জাকেরের চরিত্র বদল

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) খেলতে আসার আগে করে এসেছিলেন টানা দুইটি সেঞ্চুরি। তবে সেগুলো ছিল লাল বলের ক্রিকেটে। সপ্তাহ দুয়েক যেতে না যেতেই এবার নতুন মিশন। সাদা বলের ধুন্ধুমার টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট। ফরম্যাট বদলানোর সাথে সাথেই বদলে গেল জাকের আলী অনিকের চরিত্র। বদলে গেল তাঁর ব্যাটের রূপ।

জাকের আলী বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়ম করেই রান করেন। সম্ভাবনাময় তকমাও লেগেছে নামের পাশে। তবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বড় ইনিংস খেলতে পারছিলেন না। নিজের প্রথম ৩৮ ম্যাচেও দেখা পাননি সেঞ্চুরির। এবারই বিসিএলের চারদিনের ম্যাচে সেই শিকল ভাঙলেন। সেঞ্চুরির আক্ষেপে পুড়তে থাকা জাকের করলেন টানা দুই সেঞ্চুরি।

বিসিবি সেন্ট্রাল জোনের হয়ে প্রথম সেঞ্চুরিটা পেলেন ইস্ট জোনের বিপক্ষে। রাজশাহীতে সেই সেঞ্চুরিটা করার জন্য খেলেছিলেন ১৭৯ বল। পরের ম্যাচেই আবারো সেঞ্চুরি। এবার আরো বড় করলেন নিজের ইনিংস। থামলেন ১৩৮ রানে। খেলেছিলেন ২৪১ বল। একেবারে যথাযথ টেস্ট ইনিংস।

সেই জাকের সপ্তাহখানেক বাদেই এলেন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ খেলতে। ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের চাহিদা মিটিয়েই ব্যাটিং করলেন এবার। যেন এক ফরম্যাট থেকে আরেক ফরম্যাটে শিফট হলেই বদলে যান জাকের আলী। কুমিল্লার তারকা ঠাসা দলেও আলোটা নিজের দিকেই কেড়ে নিলেন।

বিপিএলের প্রথম দুই দিন প্রথম ম্যাচেই রানের দেখা পাওয়া দায়। তবে আজ  কুমিল্লা সেই প্রথা ভাঙল খানিকটা। আগে ব্যাটে করতে নেমে তাঁরা ১৫০ রানের টার্গেট দিতে পেরেছে সিলেটকে। অবশ্য শক্তিশালী কুমিল্লার কাছ থেকে প্রত্যাশাটাও তেমনই ছিল।

কেননা এই দলটায় আছে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটার লিটন কুমার দাস। তবে প্রথম ম্যাচের মত লিটন আজও প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। এমনকি ডেভিড মালান, ইমরুল কায়েস, মোসাদ্দেক হোসেন কেউই পারেননি। মালান ৩৭ রান করতে খেলেছেন ৩৯ বল। স্ট্রাইক রেট ছিল ১০০ এর নিচে।

একমাত্র সৈকত আলী ১২ বলে ২০ রানের টি-টোয়েন্টি সুলভ ইনিংস খেলতে পেরেছিলেন। তবে মিরপুরের কঠিন উইকেট, সিলেটের পরীক্ষিত বোলিং লাইন আপ কোনকিছুই থামাতে পারল না জাকেরকে। সাদা পোশাকের ক্রিকেটের ফর্মটাকে টেনে আনলেন রঙিন পোশাকেও।

আরেকবার প্রমাণ করলেন ফর্মের কোন ফরম্যাট হয় না। তাইতো মাশরাফি বিন মুর্তজা, মোহাম্মদ আমির, রেজাউর রহমান রাজারা তাঁর সামনে বাঁধা হতে পারলেন না। জাকের আলী ব্যাটিং করলেন একেবারে শেষ বল অবধি।

নিজের ৫৭ রানের অপরাজিত ইনিংসটা সাজিয়েছেন ২ টি চার ও ৩ টি ছয় দিয়ে। ব্যাটিং করেছেন ১৩২.৫৫ স্ট্রাইক রেটে। তাঁর ৪৩ বলে খেলা এই ইনিংসে ভর করে ২০ ওভার শেষে ১৪৯ রান করতে পেরেছে কুমিল্লা।

জাকের আলী আজ ব্যাট করেছেন পাঁচ নাম্বারে। তবে উপরে খেলার জন্য নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন প্রথম ম্যাচেই। সেই ম্যাচে সাতে ব্যাট করে ১৩ বলে ১৯ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। সেজন্যই তাঁর উপর আজ ভরসা রেখেছিল কুমিল্লা। সেই ভরসার আদর্শ প্রতিদানও দিলেন জাকের।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link