২০২২ সালে নানা উত্থান পতনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট। বছর শুরু হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ হার দিয়ে, এরপর বিরাট কোহলি সরে দাঁড়িয়েছেন অধিনায়কত্ব থেকে। দ্বিপাক্ষিক সিরিজগুলোতে সাফল্যের হার বজায় থাকলেও আইসিসির বড় আসরগুলোতে আরো একবার ব্যর্থ ভারত। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে দশ উইকেটের বড় হারে বিদায় নিয়েছে রোহিত শর্মার দল।
বিগত বছরে বেশ কয়েকজন তরুণের উত্থান দেখেছে ভারতীয় ক্রিকেট। ইনজুরি আর সিনিয়র ক্রিকেটারদের বিশ্রামের সুবাদে দলে সুযোগ পেয়েছেন তরুণ সব মুখ। প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টির নেতৃত্বভার বর্তেছিল হার্দিক পান্ডিয়ার কাঁধে। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, লোকেশ রাহুলদের ছাড়াই এশিয়ার চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে ভারত।
লাল বলের ক্রিকেটে অবশ্য আরো একবার টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলার কক্ষপথেই আছে ভারত। বাংলাদেশের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতেই ফিরেছে লোকেশ রাহুলের দল। তবে নতুন বছরে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বড় পরীক্ষাই দিতে হবে তাঁদেরকে। নতুন বছরে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ওঠার লড়াই ছাড়াও ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ রয়েছে ভারতের।
জানুয়ারিতে ঘরের মাঠে শ্রীলংকার বিপক্ষে তিনটি করে টি-টোয়েন্টি এবং এক দিনের ম্যাচ দিয়ে বছর শুরু করবে ভারত। যদিও সেই সিরিজে ইনজুরির কারণে অনিশ্চিত নিয়মিত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। এরপর ভারত সফরে আসবে নিউজিল্যান্ড। কিউইদের বিপক্ষেও সূচিটা আগের মতোই, তিন টি-টোয়েন্টির পাশাপাশি রয়েছে তিনটি এক দিনের ম্যাচও।
এরপর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে ভারত সফরে আসবে প্যাট কামিন্সের অস্ট্রেলিয়া। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনাল খেলতে দুই দলের সামনেই জয়ের বিকল্প নেই। চার টেস্টের পাশাপাশি তিন ম্যাচের ওডিয়াই সিরিজে মুখোমুখি হবে দুই দল।
মার্চের শেষ দিকে শুরু হবে ফ্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর আইপিএল। বিশ্বজুড়ে থাকা টি-টোয়েন্টির মহাতারকাদের এই মিলনমেলা চলবে প্রায় দুই মাসের বেশি সময় জুড়ে। এই সময়টাতে আন্তর্জাতিক কোনো সূচি নেই ভারতের। এরপরই জুন মাসে মহাপ্রতীক্ষীত সেই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনাল। যদি ভারত এবারও কোয়ালিফাই করতে পারে, তবে তাঁদের সামনে সুযোগ থাকবে পুরনো আক্ষেপ ঘুচিয়ে ফেলার। ফাইনালে তাঁদের প্রতিপক্ষ হতে পারে অস্ট্রেলিয়া, যারা কিনা বর্তমানে রয়েছে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে।
এরপরই জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যাবে ভারতীয় দল। সিরিজের সময়সূচী চূড়ান্ত না হলেও দুই টেস্টের পাশাপাশি তিনটি করে টি-টোয়েন্টি এবং ওডিয়াই খেলার কথা রয়েছে ভারতীয় দলের। সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানের মাটিতে বসবে এশিয়া কাপের আসর। মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের এই আসর এবার অনুষ্ঠিত হবে ওডিয়াই ফরম্যাটে। যদিও রাজনৈতিক বৈরিতার কারণে ভারতের এই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ এখনো অনিশ্চিত।
অক্টোবরে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিতে ভারত সফরে তিনটি ওডিয়াই খেলতে আসবে অজিরা। এরপরই শুরু হবে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ডামাডোল। এক যুগ পর আরো একবার বিশ্বকাপের আসর বসবে ভারতের মাটিতে। মহেন্দ্র সিং ধোনির সেই বিশ্বকাপ জয়ের স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে মরিয়া হয়ে থাকবেন রোহিত-কোহলিরা।
নভেম্বরে তৃতীয়বারের মত ভারত সফরে আসবে অস্ট্রেলিয়া। সেই সফরে কেবলমাত্র পাঁচটি টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হবে দুই দল। বছরটা ভারত শেষ করবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর দিয়ে। যদিও সেই সফরের সময়সূচি কিংবা ম্যাচের সংখ্যা কোনো কিছুই চূড়ান্ত করা হয়নি।