সতীর্থ থেকে কোচ: বন্ধুত্বের মিলনমেলা বিপিএলে

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) নবম আসরেও সেই একই ভাঙা রেডিওটাই যেন বাজছে। খানিকটা বিতর্ক আর সমালোচনাই যেন বিপিএলের অলঙ্কার। সেই অলংকারকে সাথে করেই শুরু হয়েছে এবারের আসর। বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের এক মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে এবারের বিপিএল। অবশ্য এমনটা প্রতিবারই হয়। দেশের অভ্যন্তরে নানা পর্যায়ে ক্রিকেট খেলা খেলোয়াড়রা অপেক্ষায় থাকেন এই আয়োজনের।

কেননা এই আয়োজনই তো তাদেরকে সুযোগ করে দেয় জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের সাথে ড্রেসিং রুম শেয়ার করবার। তাছাড়া বিদেশি খেলোয়াড়দের থেকেও টোটকা নেওয়ার মোক্ষম এক সুযোগ বিপিএল। তাইতো আয়োজন যেমনই হোক, খেলোয়াড়দের মাঝে উদ্দীপনার কমতি ঘটে না। তবে, এবারের মিলনমেলার বিস্তৃতি ছড়িয়ে পড়েছে সাবেকদের মধ্যে।

বাংলাদেশ জাতীয় দলে কোন একসময় খেলেছেন, এমন খেলোয়াড়দের একটা বড় অংশ এখন কোন না কোন ভাবে যুক্ত আছেন ভিন্ন ভিন্ন সব ফ্রাঞ্চাইজিদের সাথে। এতে করে সাবেক সেই খেলোয়াড়দের জন্যও পুনর্মিলনের একটা মঞ্চে পরিণত হয়েছে বিপিএল। এবারের বিপিএলে খেলা সাতটি দলের মাঝে পাঁচটি দলের কোচের দায়িত্ব পালন করছেন দেশি কোচেরা। খানিকটা স্বস্তি ও গর্ব করবার মতই বিষয়।

সেই তালিকায় সাবেক ক্রিকেটাররাও রয়েছেন। তবে একই সময়ে সতীর্থ থাকা খেলোয়াড়দের একাংশ এখন নিজেদেরকে নতুন সব দায়িত্বে আবিষ্কার করছে। সেই তালিকায় রয়েছেন খালেদ মাহমুদ সুজন থেকে শুরু করে শাহরিয়ার নাফিসের মত সাবেক খেলোয়াড়রা।

খালেদ মাহমুদ সুজন রয়েছেন খুলনা টাইগার্সের প্রধান কোচের দায়িত্বে। একটা সময় তিনি শাহরিয়ার নাফিসের প্রতিপক্ষ কিংবা সতীর্থ হয়েও মাঠে নেমেছিলেন। শাহরিয়ার নাফিস রংপুর রাইডার্সের ব্যাটিং কোচ।

শাহরিয়ার নাফিসের এক সময়কার সতীর্থ মোহাম্মদ রফিক আবার রয়েছেন একই দলের বোলিং কোচের দায়িত্বে। দুই সাবেক সতীর্থের কাঁধে চেপে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখছে রংপুর। রংপুরের টিম ম্যানেজার নাফিস ইকবাল। তিনিও একটা সময়ে বাকিদের সাথে জাতীয় দল এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে মাঠ মাতিয়েছেন। এই তিন সাবেক ক্রিকেটার রয়েছেন একই পতাকাতলে।

একই চিত্র আবার সিলেট স্ট্রাইকার্স ডেরায়। সেখানের কোচিং প্যানেলের তিনজনই একটা সময় বাংলাদেশ জাতীয় দলকে একই সাথে সার্ভিস দিয়েছে। সিলেটের প্রধান কোচ রাজিন সালেহ। তাঁর সহকারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সৈয়দ রাসেল। তাদেরকে সঙ্গ দিচ্ছেন নাজমুল হোসেন ও তুষার ইমরান। বোলারদের দীক্ষা দেওয়ার দায়িত্বটা নিয়েছেন নাজমুল। ব্যাটারদের ভুলত্রুটি ধরিয়ে দেওয়ার কাজটি করবেন তুষার ইমরান।

বাকি দলগুলোতেও বিভিন্ন দায়িত্বে সাবেক খেলোয়াড়দেরও দেখা মিলছে। বিপিএল নিয়ে নানান অভিযোগ থাকলেও, দিনশেষে এই আয়োজন দেশের ক্রিকেটারদের এক সুবিশাল মিলন মেলা। সাবেক, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ তারকাদের এক ছাদের নিচে নিয়ে আসতে পেরেছে বিপিএল।

তবে, গোছালো এক আয়োজন নিশ্চয়ই এই মিলনমেলা আনন্দের বন্যা বইয়ে দিতে পারবে। সেদিক বিপিএল গভর্নিং বডির শুভ দৃষ্টি উদয় হবে, তেমনটাই প্রত্যাশা সাধারণ দর্শক থেকে শুরু করে ক্রিকেটারদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link