ভূপিন্দর সিং গিল, পাঞ্জাব থেকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে সাউদাম্পটন আর নটিংহ্যাম ফরেস্ট মধ্যকার ম্যাচ। রেফারি বাঁশি বাজালেন। ম্যাচ শুরু হল। কিন্তু মিনিট খানেক বাদে চোখ আটকে গেল অন্য একটি দৃশ্যে। সাউদাম্পটনের লাইন বরাবর অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি দৌড়চ্ছেন। সেটা নতুন কোনো দৃশ্য না। একটি ফুটবল ম্যাচের গতিবিধি সুক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করতে সহকারী রেফারিদের এমন ভূমিকায় পালন করতে হয়। এটাই স্বাভাবিক দৃশ্য।

তবে সাউদাম্পটন লাইন বরাবর যিনি দৌড়চ্ছিলেন তিনি একজন ভারতীয়। তার উপর তিনি পাঞ্জাবের শিখ সম্প্রদায়ের লোক। আর এখানেই হয়েছে নতুন ইতিহাস। সাউদাম্পটন-নটিংহ্যাম ফরেস্ট ম্যাচে ম্যাচ অফিশিয়ালের দায়িত্ব পালন করা ভূপিন্দর সিং গিলই প্রথম শিখ যিনি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ম্যাচ অফিশিয়ালের দায়িত্ব পালন করলেন।

ভূপিন্দর সিংহের ডিএনএ তে আজন্মই ফুটবল। বাবা জার্নেইল সিং ছিলেন ইংলিশ লিগের প্রথম শিখ রেফারি। বড় ভাই সানি সিংও বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে হয়েছিলেন রেফারি। তবে ভূপিন্দর সিং এবার নিজের ভাই এবং বাবাকেও ছাড়িয়ে গেলেন। যে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এর আগে কখনোই কোনো শিখ রেফারির পা পড়েনি সেখানে ভূপিন্দর মেটালেন সেই অপূর্ণতা। একই সাথে মাত্র ৩৭ বছর বয়সে অনন্য এক ইতিহাসও গড়লেন তিনি।

ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ লিগের ম্যাচে এমন দায়িত্ব পালন করার পর বেশ উচ্ছ্বসিত ভূপিন্দর সিং নিজেও। কোনো রাখ ঢাক না রেখেই জানিয়েছেন নিজস্ব অনুভূতি। ইংলিশ গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আমার জীবনের সেরা একটি মুহূর্ত এটি। আমি গর্বিত। তবে আমি নিজেকে পরের ধাপে নিয়ে যেতে চাই।’

তিনি আরো যুক্ত করে বলেন, ‘আশা করছি এই মুহূর্তটা এশিয়ার পরবর্তী প্রজন্মদের আরো রেফারির পেশায় আসতে উদ্বুদ্ধ করবে। আমার সব সময়ই স্বপ্ন ছিল একদম শীর্ষ পর্যায়ের লিগে দায়িত্ব পালন করা। আমরা যারা দক্ষিণ এশিয়ার মাঝে থাকি তাদের জন্য এই যাত্রাটা কঠিন। তবে লক্ষ্য ঠিক রাখলে তা অসম্ভব নয়।’

ভূপিন্দর সিং-এর বাবা জার্নেইল সিং ২০০৪ সাল থেকে ২০১০ পর্যন্ত ইংলিশ ফুটবল লিগ(ইএফএল)-এর প্রায় ১৫০ টিরও বেশি ম্যাচ পরিচালনা করেছেন। তাঁর আরেক ছেলে সানিও ইএফএল-এর ম্যাচ পরিচালনা করেছেন। তবে ভূপিন্দর সিং তাদের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ অফিশিয়াল হলেন।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link