনা পায় ১৫৫ রানের লড়াই করার মতো পুঁজি।এই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৫০ রানে থেমে যায় গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের ইনিংস। অবশেষে ৫ রানে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের শিরোপা জিতে নেয় জেমকন খুলনা।
পুরো ম্যাচে ঠান্ডা মাথায় ব্যাট হাতে ম্যাচ সেরা ইনিংস খেলে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তা ছিলো এককথায় অসাধারণ। ক্যাপ্টেন তার অনবদ্য ইনিংসের জন্য ফাইনালের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন। তবে নিজেকে নিয়ে খুব একটা কথা বলতে চাইলেন না অধিনায়ক, ‘প্রথম কয়েক ম্যাচে আমি যেভাবে ব্যাট করতে চেয়েছি, তা পারিনি। ভালো লাগছে, আজ দলের জয়ে অবদান রাখতে পেরেছি।’
প্রথম ৯ ম্যাচে সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেননি মাহমুদুল্লাহ। প্রথম ৯ ম্যাচে মাত্র ২০৪ রান করেন। ফাইনালে ৭০ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে পুরো টুর্নামেন্টে ৩৪.২৫ গড়ে ২৭৪ রান করে রান সংগ্রাহকের তালিকায় ৮ম স্থানে থেকে টূনামেন্ট শেষ করেন।হয়তোবা নিজের সেরাটা ফাইনালের জন্যই জমিয়ে রেখেছিলেন। তাই তো ফাইনালে ম্যাচ জয়ী ইনিংস কিংবা প্রথমবারের মতো ক্যাপ্টেন হিসেবে ট্রফি জয়ের পরও মাহমুদুল্লাহর মাঝে ছিলো না বাড়তি কোনো উচ্ছ্বাস।
এরকম একজনের হাতেই তো শোভা পায় এরকম শিরোপা। এজন্যই বুঝি কারো কাছে উনি সাইলেন্ট কিলার কিংবা কারো কাছে উনি ক্যাপ্টেন কুল।