তিন বারের চ্যাম্পিয়ন দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। একটু দেরিতেই তাদের অন্তর্ভুক্তি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে। তবুও নিজেদের দারুণ দক্ষতা আর খেলোয়াড়দের অসাধারণ নৈপুন্যে বিপিএলের তিন বারের চ্যাম্পিয়নের মুকুট নিজেদের করে নিয়েছিল ভিক্টোরিয়ান্স। ‘উইন অর উইন’ – এই স্লোগান নিয়ে আরও একবার প্রস্তুত বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
২০১৬ সালের বিপিএল দিয়ে যাত্রা শুরু করা দলটা প্রতিবারই চমক দেখিয়েছে। চ্যাম্পিয়েন হওয়া ছাড়াও দলটির ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে কোচিং স্টাফদের প্রশংসা হয়েছে প্রতিটা আসরেই। তাছাড়া বিখ্যাত ও কার্যকর বিদেশি খেলোয়াড়দের দলে ভেড়ানোর একটা পথিকৃৎ ধরা যেতে পারে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে। এবারও তাঁর ব্যত্যয় ঘটছে না।
আগামী ছয় জানুয়ারি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও সিলেট স্ট্রাইকার্সের ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে বিপিএলের নবম আসর। বাংলাদেশের ক্রিকেট পাড়ায় তাই সাজসাজ রব। প্রতিটা দলই নিজেদের খেলোয়াড়দের নিয়ে পরিচর্যা শুরু করে দিয়েছে। সেদিক থেকে পিছিয়ে নেই গেলবারের চ্যাম্পিয়নরাও। মিরপুর অ্যাকাডেমি মাঠে জোরেসরেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে কোচ সালাউদ্দিনের শীর্ষ্যরা।
এবারের কুমিল্লা দলটাও সমীহ আদায় করে নেওয়ার মতই। দলটা বেশ ভারসাম্যপূর্ণই বলা চলে। নবম বিপিএলের চ্যাম্পিয়ন হবার দৌড়ে ভালভাবেই এগিয়ে থাকছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। দলের ব্যাটিং কিংবা বোলিং সব খানেই রয়েছে বেশ ভারিভারি নাম। বাংলাদেশ জাতীয় দলের নিয়মিত মুখ লিটন দাস ও মুস্তাফিজুর রহমান থাকছেন দলটিতে। তাদেরকে সঙ্গ দিতে দলে আছেন শাহীন শাহ আফ্রিদি ও মোহাম্মদ রিজওয়ান।
ফর্মের তুঙ্গে থাকা লিটন দাসের সাথে ওপেনিংয়ে অভিজ্ঞ মোহাম্মদ রিজওয়ান থাকবেন সেটা প্রায় নিশ্চিত। অন্যদিকে বোলিং প্রান্তে মুস্তাফিজ আর আফ্রিদি মিলে তাণ্ডব করবেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এছাড়া দলটিতে আগের আসরের চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক ইমরুল কায়েস থাকছেন। সেই সাথে বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে খুশদিল শাহ রয়েছেন।
অন্যদিকে অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার হিসেবে জিম্বাবুয়ের শেন উলিয়ামসনের সাথে আফগানিস্তানের মোহাম্মদ নবি দলের ভারসাম্য রক্ষায় দারুণ ভূমিকা পালন করবে। তাছাড়া মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের সাথে, দেশি তরুণ খেলোয়াড় হিসেবে থাকছেন, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, জাকির আলি অনিক, মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ, নাঈম হাসান, তানভির ইসলামরা ।
এছাড়া ভারতের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক উন্মুক্ত চাঁদও থাকছেন এবার কুমিল্লার ডেরায়। এতসব ভারি নামকে সামাল দেওয়ার দায়িত্বটা যথারীতি থাকছে দেশসেরা কোচ সালাউদ্দিনের উপর। তাঁর কাছে রয়েছে জাদুর কাঠি। সে কাঠির ছোঁয়ায় যেকোন সাদামাটা দলও দারুণ সব কীর্তি গড়ে। এবার তো কুমিল্লার দলটি অন্যতম সেরা দল। এই নাম গুলো ছাড়াও চ্যাডউইক ওয়ালটন, ব্র্যান্ডন কিং, ও ইংলিশ ক্রিকেটার জশ কবদের মত খেলোয়াড়রাও থাকছেন।
একঝাঁক তারকা ক্রিকেটারদের পসরা সাজিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ঢাকার সাথে চ্যাম্পিয়নশিপের হেড-টু-হেড লড়াইয়ে সমানতালে এগিয়ে চলা কুমিল্লা এবার চাইছে সবাইকে ছাড়িয়ে যেতে। চতুর্থবারের মত শিরোপা নিজেদের করে নিয়ে বসতে চাইছে রাজার আসনে। তেমন হলে, বিপিএলের সবচেয়ে সফল দলে পরিণত হবে ফ্রাঞ্চাইজিটি। যদিও ইতোমধ্যেই সেই অর্জনটা তাদেরই দখলে।
একটানা একটি ফ্রাঞ্চাইজির অধীনে সফলতা পায়নি কোন দল। ঢাকাও তিনবার শিরোপা জিতেছে ভিন্ন দুই ফ্রাঞ্চাইজি মালিকের অধীনে। তবুও নিজেদেরকে ছাপিয়ে যাওয়ার তাড়না নিয়েই মাঠ মাতাতে নামবে কুমিল্লা। এবারের বিপিএলের জৌলুশ পুরোটাই যেন কুমিল্লার হাত ধরেই আসতে চলেছে টাইগার ক্রিকেটে। তবে ১৬ ফেব্রুয়ারির ফাইনালে কারা জিতে নেই চ্যাম্পিয়নের ট্রফি সেটা সময়ই বলে দেবে।